প্রতীকী ছবি।
প্রতিবেশী বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার আকাশ মুখ ভার করলে এখন চিন্তায় পড়ে যাচ্ছেন কলকাতা বিমানবন্দরের কর্তারা। এমনকি বাগডোগরার আকাশ কুয়াশায় ছেয়ে গেলেও ভাঁজ পড়ছে তাঁদের কপালে।
কারণ? কলকাতা বিমানবন্দরের হাতে পর্যাপ্ত ‘পার্কিং বে’ নেই। ভোটের তোড়জোড়ের মধ্যে নিজেদের হেলিকপ্টার রাখার জন্য একটি পার্কিং বে চেয়ে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সূত্রের খবর, ভারতীয় বায়ুসেনার কাছ থেকে তারা ওই কপ্টার নিচ্ছে। ইতিমধ্যেই কলকাতায় পৌঁছেছেন বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েক এবং বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে। আগামী দিনে তাঁরা হেলিকপ্টারে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখবেন। কলকাতার পাশাপাশি অণ্ডাল এবং বাগডোগরা বিমানবন্দরেও কমিশনের একটি করে হেলিকপ্টার থাকবে।
ভোটের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারও একটি বিমান ভাড়া করে রেখেছে। সম্প্রতি সেই বিমানেই শিলিগুড়ি যাতায়াত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই বিমান আপাতত কলকাতা বিমানবন্দরেই থাকবে। বিজেপির একটি হেলিকপ্টার চলে এসেছে। বিজেপি-কর্তারা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানান, আগামী দিনে কলকাতায় তাঁদের আরও হেলিকপ্টার ও বিমান আনার পরিকল্পনা রয়েছে। এই বিষয়ে দিল্লিতে বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষের সদর দফতরের সঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বের আলোচনা চলছে। এ ছাড়াও প্রচারে সারা দেশ থেকে নেতানেত্রী, ভিআইপি-রা কলকাতায় আসতে পারেন। অন্যান্য মুখ্যমন্ত্রী, অমিত শাহ, জেপি নড্ডার মতো বিজেপি নেতারা এখন বেশির ভাগ সময়েই ব্যক্তিগত বিমান ব্যবহার করেন।
আগামী দু’মাসে এত বিমানকে কলকাতায় জায়গা দেওয়া যাবে কি না, সেই প্রশ্ন বড় হয়ে উঠছে। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে কলকাতায় বিমান রাখার জন্য ৬২টি পার্কিং বে রয়েছে। বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য জানান, ঘুরিয়েফিরিয়ে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলে চারটি বে-তে। এর মধ্যে এয়ার ইন্ডিয়ার পাঁচটি বিমান পাঁচটি বে আটকে পড়ে রয়েছে। সেগুলি খারাপ বলে জানিয়েছে ওই উড়ান সংস্থা। সারাই চলছে। জেট ও স্পাইসজেটের দু’টি বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমান দু’টি পার্কিং বে আটকে রেখেছে।
কৌশিকবাবু বলেন, ‘‘লকডাউনের আগে যত উড়ান চলছিল, এখন তার মধ্যে ২০ শতাংশ বিমান বসে আছে। ফলে বেশ কিছু বিমান নিয়মিতই কলকাতায় দাঁড়িয়ে থাকছে। এখন কলকাতা থেকে সোম, বুধ ও শুক্রবার ৩৩০টি উড়ান ওঠানামা করছে। বাকি চার দিন গড়ে ২৮০টি উড়ান ওঠানামা করে। সব মিলিয়ে পার্কিং বে-র অভাব রয়েছে। তা ছাড়া অত্যন্ত জরুরি কারণে কোনও বিমান যে-কোনও সময়েই নেমে আসতে পারে— এটা ভেবে আমাদের সব সময় কমপক্ষে চারটি পার্কিং বে খালি রাখতেই হয়।’’
মুশকিল ঢাকা ও বাগডোগরা নিয়ে। কারণে-অকারণে যখন-তখন মুখ ভার করে ওই দুই শহরের আকাশ। আর তখনই একের পর এক বিমান মুখ ঘুরিয়ে এসে নামতে থাকে কলকাতায়। আগামী দু’মাসে সে-রকম কিছু হলে মাথায় হাত পড়তে পারে বিমানবন্দরের অফিসারদের।