কমিশনে অভিযোগ বিজেপির। —নিজস্ব চিত্র।
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশকে অমান্য করে জেলাশাসকের দফতরের অস্থায়ী কর্মীদের ভোটগণনার কাজে নিয়োগ করা হচ্ছে! এমনই অভিযোগ তুলে কমিশনের দ্বারস্থ হলেন মালদহ উত্তরের বিজেপি প্রার্থী খগেন মুর্মু এবং মালদহ দক্ষিণের বিজেপি প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র।
দুই বিজেপির প্রার্থীর বক্তব্য, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী, ভোটগণনার কাজে সরকারি দফতরের অস্থায়ী কর্মীদের নিয়োগ করা যায় না। কিন্তু মালদহে জেলাপ্রশাসন সেই অস্থায়ী কর্মীদেরই নিয়োগ করছে ভোট গণনাকেন্দ্রের বিভিন্ন কাজে। এতে ভোটগণনা বিঘ্নিত হতে পারে বলে আশঙ্কা খগেন ও শ্রীরূপার। তাঁদের দাবি, যে সব অস্থায়ী কর্মীকে নিয়োগ করা হয়েছে, তাঁদের চিহ্নিত করে সরাতে হবে। যে সরকারি আধিকারিক তাঁদের নিয়োগ করেছেন, তাঁকে গণনা প্রক্রিয়া থেকে সরানো হোক। বিনা অনুমতিতে যাতে কেউ গণনাকেন্দ্রে প্রবেশ করতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে।
কমিশনকে দেওয়া অভিযোগপত্রের সঙ্গে কয়েক জনের নামের তালিকাও দিয়েছেন শ্রীরূপা। তাঁর দাবি, তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁরা সরকারি দফতরের অস্থায়ী কর্মী। তাঁদের গণনাকেন্দ্রের কাজে নিয়োগ করা হয়েছে। সেই তালিকায় থাকা ইমরান হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। তিন বলেন, ‘‘গণনাকেন্দ্রে ডিউটি পড়েছে আমার। ডেটা অপারেটরের কাজ করতে বলা হয়েছে আমাকে।’’ তালিকায় থাকা শুভঙ্কর কুন্ডুও একই কথা বলেন। তাঁর কথায়, ‘‘ডিউটি পড়েছে। পর্যবেক্ষকের সঙ্গেও কাজ করেছি।’’
মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া অবশ্য বলেন, ‘‘গণনাকেন্দ্রে কোনও অস্থায়ী থাকছে না। পুরনো নির্দেশ নিয়ে কমিশনে অভিযোগ জানানো হয়েছে। যাদের কথা বলা হচ্ছে, তাদের চা-জল আনার জন্য নিয়োগ করা হয়েছিল।’’
ঘটনাচক্রে, সোমবারই কলকাতা হাই কোর্ট কমিশনকে বলেছে, গণনাকেন্দ্রের টেবিলে অঙ্গনওয়ারি কর্মী, পার্শ্বশিক্ষক, সিভিক ভলান্টিয়ার বা ওই জাতীয় কোনও অস্থায়ী কর্মীকে রাখা যাবে না। নির্বাচন কমিশনের যে নির্দেশিকা রয়েছে, তা মেনে গণনাকেন্দ্রে কর্মী নিয়োগ করতে হবে। হাওড়া ও বালি পুরসভার চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের গণনার কাজে নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে মামলা দায়ের হয়। মামলাটি করেছিলেন হাওড়ার বিজেপি প্রার্থী রথীন চক্রবর্তী। মামলাকারীর আইনজীবী সওয়াল করেন, গণনাকেন্দ্রের ডিসিআরসির পুরো দায়িত্বে অস্থায়ী কর্মীদের নিয়োগ করা হয়েছে। ওই মামলায় কমিশনের আইনজীবী জানান, গণনার টেবিলে একজনও অস্থায়ী কর্মী থাকবেন না। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে নির্দেশিকা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেই নির্দেশ যাতে পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়, তা নিশ্চিত করা হবে।