বাচ্চা কোলে নিয়েই ভোটদান। অসমের সোনিতপুর জেলার ওরাংয়ের একটি বুথে। ছবি: পিটিআই।
বাকি দেশে ভোটের হার ৫০ শতাংশ পৌঁছতেই সমস্যা হয়েছে। কিন্তু অসম, মণিপুর ও ত্রিপুরায় ভোট পড়েছে ৭২ থেকে ৭৮ শতাংশ পর্যন্ত। সন্ধ্যা পর্যন্ত মেলা হিসেবে অসমে প্রায় ৭২ শতাংশ, মণিপুর ও ত্রিপুরায় ৭৭ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। অবশ্য, প্রথম পর্যায়ের মতোই দ্বিতীয় পর্যায়ের ভোটেও বিক্ষিপ্ত অশান্তি হল মণিপুরে। অন্য দিকে পূর্ব ত্রিপুরা কেন্দ্রে দু’টি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটারেরা ভোট বয়কট করেছেন।
আউটার মণিপুরে ১৩টি বিধানসভা কেন্দ্র এলাকা মিলিয়ে বুথের সংখ্যা ৮৫৭। শরণার্থীদের ভোট নিতে ৯টি বিশেষ বুথও ছিল। ওই কেন্দ্রে লড়াই মূলত বিজেপি সমর্থিত এনপিএফ প্রার্থী কাচুই টিমোথি জ়িমিক ও কংগ্রেস তথা ইন্ডিয়া জোটের প্রার্থী অ্যালফ্রেড কে আর্থারের মধ্যে। অসমের শিলচর, করিমগঞ্জ, ডিফু, নগাঁও ও দরং-ওদালগুড়ি কেন্দ্রের ভোটে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ৬১।
প্রথম পর্যায়ে বুথে ভাঙচুর, গুলিচালনার পরে দ্বিতীয় পর্যায়ের ভোটেও উত্তপ্ত হয়েছে মণিপুর। উখরুলে দু’টি ভোটকেন্দ্রে কংগ্রেস ও এনপিএফ সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। একটি কেন্দ্রে বিজেপির এক নেতা মারধরে জখম হন। অপর এক বুথে বিজেপির এক সদস্য মহিলাদের গায়ে হাত দেওয়ায় উত্তেজনা ছড়ায়।
কুকিরা আগেই জানিয়েছিলেন তাঁরা ভোটে অংশ নেবেন না। তাই আউটার মণিপুরের কুকি অধ্যুষিত বুথগুলিতে ভোট পড়েনি। কাংপোকপি জেলার সাইকুলে মেইতেই সশস্ত্র বাহিনী মাকান গ্রামের দিকে হামলা চালায়। থিংসাই এলাকায় উভয় পক্ষে দীর্ঘক্ষণ গুলির লড়াই চলে।
এ দিকে, অসমের ভোটে কাছাড়ের উদারবন্ধে দুর্গানগর চা বাগানের বাসিন্দারা রাস্তা তৈরি না হওয়ার প্রতিবাদে ভোট বয়কট করেন। সাতশোর বেশি ভোটারের মধ্যে মাত্র ১টি ভোট পড়ে। অন্য দিকে দরং জেলার সিপাঝাড়ে বামুনিঝাড় গ্রামের মানুষ বিশ বছর পরে ভোট দিলেন। অ-বড়ো অধ্যুষিত এলাকা হলেও বড়ো চুক্তির জেরে বড়ো এলাকার অধীনস্থ করে দেওয়ার প্রতিবাদে লোকসভা, বিধানসভা বা স্বশাসিত পরিষদের ভোট বয়কট করে এসেছিলেন তাঁরা।
অন্য দিকে প্রথম পর্বের মতো ত্রিপুরার দ্বিতীয় দফার ভোটেও অভিযোগ উঠেছে অশান্তি ও জবরদস্তির। সেই সঙ্গে রয়েছে ভোট বয়কটের ছবিও। দিনের শেষে পূর্ব ত্রিপুরা জনজাতি সংরক্ষিত আসনে ভোট পড়েছে ৭৯.৫৫ শতাংশ।
আজ পূর্ব ত্রিপুরার রাইমাভ্যালি এবং অম্পি কেন্দ্রের দু’টি বুথের ভোটারেরা পানীয় জল, বিদ্যুৎ ও রাস্তার দাবিতে ভোট বয়কট করেন। পাশাপাশি খোয়াই জেলার কৃষ্ণপুর বিধানসভা কেন্দ্রের সিপিএম অঞ্চল কমিটির নেতা অর্ধেন্দু ঘোষের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে বিজেপির সমর্থকদের বিরুদ্ধে। খোয়াই বিধানসভা কেন্দ্রের ১৪ নম্বর বুথ কেন্দ্রে ভোট দিতে গিয়ে মৌমাছির হুলে আহত হয়েছেন ১০ জন ভোটার। তাঁদের দমকল কর্মীরা উদ্ধার করেন।
সিপিএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরীর কটাক্ষ, ‘‘এই হচ্ছে বিকশিত ভারতের আসল চেহারা। পানীয় জল ও বিদ্যুতের দাবিতে ভোট বয়কট করতে হচ্ছে।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘‘রাজ্যে উৎসবের মেজাজে ভোট হয়েছে।’’ ভোট বয়কট প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘রাজ্যের ৮০ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছেন। দু’টি এলাকার অল্প কিছু লোক যদি অশান্তি সৃষ্টি করে, সেটা আমরা পরে দেখব।’’