ঘরে ফিরতে পেরে খুশি বিজেপি-র কর্মীরা। —নিজস্ব চিত্র।
বাংলার ক্ষমতা দখলের পরই বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের উপর সন্ত্রাসের অভিযোগে বিদ্ধ তৃণমূল। তবে শাসকদলের বেলাগাম হিংসার অভিযোগের মাঝেও উলটপুরান! পূর্ব বর্ধমানে ঘরছাড়া বিজেপি কর্মীদের বাড়ি ফিরিয়ে আনলেন তৃণমূলেরই এক নেতা। সঙ্গে দিলেন চাল-ডাল আর কিছুদিনের প্রয়োজনীয় রসদ। ইদের আগে ঘরে ফিরতে পেরে খুশির ঝলক বিজেপি-র ওই সংখ্যালঘু কর্মীদের চোখেমুখে। এমনকি, গেরুয়া শিবির ছেড়ে জোড়াফুলে যোগদানের কথাও চিন্তা-ভাবনা করছেন তাঁরা। এই পদক্ষেপের পিছনে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অশান্তি বন্ধের নির্দেশই কাজ করছে বলে দাবি স্থানীয় নেতাদের। তবে এ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি জেলার বিজেপি নেতারা।
২ মে বিধানসভা ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই তৃণমূলের হিংসায় ঘরছাড়া হয়েছিলেন বর্ধমান উত্তর বিধানসভার অন্তর্গত রায়ান গ্রামের বিজেপি কর্মীদের একাংশ। তাঁদের ভরসা জোগাতে এগিয়ে আসেন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি শেখ জামাল। ঘরছাড়াদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে আশ্বস্ত করেন। বাড়ি ফিরে আসার কথাও বলেন। সেই সঙ্গে ইদে কারও জামাকাপড় না কেনা হয়ে থাকলে, তা-ও তাঁরাই কিনে দেবেন বলে জানান।
জামালের আশ্বাস পেয়ে অবশেষে বাড়ি ফিরেছেন বিজেপি কর্মী সামশের আলি। তিনি বলেন, “ভয়ে ঘর ছেড়েছিলাম। জামালভাই যে ভাবে বাড়ি ফিরতে বলেন, তাতে আশ্বস্ত হয়ে ফিরলাম। এ বার আমরা তৃণমূলের সঙ্গে চলার কথাও ভাবছি।”
বিরোধী দলের কর্মীরা বাড়ি ফেরায় তৃপ্ত শেখ জামালও। তিনি বলেন, “আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হিংসার বিরুদ্ধে। ব্লক সভাপতি কাকলি গুপ্তও সবাইকে নিয়ে চলতে বলেছেন।”
নীলবাড়ি দখলের পর শান্তির বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বর্ধমান উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক নিশীথ মালিক বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, কোথাও অশান্তি করা যাবে না। তাই যাঁরা ভোটে হেরে নিজে থেকেই বাড়িছাড়া হয়েছেন, তাঁদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। আমরা অশান্তি চাই না।” যদিও জেলা বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক শ্যামল রায় বলেন, “এই ঘটনার বিষয়ে কিছু জানি না। তবে যদি সত্যি হয়, তা তো ভালই। তৃণমূলের শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে।” অন্য দিকে, বর্ধমান উত্তর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী রাধাকান্ত রায় বলেন, “ভোটের ফল বার হওয়ার পর থেকেই বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা চলছে। বহু কর্মী আক্রান্ত ও ঘরছাড়া। শাসকদল হিসাবে সকলকে ঘরে ফিরিয়ে আনা উচিত তৃণমূলের।”