ঝাড়গ্রামে বীরবাহা হাঁসদা-সহ চার তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়ন পেশ।
জেলার ৪ জন বিজেপি প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে মঙ্গলবার বিশাল মিছিল করলেন ঝাড়গ্রাম শহরে। নেতৃত্বে শুভেন্দু অধিকারী। একই দিনে কোনও বড় মিছিল ছাড়াই মনোয়নপত্র জমা দিতে গেলেন তৃণমূলের চার প্রার্থী। সঙ্গে ছিলেন দলের জেলা ও ব্লক স্তরের নেতারা।
জঙ্গলমহলে ঝাড়গ্রাম জেলায় নয়াগ্রাম, বিনপুর, গোপীবল্লভপুর এবং ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল মঙ্গলবার। যুযুধান দুই রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরাই ৪টি আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেন। ঘটনাচক্রে, ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা তথা তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ছত্রধর মাহাতোকে মঙ্গলবার দলীয় কর্মসূচিতে দেখা যায়নি।
লালগড়ের আমলিয়ায় বাসিন্দা ছত্রধরের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘জানানো হয়নি আজ মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাওয়া হবে। তা ছাড়া আমার কাছে গাড়ি ছিল না। তাই যেতে পারিনি। আমার সঙ্গে চারজন নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন। তাঁরা অস্ত্র নিয়ে মোটরবাইকে করে কী ভাবে যাবেন? সেই কারণে যাওয়া হয়নি।’’
প্রার্থী ঘোষণার পর তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে কলকাতায় ডেকে পাঠিয়েছিল বলে জানিয়েছেন ছত্রধর। তিনি বলেন, ‘‘দিদি সাংগঠনিক কাজে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। কোন রাগ বা গোসা নেই। দল যেখানে প্রার্থীদের হয়ে প্রচারে যেতে বলবে, সেখানেই যাব।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি দুলাল মুর্মু বলেন, ‘‘এত কম সময়ের মধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হয়েছে সে কারণে কিছু ত্রুটি থাকতে পারে। সকলকে হয়তো সময়মত খবর দেওয়া সম্ভব হয়নি। নতুন প্রার্থীদের কাগজপত্র তৈরি করতে সময় লেগেছে। যখনই কাগজ তৈরি হয়েছে তখনই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে।’’ তা ছাড়া মঙ্গলবার ছিল মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। সেই কারণে মিছিল করা সম্ভব হয়নি। দলের মধ্যে কোনও ক্ষোভ-বিক্ষোভ বা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই বলে জানিয়েছেন দুলাল।
বিধানসভা ভোটের মনোনয়ন পর্বের মধ্যেই পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে জেলার অন্তর্গত বিজেপি-র ৩টি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বদল হয়েছে মঙ্গলবার। ওই তিন জেলা সভাপতি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হওয়ার কারণেই এই রদবদল বলে রাজ্য বিজেপি-র তরফে জানানো হয়েছে।
মেদিনীপুর, ঘাটাল এবং ঝাড়গ্রাম জেলায় সভাপতি পরিবর্তন সম্পর্কে মঙ্গলবার লিখিত নির্দেশ পাঠিয়েছেন বিজেপি-র রাজ্য সহ-সভাপতি প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। মেদিনীপুর জেলায় সভাপতি করা হয়েছে সৌমেন তিওয়ারিকে। ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি করা হয়েছে তন্ময় দাসকে। ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি করা হয়েছে তুফান মাহাতোকে। এই তিন জেলাতেই বিদায়ী জেলা সভাপতিদের বিধানসভা ভোটে প্রার্থী করেছে বিজেপি— মেদিনীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে শমিত কুমার দাশ, পিংলা কেন্দ্রে ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার বিদায়ী সভাপতি অন্তরা ভট্টাচার্য এবং ঝাড়গ্রামে বিদায়ী জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী প্রার্থী হয়েছেন ঝাড়গ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রে। মঙ্গলবারই মনোনয়ন জমা দেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে এই তিন সাংগঠনিক জেলায় দু’টি কেন্দ্রে (মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম) জিতেছিল বিজেপি। সেই সাফল্যের পিছনে বিদায়ী জেলা সভাপতিদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলেই তাঁদের বিধানসভা ভোটে প্রার্থী করা হয়েছে বলে রাজ্য বিজেপি-র একটি সূত্র জানাচ্ছে।