শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, অভিনেত্রী।
বেহালা পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের ক্লাবে ক্লাবে দুষ্কৃতীদের ডেরা বানিয়েছে তৃণমূল। এই মর্মে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করলেন ওই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তথা অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়। গত ২ এপ্রিল নির্বাচন কমিশনের দফতরে চিঠিটি পাঠিয়েছেন তিনি। বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রে এবার তাঁর লড়াই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা চারবারের বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের।
আগামী ১০ এপ্রিল এই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। তার আগে শ্রাবন্তীর এই চিঠিটি প্রকাশ্যে চলে আসায় অভিনেত্রীর ওপর বেজায় চটেছে বেহালা পশ্চিমের ক্লাব সংগঠনগুলি। ইতিমধ্যে তারা বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদে সরব হয়েছে। চিঠিতে শ্রাবন্তী লিখেছেন, ‘‘স্থানীয় ক্লাবগুলিকে এলাকায় সন্ত্রাস কায়েম করতে কাজে লাগানো হচ্ছে, এ ক্ষেত্রে তৃণমূলের পক্ষ থেকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় ক্লাবগুলিতেই দুর্বৃত্তদের আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে, যাতে তারা নির্বাচনের সময় গোলমাল পাকাতে পারে।’’
সাহাপুর ইউথ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রাকেশ সিংহ বলেন, ‘‘মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য এই ধরনের চিঠি লেখা হয়েছে। বেহালা ক্লাবগুলি আমপান ও লকডাউনের সময় যে ভাবে পরিষেবা দিয়েছে সেগুলো হয়তো বিজেপি প্রার্থী জানেন না। সবকিছুর সরলীকরণ করে ক্লাবগুলিতে রাজনীতির রং লাগানোর চেষ্টা হয়েছে। অভিনেত্রী নিজেকে প্রচারে বেহালার মেয়ে বলে দাবি করছেন। অথচ বেহালা ক্লাব সংস্কৃতি প্রসঙ্গে উনি কিছুই জানেন না।’’ তবে এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে বেহালার ক্লাব দেবদারু ফটক বা বেহালা ক্লাব কোনও মন্তব্য করতে চায়নি।
তবে অভিনেত্রী প্রার্থীর এমন চিঠি দেওয়ায় ভুল কিছু দেখছেন না দক্ষিণ কলকাতা বিজেপি-র সভাপতি শঙ্কর সিকদার। তিনি বলেছেন, ‘‘তৃণমূলের এই ধরনের কাজ তো আর নতুন কিছু নয়। বছরে দু’বার ক্লাবগুলোকে তৃণমূল সরকার টাকা দেয়। যুবকদের চাকরি না দিয়ে ক্লাবগুলিকে টাকা দিয়ে তাদের আসক্ত করে দেওয়া হয়েছে। আর ভোটের সময় গুন্ডাদের ব্যবহার করা ছাড়া আর কী করেছে তৃণমূল? তাই আমি আমাদের প্রার্থী যে অভিযোগ করেছেন তা পূর্ণ সমর্থন করছি।’’
তৃণমূল প্রার্থী পার্থবাবুর মুখ্য নির্বাচনী এজেন্ট অঞ্জন দাস বলেছেন, ‘‘যাঁরা এই ধরনের কথা বলছেন, তাঁরা বেহালাকে ভাল করে চেনেন না। কারণ, এক সময় বেহালায় মস্তানদের জব্দ করতে ক্লাব সংগঠনগুলিই রাস্তায় নেমেছিল। আসলে হারের আগে থেকেই হারের কারণ সাজিয়ে রাখছেন বিজেপি প্রার্থী। আর তৃণমূল দলগত ভাবে কোনও ক্লাবকে অর্থ দেয়নি। সরকার যে সমস্ত ক্লাব সংগঠনকে অর্থ দিয়েছিল, সেখানে ক্লাবের রং দেখা হয়নি। বেহালার ক্লাব সংগঠনগুলিকে অপমান করার আগে তাঁদের ইতিহাস প্রসঙ্গে জেনে নিন বিজেপি প্রার্থী।’’ প্রসঙ্গত, বিজেপি-র প্রার্থী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় কিন্তু প্রচারে নিজেকে বেহালার ভুমিকন্যা বলেই বার বার দাবি করেছেন।