এখনও প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে রাজ্য নেতৃত্বকে স্পষ্ট কোনও দিশা দেখাতে পারেননি শীর্ষ নেতৃত্ব। ফাইল চিত্র।
নীলবাড়ির লড়াই থেকে তাহলে কি সরে দাঁড়াচ্ছে আসাদউদ্দিন ওয়াইসির ‘মিম’? এমন প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে রাজ্য রাজনীতির অন্দরমহলে। কারণ, প্রথমদফায় ভোটের প্রার্থীদের মনোনয়ন দাখিল পর্ব শেষ হয়ে গেলেও প্রার্থী দেওয়া নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বকে কোনও সিদ্ধান্তের কথা জানাতে পারেননি অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন বা মিমের শীর্ষনেতারা। অথচ গত ২৬ মার্চ মেটিয়াব্রুজে জনসভা করার অনুমতি না পেয়ে ফুঁসে উঠেছিল ওয়াইসির দল। তৃণমূলকে ‘বিজেপি-র বি টিম’ বলে আক্রমণ করেছিলেন হায়দরাবাদের প্রাক্তন মেয়র তথা মিম-এর পশ্চিমবঙ্গের পর্যবেক্ষক মাজিদ হোসেন। সঙ্গে তিনি ঘোষণা করে যান, সাংগঠনিক শক্তি বিচার করে এ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তাঁরা।
কিন্তু সেই ঘটনার দিন দশেক কেটে যাওয়ার পরেও এখনও প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে রাজ্য নেতৃত্বকে স্পষ্ট কোনও দিশা দেখাতে পারেননি শীর্ষ নেতৃত্ব। কয়েক মাস আগেই বিহার বিধানসভা নির্বাচনে সাফল্য পাওয়ায় পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের দিকে নজর পড়ে মিমের। এ রাজ্যের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মালদহ, মুর্শিদাবাদ ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় লড়াইয়ের ব্যাপারে এ রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা মানসিক প্রস্তুতি নিলেও মিম শীর্ষ নেতৃত্বের গা-ছাড়া ভাবে বিরক্ত তাঁরা। ফলস্বরূপ পশ্চিমবঙ্গে মিমের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা জামিরুল হাসান পদত্যাগ করেছেন।
জামিরুল আনন্দবাজার ডিজিটালকে বলেছেন, ‘‘মিম নেতৃত্বের কোনও অবস্থানই স্পষ্ট নয়। তাঁরা এ রাজ্যে যখন কোনও কর্মসূচি নেন, তা নিজেদের মতো করেই নেন। আমাদের সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন বোধ করেন না। এখনও নির্বাচনে লড়াই করব বলে পিছিয়ে গিয়েছেন। ওঁনারা হায়দরাবাদ থেকে সবকিছু বলেন এবং করেন। বাংলার নেতৃত্বকে কিছু জানান না। যেমন আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে বৈঠকের সময়ও আমাদের কিছু জানানো হয়নি। তাই এমন সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগা একটি দলের হয়ে আমি আর কাজ করতে রাজি নই।’’
প্রসঙ্গত, ২৬ ফেব্রুয়ারির সভা বাতিলের পর ৪ মার্চ ওয়াইসির কলকাতায় সভা করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা-ও করা হয়নি। চলতি মাসের ১০ অথবা ১৩ মার্চ রাজ্যের অন্য দুটি জেলার পাশাপাশি মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘিতে ওয়াইসির সভা করার কথা থাকলেও তা হয়নি। ঠিক ছিল, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদের ২২টি আসনের মধ্যে ১৩টি আসনে প্রার্থী দেবে মিম। সে সব প্রার্থীদের সমর্থন জানিয়ে সাগরদিঘিতে দলীয় জনসভা করে ১৩টি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করবেন ওয়াইসি। তা-ও হয়নি। মিম কী বাংলার ভোটে আদৌ প্রার্থী দিতে চায়? এ সব প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়ে পশ্চিমবঙ্গের পর্যবেক্ষক মাজিদকে হোয়াটসআ্যপে বার্তা পাঠানো হয়েছিল। সেই বার্তা দেখেও শনিবার রাত পর্যন্ত উত্তর দেননি তিনি।