শনিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরে জনসভা করবেন প্রধানমন্ত্রী। ফাইল চিত্র।
নরেন্দ্র মোদী আগামী পাঁচ দিনে বাংলার তিন জেলায় নির্বাচনী প্রচারে আসছেন। তা নিয়ে চূড়ান্ত তৎপরতা গেরুয়া শিবিরে। শনিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরে জনসভা করবেন প্রধানমন্ত্রী। নীলবাড়ির লড়াইয়ে সেখানে বিজেপি-র প্রার্থী অভিনেতা হিরণ চট্টোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রীর সভায় যাতে কোনও খামতি না থাকে, তা নিশ্চিত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব এবং কর্মীরা।
শনিবার খড়্গপুরের বিএনআর মাঠে সভা রয়েছে মোদীর। সেখানে মঞ্চ বাঁধার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে শুক্রবারই। সাজসজ্জার যেটুকু বাকি রয়েছে, দাঁড়িয়ে থেকে তা করিয়ে নিয়েছেন বিজেপি-র স্থানীয় নেতৃত্ব। সভাস্থলে ব্যারিকেড বসানো হয়েছে। ট্রায়াল রান হয়েছে মোদীর কপ্টারেরও। তাঁর নিরাপত্তায় যাতে কোনও ফাঁকফোকড় না থাকে, সে জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে লাগাতার যোগাযোগ রেখে চলেছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা প্রশাসন।
এর আগে, গত সোমবার কথা থাকলেও ঝাড়গ্রামের সভায় যাননি অমিত শাহ। হেলিকপ্টার বিকল হওয়াতেই সভা বাতিল হয়েছিল বলে দলের তরফে সাফাই দেওয়া হয়। যদিও বিজেপি-র অন্দরের খবর, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষে সম্মানজনক জমায়েত না হওয়াতেই সশরীরে উপস্থিতি এড়িয়ে যান শাহ। নরেন্দ্র মোদীর সফরে সেই ঝুঁকি নিতে নারাজ বিজেপি-র রাজ্য এবং জেলা নেতৃত্ব। তাই সভাস্থলের আশেপাশেই গাড়ি রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে গাড়ি ঢোকাতে না পেরে কেউ ফিরে না যান।
২০১৬ সাল থেকে খড়্গপুরে ক্রমশ হাত মজবুত হতে শক্ত করে বিজেপি-র। তার আগে কংগ্রেসের ঘাঁটি বলেই পরিচিত ছিল রেল শহর। জ্ঞান সিংহ সোহন পাল সেখানে দীর্ঘ দিন বিধায়ক ছিলেন। খড়্গপুরের মানুষের কাছে তিনি ছিলেন ‘চাচা’। যে কারণে সে বার বিধানসভা কেন্দ্র থেকে খড়্গপুরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেও ‘চাচা’র বিরুদ্ধে একটি মন্তব্যও করতে দেখা যায়নি দিলীপ ঘোষকে। তিনি জয়ী হন। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে দিলীপ মেদিনীপুর থেকে জয়ী হওয়ার পর, ওই আসনে উপনির্বাচন হয়। তাতে জয়ী হন তৃণমূলের প্রদীপ সরকার।
খড়্গপুর আসনটি ফিরে পাওয়াই এখন লক্ষ্য বিজেপি-র। যে কারণে মোদীর সভায় ভিড় জড়ো করতে চেষ্টায় ত্রুটি রাখছে না গেরুয়া শিবির। খড়্গপুর ছাড়াও আশেপাশের এলাকা থেকে সমর্থকদের আনার প্রচেষ্টা চলছে। হিরণ নিজে তো বটেই, বাংলায় বিজেপি-র পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং দিলীপ উপস্থিত থাকছেন। থাকছেন আরও বেশ কিছু বিধায়ক।
আগামী ২৭ মার্চ প্রথম দফায় নির্বাচন রয়েছে খড়্গপুর, কেশিয়াড়ি, দাঁতন, গড়বেতা, শালবনির মতো কেন্দ্রে। খড়্গপুর সদরে ভোট দ্বিতীয় দফায়। সেই কেন্দ্রেই প্রার্থী হিরণ। তাঁকে সঙ্গে নিয়ে ইতিমধ্যেই পথসভা করে গিয়েছেন শাহ। তবে শুধু খড়্গপুরই নয়, ২২ মার্চ অর্থাৎ সোমবার বাঁকুড়ায় সভা রয়েছে মোদীর। ২৪ মার্চ বুধবার কাঁথিতে সভা করবেন তিনি। তিনি যাওয়ার পর ফের রাজ্যে আসবেন শাহ।