ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের প্রধান আব্বাস সিদ্দিকি
জোট তৈরিতে অযথা দেরি যে তাঁর পছন্দ নয়, মঙ্গলবার সে কথা সাফ জানিয়ে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসকে হুঁশিয়ারি দিলেন আব্বাস সিদ্দিকি। কলকাতার ওয়াই চ্যানেলে ‘ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট’-এর এক প্রতিবাদ সভা থেকে আব্বাস বলেন, ‘‘আমি বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে লড়াই করতে চাই। কিন্তু যদি কোনও কারণে সেই জোট ভেঙে যায়, তবে আমি একাই এই লড়াই করব।’’
জোটের আলোচনা চলছে। সে কথা মনে করিয়ে আব্বাস বলেন, ‘‘আশা করি জোট হবে। তবে জোটের বিষয়ে কোনও সমস্যা হলে সে ক্ষেত্রে আমরা আমাদের মতো করেই পথ চলব। একাই লড়াই করব।’’ মঙ্গলবার ওয়াই চ্যানেলের সভায় সব মিলিয়ে তিন বার ভাষণ দেন আব্বাস। প্রত্যেক বারই তাঁর কথায় উঠে আসে জোট প্রসঙ্গ।
নীলবাড়ি দখলের লড়াইয়ের দৌড়ে পিছিয়ে পড়ছে জোট। কারণ, এখনও আসন রফা চূড়ান্ত হয়নি। আব্বাসও এ প্রসঙ্গে নিজের ক্ষোভ গোপন করেননি। নিজের ভাষণে জনতার উদ্দেশে তিনি প্রশ্ন ছোড়েন, ‘‘যদি কোনও কারণে জোট না হয়, যদি আইএসএফ-কে একা লড়াই করতে হয়, তা হলে আপনারা আমাদের সঙ্গে আছেন তো?’’ জনতার ইতিবাচক সাড়া পেয়ে তিনি বলেন, ‘‘ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট কিন্তু একাই লড়াই করবে। তবে আমরা একা নই, লড়াই করতে হলে অনেক ছোট ছোট দল আমাদের সঙ্গে থাকবে। তাদের নিয়েই আমরা লড়াই করব।’’
ইতিমধ্যেই আসাদউদ্দিন ওয়াইসির দল অল ইন্ডিয়া মজলিশে ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম), ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-এর মতো দলগুলোর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে আব্বাসের। কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের সঙ্গে জোট না হলে, ওই সব দলের জন্য যে বিকল্প দরজা খোলা রয়েছে, তা-ও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক দফায় বৈঠক হলেও জোটের জট খোলেনি।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক দফায় বৈঠক হলেও জোটের জট খোলেনি। সূত্রের খবর, বামফ্রন্টের সঙ্গে আইএসএফ-এর জোট সমস্যা কেটে গেলেও কংগ্রেসের সঙ্গে সমস্যা রয়ে গিয়েছে। গত শনিবার হুগলির বৈদ্যবাটিতে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের পরে সব পক্ষের নেতারা জানান, আর কয়েক দফা আলোচনা হলেই জোট চূড়ান্ত হয়ে যাবে।
কিন্তু, পর দিনই স্পষ্ট হয়ে যায় জোটের জট খোলা এত সহজ নয়। জানা গিয়েছে, রাজ্য কংগ্রেস নেতৃত্ব এখনও আইএসএফের দাবি প্রসঙ্গে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। তাই রবিবার রাতে জোট নিয়ে কথা বলতে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বৈঠকে বসেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম ও আইএসএফের চেয়ারম্যান নৌসাদ সিদ্দিকি। সূত্রের খবর, সেখানেই জোট নিয়ে বিমানবাবুকে কংগ্রেসের সঙ্গে কথা বলতে অনুরোধ করেন নৌসাদ। যদিও, তার পর দু’দিন কেটে গেলেও, কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি কংগ্রেস। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ আব্বাস। মঙ্গলবারের সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তাই একা লড়াইয়ের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
অন্য দিকে কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, আইএসএফের আসনের তালিকা পছন্দ হয়নি প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরীর। সেই তালিকায় ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের জেতা আসন থাকায় বেজায় ক্ষুব্ধ হন তিনি। তাই জোট নিয়ে এখনই কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি।