প্রার্থীদের নাম নিয়ে দোটানায় বিজেপি নেতৃত্ব!
পাহাড়ের তিন আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করল না বিজেপি। কলকাতার রাসবিহারি-সহ মোট ১০টি আসনে প্রার্থীদের নাম এখনও জানানো হয়নি। বৃহস্পতিবার বিকেলে দিল্লির দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গের দফতর থেকে দু’দফায় প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হয়। সেখানে দেখা যায়, ১০টি আসন ছেড়ে চার দফায় বাকি ২৮৩টি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করছে গেরুয়া শিবির। বাঘমুণ্ডি আসনটি ছাড়া হয়েছে জোট শরিক আঢ়ষু-কে।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের লোকসভা ভোট থেকেই পাহাড়ের রাজনীতিতে বিজেপি পথ চলেছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সমর্থনে। কিন্তু ২০১১ এবং ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে পাহাড়ের তিন বিধানসভা নিজেদের দখলে রেখেছিলেন বিমল গুরুং। কিন্তু মোর্চা প্রধানের পাহাড় থেকে অন্তর্ধানের পর বিধায়করা তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। বিনয় তামাং এবং অনীত থাপাদের মধ্যস্থতায় দার্জিলিংয়ের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে লোকসভায় প্রার্থী হন অমর রাই প্রধান। ফলে তাঁকে পদত্যাগ করতে হয় দার্জিলিং আসন থেকে। ওই আসনের উপনির্বাচনে বিধায়ক হন নীরজ তামাং জিম্বো। দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু সিং বিস্তার অনুরোধেই এই প্রাক্তন জিএনএলএফ নেতাকে বিধায়ক করেছিল বিজেপি। কিন্তু বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রার্থিতালিকায় দার্জিলিং-সহ কালিংম্পং ও কার্শিয়াংয়ে প্রার্থীদের নাম জানায়নি বিজেপি। কিন্তু এই তিন আসনে বিজেপি যে নিজেদের প্রতীকেই প্রার্থী দেবে, তা বহু আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
অপরদিকে, মতুয়া সম্প্রদায়ের পীঠস্থান বনগাঁর তিন আসনেও এখনও প্রার্থী দেয়নি বিজেপি। গাইঘাটা বিধানসভা এলাকাতেই রয়েছে মতুয়াদের ঠাকুরবাড়ি। গাইঘাটা-সহ বনগাঁ উত্তর এবং বাগদায় প্রার্থী দেওয়া হয়নি। অথচ, বনগাঁ উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস ও বাগদার কংগ্রেস বিধায়ক দুলাল বর দলবদল করে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন বহু আগেই। কিন্তু এই দু’জনের নাম এখনও ঘোষণা করেনি পদ্মশিবির। সূত্রের খবর, গাইঘাটা কেন্দ্রে বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর তাঁর দাদা সুব্রতকে প্রার্থী করতে চান। কিন্তু বিজেপি চাইছে সাংসদ শান্তনুই ফের প্রার্থী হয়ে মতুয়া সমাজের উদ্দেশে ভোটদানের আহ্বান করুন। এই দোটানায় আটকে রয়েছে গাইঘাটার প্রার্থীর নাম।
এছাড়াও, মুর্শিদাবাদ জেলার ২১টি আসনে প্রার্থী দিলেও বহরমপুরে এখনও প্রার্থী দেয়নি বিজেপি। তাছাড়া উত্তর দিনাজপুর জেলার করণদিঘি এবং ইটাহার আসনেও প্রার্থীদের নাম জানায়নি তারা। উল্লেখ্য, যে ১০টি আসনে প্রার্থীদের নাম এখনও বিজেপি নেতৃত্ব জানাতে পারেননি, তার মধ্যে আটটি কেন্দ্রেই লোকসভা ভোটে এগিয়েছিল তারা। তৃণমূলের ‘গড়’ দক্ষিণ কলকাতার রাসবিহারী কেন্দ্রে বিজেপি ৫,৪৩১ ভোটে এগিয়েছিল। ওই আসনটিও ফাঁকা রাখা হয়েছে। সেখানকার প্রার্থীর নাম নিয়েও জল্পনা রয়েছে।