মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র ।
মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হোক! মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সন্ন্যাসী’ মন্তব্য নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে তেমনটাই আর্জি জানাল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সঙ্গে কয়েক জন মহারাজও এই মামলা দায়ের করেছেন। চলতি সপ্তাহে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সন্ন্যাসী সংক্রান্ত ঘটনাপ্রবাহের শুরু গত শনিবার, আরামবাগে। সেখানে মমতা রামকৃষ্ণ মিশন এবং ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কয়েক জন সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক বক্তৃতা করেছিলেন। বিশেষত, মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কার্তিক মহারাজের নাম করে তিনি বলেছিলেন, ‘‘সব সাধু সমান হয় না। সব স্বজন সমান হয় না। আমাদের মধ্যেও কি আমরা সবাই সমান? এই যে বহরমপুরের এক জন মহারাজ আছেন। আমি শুনেছি অনেক দিন ধরে, কার্তিক মহারাজ। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম। আমার শ্রদ্ধার্ঘ্যের তালিকায় তারা দীর্ঘ দিন ধরে আছে। কিন্তু যে লোকটা বলে, তৃণমূলের এজেন্ট বসতে দেব না, সেই লোকটাকে আমি সাধু বলে মনে করি না। তার কারণ, সে ‘ডাইরেক্ট পলিটিক্স’ করে দেশটার সর্বনাশ করছে।’’
নির্বাচনী আবহে সেই ‘ইস্যু’ হাতছাড়া করেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তাঁর দল। মুখ্যমন্ত্রীর সাধু-সন্ত মন্তব্যের প্রেক্ষিতে মমতার দিকে একের পর এক নিশানা করেছেন মোদী। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন কার্তিক মহারাজও। বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে সোমবার মুখ্যমন্ত্রীকে আইনি চিঠিও পাঠিয়েছেন। তাঁর দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের কোনও সারবত্তা নেই। ওই বক্তব্যে তাঁর ‘মানহানি’ হয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন কার্তিক মহারাজ। সম্মানহানির চেষ্টায় মুখ্যমন্ত্রী ‘অসত্য’ এবং ‘বিভ্রান্তিকর’ মন্তব্য করেছেন বলেও অভিযোগ করেছেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের ওই সন্ন্যাসী। আইনি চিঠিতে আগামী চার দিনের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁর বক্তব্যের জন্য জবাব চাওয়া হয়েছে। চার দিনের মধ্যে জবাব না দিলে কার্তিক মহারাজ আইনি পদক্ষেপ করবেন বলেও জানানো হয় ওই চিঠিতে।
এর পর মুখ্যমন্ত্রীর ওই মন্তব্যের জন্য কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার আর্জিও জানানো হয়েছে।