প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
নীলবাড়ির লড়াইকে অবাধ করার ডাক দেওয়ার পাশাপাশি বাংলার পুলিশ-প্রশাসনকে গণতন্ত্র বাঁচানোর প্রতিজ্ঞা নেওয়ার আহ্বান জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একই সঙ্গে বললেন, অরজাকতার বিরুদ্ধে সকলকে রুখে দাঁড়াতে হবে।
রাজ্যে গত পঞ্চায়েত নির্বাচন অবাধে হয়নি বলে বিরোধীরা অভিযোগ করে আসছে দীর্ঘদিন ধরেই। বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারেও সেই দাবিকে অস্ত্র বানিয়েছে বিজেপি। দলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে পঞ্চায়েত তৃণমূল ভোট করতে দেয়নি। এ বার সেটা করা যাবে না। রাজ্য নেতাদের সেই সুরই যেন শনিবার খড়্গপুরের জনসভায় মোদীর মুখে শোনা গেল। বললেন, ‘‘বাংলায় ভোট দেওয়ার অধিকারও কেড়ে নিয়েছেন দিদি। ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে ভাবে আপনাদের ভোটাধিকারকে পিষে দিয়েছিলেন, তা গোটা দুনিয়া দেখেছে। আমি কথা দিচ্ছি, দিদিকে আর গণতন্ত্রকে পদদলিত করতে দেব না। পুলিশ-প্রশাসনকেও গণতন্ত্রকে বাঁচানোর প্রতিজ্ঞা নিতে হবে। সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করতে হবে।’’
রাজ্যে অবাধ নির্বাচন যাতে হয় তার জন্য শুধু বিজেপি নয়, সব বিরোধী দলই সরব। নির্বাচন কমিশনও ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হওয়ার পর থেকে একের পর এক পদক্ষেপ করে চলেছে। পুলিশ ও প্রশাসনে অনেক রদবদল ঘটিয়েছে। সেই সঙ্গে দফায় দফায় নিয়ে আসা হচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। ৭২৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী ইতিমধ্যে রাজ্যে এসে পৌঁছেছে। প্রথম দু’দফায় যে যে বিধানসভা আসনে ভোট গ্রহণ রয়েছে তার প্রতিটি বুথকেই স্পর্শকাতর হিসেবে ঘোষণা করেছে কমিশন। সেই মতো রাজ্যের ওই সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানো হবে এবং ১০০ মিটারের মধ্যে কোনও রাজ্য পুলিশ থাকবে না বলেও কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই তার বিরোধিতা করেছে তৃণমূল। শুক্রবারই দলের প্রতিনিধিরা দিল্লিতে কমিশনের দফতরে গিয়ে এর প্রতিবাদ জানিয়ে এসেছেন।
কমিশনের কাছে তৃণমূলের বক্তব্য, এ রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভাষা নিয়ে সমস্যা রয়েছে। তাই প্রতি বুথে কমপক্ষে এক জন করে রাজ্য পুলিশ রাখতে হবে। বিজেপি অবশ্য তা মানতে নারাজ। তাদের মতে, আসলে ভোট কারচুপি করতেই রাজ্য পুলিশ দিয়ে ভোট করানোর কথা বলছে তৃণমূল। বিজেপি-র রাজ্য নেতাদের সেই অভিযোগকেই যেন সিলমোহর দিয়ে গেলেন মোদী। শনিবার তিনি বলেন, ‘‘আগের ভোটগুলিতে তৃণমূল যা যা করত তা এ বার আর হবে না। সবাই একসঙ্গে রুখে দাঁড়ান। নির্ভয়ে ভোট দিন।’’ একই সঙ্গে তাঁর দাবি, এই ভোট শুধু বিধায়ক, মন্ত্রী বানানোর ভোট নয়। বাংলার ভবিষ্যৎ বদলানোর ভোট। মোদী বলেন, ‘‘এ বার ভয় নয়, শুধু জয়।’’