মঙ্গলকোটের ক্ষীরগ্রামে বিজেপির মহিলা মোর্চার সম্মেলনে যোগ দিলেন সন্দেশখালির নির্যাতিতারা। — প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা এলাকায় অত্যাচার করতে এলে, প্রলোভন বা ভয় দেখিয়ে ভোট কেনার চেষ্টা করলে প্রতিবাদ করার ডাক দিলেন সন্দেশখালির নির্যাতিতারা। শুক্রবার মঙ্গলকোটের ক্ষীরগ্রামে বিজেপির মহিলা মোর্চার সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলে তাঁরা। সন্দেশখালিতে তৃণমূলের ঝান্ডা নিয়ে শাহজাহান শেখের দুষ্কৃতীরা কী ভাবে অত্যাচার চালিয়েছে, সেই কথাও তুলে ধরেন। তাঁদের পরামর্শ, ‘‘নির্যাতন মুখ বুজে সহ্য করার দিন গিয়েছে। অন্যায়ের প্রতিবাদে রাস্তায় নামুন, রুখে দাঁড়ান। দেখবেন দুষ্কৃতীরা একটা সময় একটা সময় এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে।’’
এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ ক্ষীরগ্রামের একটি লজে বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক মহিলা মোর্চার ডাকে সম্মেলন হয়। ছিলেন দলের রাজ্য মহিলা মোর্চার সাধারণ সম্পাদক শশী অগ্নিহোত্রী, বোলপুর জেলা সভানেত্রী সুজাতা ঘোষ, বোলপুর মহিলা মোর্চার সাধারণ সম্পাদক বুলবুল গোস্বামী ও বিজেপির বীরভূম জেলা (বোলপুর সাংগঠনিক) সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল। ঘণ্টা তিনেক ধরে সভা হয়। দুপুরে গ্রামেই দলের এক কর্মীর বাড়িতে খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
এ বারের লোকসভা নির্বাচনে সন্দেশখালিকে প্রচারের বড় হাতিয়ার করেছে বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জনসভাগুলিতে সন্দেশখালির ‘নারী নির্যাতন’-এর প্রসঙ্গ তুলছেন। দলীয় স্তরে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সন্দেশখালিতে যাঁরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে নজর কেড়েছেন, তাঁদের বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি প্রার্থীদের সমর্থনে ভোট-প্রচারে নিয়ে যাওয়া হবে। বোলপুর লোকসভার বিজেপি প্রার্থী পিয়া সাহার সমর্থনেও সাতটি বিধানসভার নানা জায়গায় যাবেন তাঁরা। এ দিনই প্রথম ক্ষীরগ্রামে সম্মেলনে যোগ দিলেন তাঁরা।
ওই মহিলারা বলেন, “আমারা খুবই গরিব ঘরের। স্বামীদের হাড়ভাঙা পরিশ্রমের সামান্য আয়ে আমাদের সংসার চলে। সেই সুযোগ নিয়ে তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখ ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা নানা ভাবে আমাদের ভয় দেখিয়ে বছরের পর বছর নির্যাতন করতেন। প্রথম প্রথম ভয় পেতাম। পরে ওরা অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে আমরাও জোট বাঁধলাম।’’ তাঁদের দাবি, সেই সময় বিজেপিকে পাশে পেয়েছেন তাঁরা।
মঙ্গলকোটের মহিলা মোর্চার নেত্রী বুলবুল গোস্বামী বলেন, “সম্মেলনে ভালই ভিড় হয়েছিল। সন্দেশখালির মহিলাদের কথা শুনে আমরা নতুন করে প্রতিবাদের ভাষা খুঁজে পেলাম।” মঙ্গলকোট ব্লক মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী সুমনা মুখ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, “হাতে গোনা কয়েক জনকে নিয়ে বিজেপির একটা বৈঠক হয়েছে বলে শুনেছি। সেখানে সন্দেশখালি থেকে কেউ এসেছিল কি না জানা নেই। বিজেপির অপপ্রচার মানুষ বিশ্বাস করেন না।’’