অসমের মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক।
অসমে লোকসভার প্রচারে গিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, এই প্রচার আসলে ট্রায়াল। ফাইনাল খেলা এখনও বাকি আছে। শিলচরের জনসভা থেকে মমতা বলেন, ‘‘তৃণমূল এ বার অসমে চারটি আসনে লড়ছে। এটা তো সবে ট্রায়াল দেখছেন। ট্রায়াল দিতে এসেছি। ফাইনাল খেলা এখনও বাকি। আমি আবার আসব।’’ অসমে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে সব আসনে প্রার্থী দেওয়ার ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি। শিলচর কেন্দ্রে তৃণমূলের টিকিটে এ বার ভোটে দাঁড়িয়েছেন রাধেশ্যাম বিশ্বাস। তাঁর সমর্থনে ভোট চেয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘আপনারা আমাকে জেতান। আমার প্রার্থী রাধেশ্যাম এবং অন্যদের জেতান। আমি কথা দিচ্ছি, বিধানসভায় সব আসনে তৃণমূল প্রার্থী দেবে।’’
উল্লেখ্য, শিলচরের পাশাপাশি অসমের বাকি তিনটি আসনে তৃণমূল প্রার্থীদের সমর্থনেও প্রচার করেছেন মমতা। অসমের বরপেটায় আবুল কালাম আজাদ, লখিমপুরে ঘনকান্ত চুতিয়া এবং কোকড়াঝাড়ে গৌরীশঙ্কর শরণিয়াকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল।
বুধবার অসমে গিয়ে সুস্মিতা দেবের প্রসঙ্গ টানেন মমতা। সুস্মিতা অসমের কন্যা। তাঁর বাবা সন্তোষমোহন দেব শিলচর লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস সাংসদ ছিলেন। মমতা বলেন, ‘‘এখানকার মেয়ে সুস্মিতা এখন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ। আমরা ওকে রাজ্যসভায় পাঠিয়েছি। এটা আপনাদের গর্ব।’’
বাংলায় তৃণমূল সরকারের সাফল্য এবং বিভিন্ন প্রকল্পের কথা শিলচরের মঞ্চে একে একে তুলে ধরেন মমতা। কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, লক্ষ্মীর ভান্ডারের মতো একাধিক প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধার কথা উঠে এসেছে তাঁর ভাষণে। মমতার দাবি, বিজেপির শাসনে এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন না অসমের মানুষ। তা পেতে হলে ভোট দিতে হবে তৃণমূলে। বাংলায় তিনি কী কী করেছেন, তার খতিয়ান দিয়ে ভোট চেয়েছেন শিলচরের মানুষের কাছে।
অসমে গিয়ে সিএএ এবং এনআরসি প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘এনআরসিতে এখানে যখন লক্ষ লক্ষ মানুষকে বাদ দেওয়া হয়েছিল, আমি আপনাদের পাশে ছিলাম। আমি কলকাতায় রোজ মিছিল করতাম। বিজেপির অত্যাচারের কাহিনি আমি জানি। দেশ জুড়ে অনেক আগুন ওরা জ্বালিয়েছে, তাণ্ডব চালিয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা জিতলে এনআরসি হবে না, সিএএ হবে না, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি হবে না। আমরা সে সব তুলে দেব। অসমে যাঁদের ভবিষ্যৎ এখনও অনিশ্চিত হয়ে আছে, আমি তাঁদের ভবিষ্যৎ গড়ে দেব।’’
অসমের চারটি কেন্দ্রের মধ্যে শিলচরকে তুলনামূলক বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে তৃণমূল। দলের একাংশের মতে, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সন্তোষমোহনের স্মৃতিকে সম্মান জানাতেই এই কেন্দ্রকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন মমতা।