উত্তর দিনাজপুর বিজেপি-র নতুন জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার। —নিজস্ব চিত্র।
উত্তর দিনাজপুরে ভোটের মাত্র ৯ দিন আগেই কার্যত বেনজির ভাবে জেলা সভাপতি বদল করল বিজেপি। মঙ্গলবার একটি নির্দেশিকা জারি করে জেলা সভাপতির পদ থেকে বিশ্বজিৎ লাহিড়িকে সরিয়ে দেওয়া হল। তাঁর বদলে ওই পদে বাসুদেব সরকারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবার ভোটপ্রচারে অমিত শাহ জেলায় পা রাখার কিছুক্ষণ আগেই এই নির্দেশিকা জেলা নেতৃত্বের কাছে পৌঁছয়। অথচ সোমবার বিকেলে জেলার হেমতাবাদে শাহের জনসভার মঞ্চে জেলা সভাপতি হিসাবে বিশ্বজিৎকে দেখা গিয়েছিল।
ষষ্ঠ দফায় আগামী বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল উত্তর দিনাজপুরের ৯টি আসনে ভোট। তার আগে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্তে বিজেপি-র অন্দরেই গুঞ্জন শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত বাসুদেবের দায়িত্ব পাওয়া নিয়েও চলছে আলোচনা। প্রসঙ্গত, জেলার ৯টি বিধানসভা আসনে প্রার্থিতালিকা ঘোষণার পরও দেখা গিয়েছিল যে ওই সব প্রার্থীরাই সাংসদ-ঘনিষ্ঠ বলে দলের অন্দরে পরিচিত৷ প্রার্থীদের নাম ঘোষণার পর জেলা জুড়ে বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষোভও দেখিয়েছিলেন। দেবশ্রীর ছবিতে অগ্নিসংযোগ করা থেকে শুরু করে দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুরও হয়েছিল৷ ওই বিক্ষোভের পিছনে বিশ্বজিতের মদত ছিল বলেই মনে করছেন অনেকে।
মঙ্গলবার রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ নিয়ে হাতে পাননি বলে দাবি করেছেন সদ্য জেলা সভাপতির পদ হারানো বিশ্বজিৎ। তাঁর কথায়, ‘‘এ রকম কোনও খবর পাননি। দল যদি মনে করে, তবে এটা করতেই পারে।’’ সেই সঙ্গে তাঁর নির্লিপ্ত সংযোজন, ‘‘কে কার কাছের লোক, সেটা কথা নয়। বিজেপি সব সময় যোগ্য মানুষদের সংগঠনে তুলে নিয়ে আসে। সংগঠন যদি মনে করে আমার থেকে যোগ্য লোককে চেয়ারে বসালে লাভ হবে, তা হলে ভাল।’’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী অবশ্য বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘‘এটা সাধারণ একটা বিষয়। এতে নির্বাচনে প্রভাব পড়বে না।’’ অন্য দিকে, নতুন দায়িত্ব পেয়ে বাসুদেবের আত্মবিশ্বাসী মন্তব্য, ‘‘জেলার ৯টি আসনের মধ্যে সবক’টিতেই পদ্ম ফোটানোর চ্যালেঞ্জ নিয়ে এগোচ্ছি।’’