নন্দীগ্রাম আসনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট হিসাবে কাজ করছেন শেখ সুফিয়ান। —ফাইল চিত্র।
নীলবাড়ির লড়াইয়ে আগামী ১ এপ্রিল নন্দীগ্রামে ভোট। তার আগে কিছুটা স্বস্তি পেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই আসনে মমতার নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ান। আবেদনে সাড়া দিয়ে সুফিয়ানের বিরুদ্ধে মামলার শুনানি জরুরি ভিত্তিতে শুনবে রিসেশন বেঞ্চ। শুক্রবারই বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি কৃষ্ণ মুরারির বেঞ্চে ওই শুনানি হবে। সেই সঙ্গে নন্দীগ্রামে হিংসায় জড়িত থাকার অভিযোগে সুফিয়ান এবং তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে যে এফআইআরগুলি করা হয়েছিল তা পুনর্বহাল করার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। সেই নির্দেশেও অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
মমতার নির্বাচনী এজেন্ট সুফিয়ানের বিরুদ্ধে ২০০৭-০৯ সালে নন্দীগ্রামে হিংসায় জড়িত থাকার একাধিক অভিযোগে কলকাতা আদালতের একটি জনস্বার্থ মামলা রুজু করা হয়। যদিও রাজ্য সরকারের তরফে ওই মামলাগুলি থেকে অব্যাহতি পেয়েছিলেন সুফিয়ান। তবে ৫ মার্চ ওই জনস্বার্থ মামলায় সুফিয়ানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। ১৫ মার্চ হলদিয়ার আদালতে নন্দীগ্রাম-কাণ্ডের ৬টি মামলা পুনর্বহাল করার পাশাপাশি, সুফিয়ান, আবু তাহের, শেখ সামাদ-সহ নন্দীগ্রাম আন্দোলনে জড়িত তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। তবে এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সুফিয়ান। তাঁর মতে, যথাযথ প্রক্রিয়া না মেনেই ওই নির্দেশ দিয়েছে হলদিয়া আদালত।
পাশাপাশি, ওই জনস্বার্থ মামলাটি রাজনৈতিক ভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং কয়েক জনের স্বার্থ জড়িত বলেও দাবি করেন তিনি। হাইকোর্টে মামলা পুনর্বহালের আবেদনকারী বিজেপি নেতা নীলাঞ্জন অধিকারী ভোটের আগে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের নন্দীগ্রাম ছাড়া করার ষড়যন্ত্রে জড়িত বলেও অভিযোগ সুফিয়ানের। যদিও শুক্রবার পেশায় আইনজীবী নীলাঞ্জন বলেন, ‘‘যা করার, আইনি প্রক্রিয়া মেনেই করেছি।’’
শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবডের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে আবেদন করেছিলেন সুফিয়ান। সেই শুনানিতে তাঁর আইনজীবী বিকাশ সিংহ দাবি করেন, “ওই এফআইআর পুর্নবহাল করা হলে জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের আওতায় এক জন নির্বাচনী এজেন্ট হিসাবে কাজকর্ম করতে পারবেন না তিনি। তা ছাড়া, আগামী ১ মার্চ নন্দীগ্রাম আসনে ভোটের সূচি পড়েছে। ফলে আমার মক্কেল তথা আবেদনকারীর বিরুদ্ধে ওই মামলা পুর্নবহাল করা হলে তাতেও নির্বাচনের কাজ করতে পারবেন না তিনি।” সুফিয়ানের তরফের বক্তব্যের পর বিচারপতি বোবডে জানিয়েছেন, যে হেতু হোলির ছুটির জন্য আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত আদালতে বন্ধ থাকবে, সে হেতু আগামী সোমবার ভেকেশন বেঞ্চে এই আবেদনের শুনানি হবে। তবে নন্দীগ্রামে ১ এপ্রিল ভোট পড়ায় ফের আদালতের কাছে জরুরি ভিত্তিতে শুনানির আবেদন করে সুফিয়ানের আইনজীবী। শুক্রবার সেই আবেদনে সাড়া দিয়েছে শীর্ষ আদালত।