বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী
শুভেন্দু অধিকারী নন্দীগ্রাম থেকেই নির্বাচনে লড়তে চান। দিল্লিতে জেপি নড্ডা, অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠকে তিনি নিজেই এই প্রস্তাব রেখেছেন বলে জানালেন বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার দিল্লিতে নড্ডার বাড়িতে রাজ্যের প্রথম দুই দফার ৬০টি আসনের প্রার্থী তালিকা নিয়ে বৈঠক হয়। সেখানে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের পাশাপাশি হাজির ছিলেন শুভেন্দু, রাজীবও। সেখানেই শুভেন্দু নিজে থেকে নন্দীগ্রাম আসনে প্রার্থী হতে চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন রাজীব। একই সঙ্গে তিনি জানান, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অবশ্য দলই জানাবে। যদিও বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৈঠকে ৬০ আসনের প্রার্থী তালিকা প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। এখন সংসদীয় কমিটির সিলমোহরের অপেক্ষা। সেই বৈঠকও ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে।
দিল্লিতে বৃহস্পতিবারের বৈঠকে সবচেয়ে বেশি কৌতূহল ছিল নন্দীগ্রামের প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে। ইতিমধ্যেই তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন তিনিই হবেন নন্দীগ্রামে দলের প্রার্থী। এই ঘোষণার দিনই শুভেন্দু জানিয়েছিলেন, তিনি তৃণমূলকে নন্দীগ্রামে আধ লাখ ভোটে হারাবেন। বুধবার ওই কেন্দ্রে তিনিই যে প্রার্থী হতে চান তাঁর ইঙ্গিতও দেন ২০১৬ সালে তৃণমূলের টিকিটে নন্দীগ্রামে জয়ী শুভেন্দু। পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলায় একটি জনসভায় তিনি বলেন, ‘‘আমি নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারাব। নিশ্চিত থাকবেন, হারাব আমি। দল প্রার্থী করলে, সরাসরি হারাব। অন্য কাউকে প্রার্থী করলেও হারাব। পদ্ম ফোটাব। দায়িত্বটা আমার।’’ বুধবার যে ইঙ্গিত মিলেছিল সেটাই আরও স্পষ্ট হল বৃহস্পতিবার রাজীবের কথায়। এর পাশাপাশি রাজীব জানিয়েছেন, তিনিও নিজের পুরনো কেন্দ্র ডোমজুড় থেকেই প্রার্থী হতে চান। তবে সেখানে ভোটগ্রহণ চতুর্থ দফায়। তাই বৃহস্পতিবার তা নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি।
প্রসঙ্গত প্রার্থিতালিকা চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে সোম-মঙ্গল-বুধ তিন দিন বিজেপি-র রাজ্য নেতারা দফায় দফায় বৈঠক করেন কলকাতায়। কয়েকটি জেলার নেতৃত্বকেও ডাকা হয়। আদি ও নব্য বিজেপি নেতা-কর্মীদের সমান গুরুত্ব দিয়ে প্রাথমিক তালিকা তৈরির কাজ চলে। কিন্তু আগে থেকেই ঠিক ছিল, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন অমিত। তিনিই ঠিক করবেন ২৯৪টি বিধানসভা আসনে কোথায় কে প্রার্থী হবেন। রাজ্য নেতারা যে তালিকা তৈরি করেছেন তা নিয়েই তাঁরা বুধবার রাতে দিল্লিতে যান। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, কেন্দ্রীয় নেতা শিবপ্রকাশ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, অরবিন্দ মেনন, মুকুল রায়ের সঙ্গে যান রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী, রাহুল সিংহ, শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। আগে থেকেই দিল্লিতে চলে যান এই রাজ্য থেকে লোকসভা নির্বাচনে জয়ী দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় ও দেবশ্রী চৌধুরী। সকলকে নিয়েই প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার কাজ চলে। বৃহস্পতিবার সকালে প্রথমে বৈঠক হয় শিবপ্রকাশের বাড়িতে। তার পর নড্ডার বাড়িতে। সেখানেই আসেন অমিত। প্রতিটি কেন্দ্র ধরে ধরে আলোচনা হয়। সকলের মতামতও শোনা হয়। প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টা ধরে চলে সেই বৈঠক।
চূড়ান্ত তালিকা নিয়ে সন্ধ্যায় দিল্লির দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে বিজেপি সদর দফতরে যান রাজ্য নেতারা। সেখানে বসে বিজেপি-র সংসদীয় কমিটির বৈঠক। দলীয় নিয়ম অনুসারে ওই কমিটিই প্রার্থিতালিকায় চূড়ান্ত সিলমোহর দেবে। যদিও বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সেটা শুধুই নিয়মরক্ষা। আসল কাজটি হয়ে গিয়েছে।