মানুষ ও তার সভ্যতার বিবর্তনের ইতিহাস সম্পর্কে অল্পবিস্তর ধারণাও যাঁদের আছে, তাঁরা সবাই একটা বিষয়ে ওয়াকিবহাল, সভ্যতা যত এগিয়েছে, যত হয়েছে বিবর্তন, পূর্বপুরুষের থেকে উত্তরপুরুষ আরও একটু খাড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। লক্ষ লক্ষ বছর কেটে গিয়েছে ওই ন্যুব্জ বিভঙ্গকে খাড়া করে প্রতিষ্ঠিত করতে। টান টান মেরুদণ্ডে যে দিন সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারলাম আমরা, সেদিনই আমরা নতুন পরিচয় পেলাম। আমরা মানুষ হলাম।
প্রাথমিক শিশুপাঠ্য এই ইতিবৃত্ত নিতান্তই সহজ। কিন্তু কে না জানে সহজ কথা কোনও দিনই ঠিক ততটা সহজ থাকেনি। অতএব, বিবর্তনের ধারাকে নতুন করে পাল্টানোর প্রয়াসও শুরু হয়। ওই মেরুদণ্ডকে ধীরে ধীরে নুইয়ে দিয়ে ইতিহাসের চাকাকে বেশ আবার পিছনের দিকে ঠেলার চেষ্টাও হয়। মুশকিল একটাই, সব কিছু সম্ভব, শুধু বিবর্তনের চাকাকে ঘুরিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। অতএব, যে মেরুদণ্ডগুলো অনেক দিন ধরে অদৃশ্য ছিল সেগুলো আবার শক্ত চোয়ালে সোজা হয়ে উঠে দাঁড়ায়। পুলিশের ভূমিকা এ বার নির্বাচনের মধ্য পর্যায় থেকে যে ভাবে দেখা গেল তাতে এই কথাগুলো মনে পড়ে গেল।
এ বার শেষ দফার ভোট আজ। মেরুদণ্ডকে আরও এক বার বাঁকানোর চেষ্টা চলছে সর্বোতভাবে। সম্ভব হবে আর? সভ্যতার চাকাকে পিছন দিকে ঠেলা যাবে? সম্ভব হবে ওই আম আদমির শিরদাঁড়াটাকে আরও এক বার বাঁকিয়ে দেওয়া? সমস্ত ভয় ভেঙে দৃঢ় মেরুদণ্ডে জেগে উঠেছে মানুষ। এ বারের ভোট তাদের। গণতন্ত্রের উত্সবের শেষ পর্যায়ের পরীক্ষা আজ। মানুষই প্রমাণ করুক শেষ কথা বলে তারাই।