রাজনীতির বিভাজন পা রেখেছে অন্দরমহলে। তাঁদের দাম্পত্য দ্বন্দ্ব ভোটের হাওয়ায় বেশ কয়েক দিন ধরে ছিল শিরোনামে। সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে সুজাতা মণ্ডল তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন হুগলির আরামবাগ কেন্দ্র থেকে।
নির্বাচন কমিশনের কাছে হলফনামায় সুজাতা জানিয়েছেন তাঁর সম্পত্তির খতিয়ান। ২০১৯-২০ আর্থিক বর্ষে তাঁর উপার্জন ছিল ১ লক্ষ ১৬ হাজার ৯২০ টাকা। তার আগের আর্থিক বর্ষে তাঁর উপার্জনের পরিমাণ ছিল ১ লক্ষ ৯০ হাজার ৯০০ টাকা। সুজাতার স্বামী সৌমিত্র খাঁ বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ। তাঁর উপার্জনের উল্লেখ সুজাতা করেননি।
সুজাতার হাতে এই মুহূর্তে আছে নগদ ৮ হাজার টাকা। এসবিআই-এর সেভিংস অ্যাকাউন্টে গচ্ছিত ১ লক্ষ ৬০ হাজার ২৭৪ টাকা। ওই ব্যাঙ্কের আরামবাগ শাখায় একটি অ্যাকাউন্ট নতুন খুলেছেন সুজাতা। মূলত নির্বাচনী ব্যয়ের জন্য খোলা ওই অ্যাকাউন্টে রয়েছে ২ হাজার টাকা। পিএনবি-র বড়জোড়া শাখায় আছে ৪২ হাজার ৫৪৭ টাকা। একই ব্যাঙ্কের বাঁকুড়া শাখায় পিপিএফ অ্যাকাউন্টে আছে ১১ লক্ষ ৫৬ হাজার ৮২৮ টাকা।
মিউচুয়াল ফান্ডে সুজাতা বিনিয়োগ করেছেন ১ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা।
পোস্ট অফিসের দু’টি অ্যাকাউন্টে আছে ১৫ লক্ষ টাকা।
সুজাতার কাছে একটি হন্ডা সিটি আছে। ২০১৯ সালে কিনেছিলেন ৭ লক্ষ ২৯ হাজার টাকা দিয়ে। এ ছাড়াও আছে ৫৮ হাজার টাকায় কেনা একটি টিভিএস স্কুটি।
তাঁর কাছে থাকা ৪০০ গ্রাম সোনার গয়নার মূল্য ২০ লক্ষ ৫৪ হাজার ২৫০ টাকা।
এ ছাড়া তাঁর নামে কোনও জমি বা বাড়ির উল্লেখ করেননি সুজাতা। নেই কোনও ব্যাঙ্কঋণও।
২০১০ সালে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর স্তরের পড়াশোনা সম্পূর্ণ করেন সুজাতা। নিজের উপার্জন বলতে সুজাতা শিক্ষকতা সূত্রে পাওয়া বেতনের উল্লেখ করেছেন। স্বামী সৌমিত্রর উপার্জন তিনি জানেন না বলে জানিয়েছেন।
শুধু উপার্জনই নয়। স্বামীর ক্ষেত্রে অন্যান্য তথ্য, যেমন তাঁর নামে থাকা কোনও সম্পত্তিও তাঁর কাছে ‘অজ্ঞাত’ বলে দাবি সুজাতার।
গত ২১ ডিসেম্বর বিজেপি ছেড়ে সৌগত রায় ও কুণাল ঘোষের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন সুজাতা। সে দিনই নিজের সল্টলেকের বাসভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে স্ত্রীকে ডিভোর্স দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন সৌমিত্র।
পর দিন, ২২ ডিসেম্বর সুজাতাকে বিবাহবিচ্ছেদের নোটিস পাঠান সৌমিত্র। তারপর অবশ্য সৌমিত্র-সুজাতা নিজেদের পথ বেছে নিয়েছেন। জানুয়ারি মাসে সুজাতা জানান, তিনি সৌমিত্রকে ডিভোর্স দেবেন না। স্বামীর সঙ্গে ঘর সংসার করতে চান তিনি।
সুজাতার দাবি, রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেই সম্পর্ক শেষ হয়ে যায় না। ১০ বছরের বেশি সময় তিনি সৌমিত্রর সঙ্গে বহু বন্ধুর পথ পেরিয়েছেন। তিনি সৌমিত্রর থেকে আলাদা হওয়ার কথা ভাবতেও পারেন না।
হলফনামায় সৌমিত্রকে স্বামী হিসেবে উল্লেখ করলেও তাঁর সম্বন্ধে সব তথ্যই সুজাতার কাছে ‘অজ্ঞাত’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।