(বাঁ দিকে) কবীরশঙ্কর বোস এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
শ্রীরামপুরের তিন বারের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াই এ বার তাঁর প্রাক্তন জামাই কবীরশঙ্কর বসুর সঙ্গে। কবীরশঙ্করকে শ্রীরামপুরের প্রার্থী করেছে বিজেপি। সে প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে কল্যাণের মন্তব্য, ‘‘কেউ ফ্যাক্টর না!’’
দিল্লিবাড়ির লড়াইয়ে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে প্রাক্তন দম্পতির লড়াই দেখবে রাজ্যবাসী। এক দিকে বিজেপির প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ। অন্য দিকে, তৃণমূলের প্রার্থী সুজাতা মণ্ডল। হুগলির শ্রীরামপুরও এক ‘পারিবারিক’ লড়াই দেখবে। নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রসঙ্গে কল্যাণ বলেন, ‘‘গত বার হ্যাটট্রিক করেছি। এ বার বাউন্ডারি হাঁকাব। বিরোধীরা কোনও ফ্যাক্টরই হবে না।’’
সোমবার দোলের দিন সকাল থেকেই জনসংযোগ করছেন তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ। শ্রীরামপুরের রাধাবল্লভ মন্দিরে পুজো দিয়ে পদযাত্রা করেন তিনি। বটতলায় জুটমিলের শ্রমিক মহল্লায় গিয়ে তিরুপতি পুজোয় যোগ দেন। সেখান থেকে যান চাতরা দোল মন্দিরে। পথে ছোটদের সঙ্গে দোল খেলতেও দেখা যায় তাঁকে। রং খেলতে খেলতেই কল্যাণ বলেন, ‘‘বিরোধীদের সম্পর্কে কিছু বলব না। ২০০৯ সাল থেকে সিপিএমকে হারিয়েছি। বাপি লাহিড়ী হেরেছেন। গত বার দেবজিৎ সরকার হেরেছেন। এ বার লাল-গেরুয়া সব হারবে। আইএসএফ বা ফুরফুরা কোথাও কোনও সমস্যা হবে না।’’
কবীরশঙ্কর পেশায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। গত ২০১৯ সাল থেকে শ্রীরামপুরের রাজনীতিতে তাঁর উদয়। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ান পরিবৃত অবস্থায় তাঁকে ঘোরাফেরা করতে দেখেছেন শহরবাসী। তৃণমূলের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে তিনিও জোরকদমে প্রচার চালিয়েছেন। এর পরেই গত বিধানসভা নির্বাচনে শ্রীরামপুর কেন্দ্রে তাঁকে প্রার্থী করে বিজেপি। কিন্তু তৃণমূলের সুদীপ্ত রায়ের কাছে পরাজিত হন কবীরশঙ্কর। তাঁকে এ বার লোকসভাতেও প্রার্থী করল পদ্মশিবির। কয়েক দিনে শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত শ্রীরামপুর, উত্তরপাড়া এবং চাঁপদানি বিধানসভা এলাকায় কবীরের যাতায়াত বেড়ে গিয়েছিল। তখন থেকেই জল্পনা ছিল, তাঁকে এ বার কল্যাণের বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে পারে বিজেপি। রবিবার সেই জল্পনাই সত্যি হল।
বিজেপির প্রার্থিতালিকা প্রকাশিত হওয়ার পর কবীরশঙ্করের প্রত্যয়, বিপুল ভোটে জিতবেন। তিনি বলেন, ‘‘শ্রীরামপুর কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভা এলাকায় গত দেড় দশকে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। মানুষকে শুধু ভাঁওতা আর মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট চুরি করা হয়েছে। বিশেষত পঞ্চায়েত এলাকায় শোচনীয় পরিস্থিতি। গ্রামে গ্রামে পানীয় জল, শৌচাগার, সড়ক পরিবহণের বেহাল দশা।’’ কল্যাণের সঙ্গে অতীত সম্পর্কের প্রশ্নে তাঁর বক্তব্য, ‘‘বর্ষীয়ান সাংসদ হিসেবে ওঁকে সম্মান করি। প্রত্যেক মানুষের জীবনেই অতীত থাকে। রাজনীতির ময়দানে তিনি আমার প্রতিপক্ষ।’’ প্রসঙ্গত, কল্যাণের কন্যার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল কবীরের। ২০১৭ সালে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়।