Lok Sabha Election 2024

লোকসভার আগে মোদী দক্ষিণমুখী, দক্ষিণের রাজ্যগুলি ‘পাল্টা’ দিল্লি দরবারে, বুধে কর্নাটক, বৃহস্পতিতে কেরল

নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন পর্বেই স্পষ্ট হয়েছিল, মোদী এবার দাক্ষিণাত্য জয় করতে চান। তামিল ভাবাবেগের সঙ্গে জড়িত সেঙ্গলকে নতুন সংসদ ভবনে প্রতিষ্ঠিত করতে একের পর এক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১০:১৮
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

উত্তর ভারতের দুগ্ধবলয়ের উপর ভিত্তি করেই ২০১৪ সালে ‘দিল্লিবাড়ি’ দখল করেছিল বিজেপি। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব ভারত ভরিয়ে দিয়েছিল পদ্মশিবিরের ঝুলি। যার জোরে একাই ৩০০ পার করেছিল বিজেপি। কিন্তু এই ১০ বছরে বিন্ধ্য পর্বতের ও পারে অর্থাৎ দক্ষিণ ভারতে সে ভাবে শক্ত জমি তৈরি করতে পারেনি পদ্মশিবির। যা-ও বা কর্নাটকে হয়েছিল, তা-ও বিগড়ে গিয়েছে। আরও একটি লোকসভা ভোট যখন আসন্ন, তখন দেখা যাচ্ছে নরেন্দ্র মোদী ‘দক্ষিণমুখী’। পক্ষান্তরে, দক্ষিণের অবিজেপি রাজ্যগুলি অভাব- অভিযোগ, দাবি-দাওয়া এনে আছড়ে ফেলতে চাইছে দিল্লির সদরে।

Advertisement

কেন্দ্রীয় বাজেটে কর্নাটকের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ তুলে বু‌ধবার দিল্লির যন্তর মন্তরে অবস্থান বিক্ষোভ করেছে কংগ্রেস, যার নেতৃত্বে ছিলেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া এবং উপমুখ্যমন্ত্রী ডিকে শিবকুমার। বৃহস্পতিবার যন্তর মন্তরের সামনে প্রতিবাদে নামছে ‘ঈশ্বরের আপন দেশ’। কেরলের সিপিএম নেতৃত্বাধীন বাম গণতান্ত্রিক সরকারের গোটা মন্ত্রিসভা দিল্লিতে হাজির হচ্ছে। হাজির থাকবেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিএম পলিটব্যুরোর সদস্য পিনারাই বিজয়নও। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় রাজ্য সরকারের কাজে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ, রাজ্যপালের ভূমিকা ইত্যাদি নিয়ে সরব হতে চলেছে কেরল। কেরলের দিল্লি অভিযানকে আনুষ্ঠানিক ভাবে সংহতি জানিয়েছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী তথা ডিএমকে প্রধান এমকে স্ট্যালিন।

নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন পর্বেই স্পষ্ট হয়েছিল, মোদী এ বার দাক্ষিণাত্য জয় করতে চান। তামিল ভাবাবেগের সঙ্গে জড়িত ‘সেঙ্গল’কে নতুন সংসদ ভবনে প্রতিষ্ঠিত করতে একের পর এক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। পরবর্তী কালে দেখা গিয়েছে, রামমন্দির উদ্বোধনের প্রাক্কালে দক্ষিণের বিভিন্ন রাজ্যের মন্দিরগুলিতে ঘুরে বেড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। গিয়েছেন দক্ষিণের সমুদ্রতটেও। তার পরে সোজা অযোধ্যায় পৌঁছে রামলালার মূর্তিতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেছেন। অনেকের মতে, দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে হিন্দুত্বের আবেগ উস্কে দিতেই মোদীর মন্দির সফরের ধারাবাহিকতা দেখা গিয়েছিল। লোকসভা ভোটের আগে প্রশ্ন হল, মোদীর সেই মন্দির প্রদক্ষিণ কি দক্ষিণ ভারতে বিজেপির জন্য উর্বর জমি তৈরি করে দেবে?

Advertisement

রাজনৈতিক মহলের অনেকের মতে, মোদী যা করেছেন তা বিজেপির ভোট রাজনীতির পরিকল্পনামাফিক। দক্ষিণের রাজ্যগুলির দিল্লি দরবারও ‘পাল্টা’ রাজনীতির চাল হিসেবেই দেখছেন অনেকে। দক্ষিণের মাটিতে নানাবিধ ভাঙাগড়া চলছে। এক দিকে অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী জগন্মোহন রেড্ডির বোন ওয়াইএস শর্মিলাকে দলে শামিল করেছে কংগ্রেস। জাতীয় সাবেক দল শর্মিলাকেই অন্ধ্রপ্রদেশ ‘পুনরুদ্ধার’ করার দায়িত্ব দিয়েছে। আবার সদ্য জেল খেটে আসা অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা তেলুগু দেশম পার্টির সভাপতি চন্দ্রবাবু নাইডুর সঙ্গে দিন দিন ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে বিজেপির। এর মধ্যে তেলঙ্গনার কুর্সিতে বসেছে কংগ্রেস। এহেন প্রেক্ষাপটে লোকসভার প্রাক্কালে দক্ষিণের রাজনীতি উত্তেজক হয়ে উঠেছে। বিন্ধ্যপর্বতের ও পারে বিজেপি কি পদ্ম ফোটাতে পারবে? না কি অবিজেপি শক্তি দক্ষিণ ভারতকে পদ্মমুক্ত রাখবে? স্পষ্ট হবে লোকসভা ভোটের পরে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement