প্রচারে কৌশানী। নিজস্ব চিত্র
এক বিতর্ক কাটতে না কাটতেই ফের আর এক বিতর্কে কৃষ্ণনগর উত্তরের তৃণমূল প্রার্থী তথা অভিনেত্রী কৌশানী মুখোপাধ্যায়। শুক্রবার রাতে তাঁর একটি ভিডিয়ো নেটমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় ফেসবুক লাইভ করেছিলেন তিনি। এ বার নেটমাধ্যমে ওই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ সুজিত সামের একটি পোস্ট ঘিরে নতুন করে বিতর্ক বেঁধেছে। ওই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, তৃণমূলের এক প্রচারসভায় মুকুলের নাম করে হাত নেড়ে অঙ্গভঙ্গি করছেন কৌশানী। যদিও, ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডিজিটাল।
ওই ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন যিনি সেই সুজিতের দাবি, ‘‘কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রে প্রচারে বেরিয়ে তৃণমূলের অভিনেত্রী প্রার্থী যা বলছেন তার কয়েকটি খণ্ডচিত্রই মাত্র সকলের সামনে উঠে এসেছে। আমি তাঁর একটি ভিডিয়ো তুলে ধরেছি নেটমাধ্যমে। এর পর যা বিচার করার কৃষ্ণনগরের মানুষই করবেন।’’ এমন আরও ভিডিয়ো আগামী দিনে প্রকাশ্যে আনবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ওই বিজেপি নেতা।
ওই ভিডিয়োয় হাত নেড়ে নানা অঙ্গভঙ্গি করে কৌশানীকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘মুকুল রায় হেভিওয়েট আমার বুদ্ধি এটা মেনে নেয় না। যিনি কোনও দিন ক্লাব ইলেকশনও জেতেননি, তিনি ২০ বছর পর দাঁড়িয়েছেন। উনি যেখানেই দাঁড়িয়েছেন, সেখানেই হেরেছেন। মানুষ চোর চোর বলে জুতোর মালা পরিয়ে দিয়েছে গলায়। তিনি আবার স্বচ্ছতার প্রতীক হয়ে এসেছেন।’’
২০০১ সালে জগদ্দল বিধানসভা থেকে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে লড়াই করে পরাজিত হন মুকুল। ২০০৬ সালে তিনি প্রথম বারের জন্য রাজ্যসভার সদস্য হন। ২০০৯ সালের লোকসভা ভোটে জিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের নেতৃত্বাধীন দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারে যোগ দিলে কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী হন মুকুল। ২০১২ সালে রেল বাজেট নিয়ে দীনেশ ত্রিবেদীর সঙ্গে তৃণমূল নেত্রীর ‘সঙ্ঘাত’ হয়। সেই সময় দীনেশকে রেল মন্ত্রক থেকে সরিয়ে মুকুলকেই রেলমন্ত্রী করেছিলেন মমতা। যে দলের হয়ে কৌশানী এ বার প্রার্থী হয়েছেন, বছর পাঁচেক আগে পর্যন্ত সেই তৃণমূলের ‘সেকেন্ড-ইন-কমান্ড’ ছিলেন তিনিই।
ভিডিয়ো পোস্ট করে সুজিত লিখেছেন, ‘প্রার্থী অভিনেত্রী, হাতে ছবি নেই, বছরে আয় ১৪ লাখ, দেনা ৬০ লাখ, চড়েন বিএমডব্লিউ...। মুকুল রায়কে যে রকম ভঙ্গিমায় কটাক্ষ করছেন তা দৃশ্যত অশোভন। বলছেন, মুকুল রায় কখনও জেতেননি! তার পর হাতের ভঙ্গিমা! উনি হয়তো জানেন না, বাংলায় অন্তত একশো জন বিধায়ক হয়েছেন মুকুলবাবুর কল্যাণে। কতটা ঘাম ঝরালে মুকুল রায় হওয়া যায় তা ওই বিএমডব্লিউতে বসে বোঝা যাবে না বোনটি’!
প্রার্থীর বিরুদ্ধে এমন ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়াকে ‘ষড়যন্ত্র’ হিসেবেই দেখছেন নদিয়া জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র বাণী রায়। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপি-র সমস্ত প্রচারটাই মিথ্যে হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রথম যে ভিডিয়োটি মিথ্যে, তা-ও প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। এখন যে ভিডিয়োর কথা বলা হচ্ছে, তা আমার দেখা হয়নি। কিন্তু সেটা যে বিজেপি-র অপপ্রচারের একটা নতুন হাতিয়ার এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। এ ভাবে ভোট পাওয়া যাবে না।’’