প্রার্থিতালিকা ঘোষণার পর হিতেন বর্মনের সঙ্গে দেখা করতে যান কোচবিহার জেলা তৃণমূলের সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়। নিজস্ব চিত্র
টিকিট না পেয়ে বেসুরো কোচবিহারের শীতলকুচির তৃণমূল বিধায়ক হিতেন বর্মণ। দলের সিদ্ধান্তে হতবাক তিনি। তাই দলের প্রতি অভিমান করে ঘোষণা করলেন, রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেবেন।
তৃণমূলের হয়ে শীতলকুচি থেকে দু’বার বিধায়ক হয়েছেন হিতেন। বনমন্ত্রীও ছিলেন। গত বিধানসভা নির্বাচনে ১৫ হাজার ৪৮৩ ভোটে বামফ্রন্টকে পরাজিত করে তিনি জয়লাভ করেন। গত লোকসভা নির্বাচনে যখন প্রত্যেকটি বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেসকে পিছিয়ে রাখে বিজেপি বেশি ভোট অর্জন করে সেইসময় সিতাই এবং শীতলকুচিতে তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপি-র তুলনায় বেশি ভোট পায়। এই অবস্থায় তাঁকে সরিয়ে জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়কে শীতলকুচি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করায় দলের প্রতি ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে তাঁর।
হিতেন বলেন, ‘‘দলের এই সিদ্ধান্তে আমি অবাক হয়েছি। দল যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা মানতে হবে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি এ বারের নির্বাচনে আমি প্রচারে যাব না। অবসর জীবনযাপন করব। নির্বাচন শেষ হয়ে গেলে সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকব। রাজনীতি থেকে আমি সন্ন্যাস গ্রহণ করলাম।’’ এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘বিষয়টি শুনেছি, হিতেনবাবুর সঙ্গে আমি কথা বলব।’’
তৃণমূলের প্রার্থী ঘোষণার পর দিনহাটা বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী উদয়ন গুহের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিক্ষোভ প্রদর্শন করলেন দলের কর্মীরা। শনিবার দিনহাটা নয়ারহাট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে মিছিল করেন এবং প্রার্থী বদলের দাবি করেন।
তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার আগে থেকেই দিনহাটা বিধানসভা কেন্দ্রে উদয়ন গুহের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য জনসভা করে উদয়ন গুহের অপর গোষ্ঠী। উদয়নকে যাতে দল টিকিট না দেয় সেই দাবিও তোলা হয় জনসভায়। দলের প্রতি হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় উদয়নকে প্রার্থী করা হলে দল পস্তাবে। গতকাল প্রার্থী ঘোষণার পর নয়ারহাট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ফের বিক্ষোভ শুরু করেন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ নয়াহাট অঞ্চলে ২৩টি পঞ্চায়েত সদস্য রয়েছে। ২৩ জন বুথ সভাপতি রয়েছে। তাঁদের উপেক্ষা করে চলেছেন উদয়ন গুহ। স্থানীয় তৃণমূল নেতা মজিবর রহমান বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগেও উদয়ন নয়ারহাট অঞ্চলে প্রচারে এসেছিলেন। পার্টি অফিসে কয়েকশো কর্মী থাকা সত্ত্বেও তাদের উপেক্ষা করে তিনি পাশের বাজারের দোকানে দোকানে গিয়ে প্রচার করেন। তাই আমরা এর মীমাংসা চাই। অথবা প্রার্থী বদল করতে হবে।’’