হিন্দুদের কাছে দেশের স্বার্থে ভোটের আর্জি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
লোকসভা নির্বাচনে একক ভাবে ৩৭০ আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায় বিজেপি। দলের এই লক্ষ্য ঠিক করে দিয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর সেই লক্ষ্যপূরণে সঙ্ঘ পরিবারের সব সংগঠনই বিজেপিকে সহযোগিতা করবে। সরাসরি বিজেপির হয়ে না হলেও নানা ভাবে প্রচারে অংশ নেবে সব সংগঠন। সেই সিদ্ধান্তের স্পষ্ট প্রকাশ ঘটল বিশ্ব হিন্দু পরিষদের জাতীয় সম্মেলনে নেওয়া একটি প্রস্তাবে। সেখানে সংগঠনের পক্ষে ঠিক করা হয়েছে দেশের সব হিন্দুদে বুথমুখী করতে হবে লোকসভা নির্বাচনে। হিন্দু সমাজের কাছে ১০০ শতাংশ ভোটের জন্য আর্জিও জানানো হয়েছে পরিষদের তিন নম্বর প্রস্তাবে।
১৯৬৪ সালে জন্ম নেওয়া পরিষদের ৬০ বছর পূর্তি চলছে। গত মাসেই অযোধ্যায় রামজন্মভূমি মন্দির স্থাপনের পরে উজ্জীবিত পরিষদ এ বার বিজেপির ভোটের লড়াইতেও আড়াল থেকে অংশ নিতে চায়। সঙ্ঘ পরিবারের মূল সংগঠন আরএসএস-ও শতবর্ষের মুখে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে পরিষদের পক্ষে হিন্দুদের কাছে একশো শতাংশ ভোটের আর্জি জানানোটা রাজনৈতিক ভাবেও গুরুত্বপূর্ণ। তৃতীয় বার মোদীকে প্রধানমন্ত্রী করতে বাংলা-সহ গোটা দেশেই বিজেপির বড় ভরসা হিন্দু ভোট। সেই ভোটকে এককাট্টা করার লক্ষ্য নিয়েছে পরিষদ।
সরাসরি বিজেপিকে ভোট দেওয়ার কথা বলা হয়নি পরিষদের প্রস্তাবে। তবে এটা বলাই বাহুল্য যে মোদীর হাতে অযোধ্যায় নতুন মন্দিরের উদ্বোধন হওয়ার পরে সেই অযোধ্যাতে বসেই এমন প্রস্তাব নিল পরিষদ। অযোধ্যায় মন্দিরের কাছেই করসেবকপূরণে রবিবার শুরু হওয়া পরিষদের জাতীয় সম্মেলন চলবে মঙ্গলবার পর্যন্ত। সেখানে তিন নম্বর প্রস্তাবের নাম দেওয়া হয়েছে, ‘রাষ্ট্রের স্বার্থে ভোট এবং একশো শতাংশ ভোট’।
অযোধ্যায় রবিবার শুরু হয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তিন দিনের জাতীয় সম্মেলন। — নিজস্ব চিত্র।
পাঁচ বছর অন্তর বৃহত্তম গণতন্দ্রের দেশ বারতে প্রতি পাঁট বছর অন্তর উৎসবের আকারে জাতীয় নির্বাচন হয়। আর সেই গণতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেই নির্বাচনে অংশ নেওয়াটাই ‘রাষ্ট্রধর্ম’। এর পরেই পরিষদের ট্রাস্টি বোর্ডের পক্ষে আবেদন করে বলা হয়েছে, ‘‘ব্যক্তিগত, জাতিগত, ভাষাগত, সাম্প্রদায়িকতা এবং আঞ্চলিকতাকে সরিয়ে রেখে জাতীয় স্বার্থে ভোট দিতে হবে। এই লোকসভা নির্বাচন ভারতের ভবিষ্যৎ ঠিক করে দেবে। আগামী প্রজন্মের জন্য পুরোপুরি নিরাপদ, উন্নত এবং শক্তিশালী ভারত গঠন আমাদের সকলের কর্তব্য।’’ এর পরে সরাসরি বিজেপিকে ভোট দিতে না বলে পরিষদ প্রাস্তবে লিখেছে, ‘‘এমন একটি সরকার চাই যে ভারতীয় সংস্কৃতি ও মূল্যবোধকে শ্রদ্ধা এবং রক্ষা করে।’’
এর পরেই পরিষদ বলেছে, রাষ্ট্রীয় কর্তব্য মনে করে প্রত্যেক হিন্দুর ভোটদানে অংশ নেওয়া উচিত। আগে থেকে দেখে নেওয়া উচিত সকলের নাম ভোটার তালিকায় রয়েছে কি না। নিশ্চিত করতে হবে যাতে একশো শতাংশ ভোট পড়ে। ভোটগ্রহণের দিন মনে রাখতে হবে, আগে ভোট পরে অন্য কিছু। এই ভাবে হিন্দুদের একশো শতাংশ ভোটদানের সঙ্কল্প নিতে বলার পাশাপাশি নোটায় যাতে ভোট না পরে সে বিষয়েও প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়ে রাষ্ট্রীয় স্বার্থেই নোটায় ভোট দেওয়া ঠিক নয়।