Tamluk TMC Worker Death

মহিষাদলে খুন তৃণমূল কর্মী, ময়নায় আহত আরও এক, কাঠগড়ায় বিজেপি, ভোটের আগে রক্ত ঝরল তমলুকে

পুলিশ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই সন্দেহজনক দু’জনকে আটক করা হয়েছে। এই ঘটনায় কে বা কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ভোটের দিন থমথমে এলাকা। মোতায়েন রয়েছে পুলিশবাহিনী।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২৪ ০৮:০১
Share:

নিহত তৃণমূল কর্মী শেখ মইবুল। —নিজস্ব ছবি।

আবারও রক্ত ঝরল ভোটের বাংলায়। শনিবার ষষ্ঠ দফা ভোটের আগে তৃণমূল কর্মীকে হত্যার ঘটনা ঘটল। তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের মহিষাদলে ওই তৃণমূল কর্মীকে ধারালো অস্ত্রের কোপ মেরে খুন করার অভিযোগ উঠল। অন্য দিকে, এই লোকসভা কেন্দ্রের ময়নায় আরও এক তৃণমূল কর্মীর মাথায় ধারালো অস্ত্রের কোপ মারার অভিযোগ উঠেছে। তাঁকে গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। দু’ক্ষেত্রেই অভিযোগের তির বিজেপির দিকে। তবে বিজেপি সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বিজেপির পাল্টা দাবি, তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের জেরেই এই খুন।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, মহিষাদলের নিহত তৃণমূল কর্মীর নাম শেখ মইবুল (৪২)। ঘটনাটি ঘটেছে, মহিষাদলের ধামাইতনগর এলাকায়। শুক্রবার সন্ধ্যায় বাইকে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন মইবুল। সে সময় রজনীগঞ্জ বাজার এলাকায় তাঁর সঙ্গে কয়েক জনের বচসা বাধে। কথা কাটাকাটি চলাকালীনই মইবুলের উপর হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রথমে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়। তার পর তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে যায় দুষ্কৃতীরা।

জানা গিয়েছে, মইবুল বেতকুন্ডু গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন তৃণমূল সদস্য ছিলেন। স্থানীয়েরা প্রথমে মইবুলকে খুঁজে পাননি। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করতে গিয়ে তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তার পাশ থেকে উদ্ধার করা হয়। এর পরেই মইবুলকে প্রথমে মহিষাদল ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে তাম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনার পরেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। শাসকদলের দাবি, ভোটের মুখে তৃণমূলকে সন্ত্রস্ত করতেই মইবুলকে রাস্তা থেকে খুন করা হল। বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে দাবি পুলিশের।

Advertisement

মহিষাদলের তৃণমূল বিধায়ক তিলককুমার চক্রবর্তী জানান, ‘‘গতকাল বুথ এজেন্টদের ফর্ম ফিলআপ চলছিল। কাজ শেষে ধর্মপুরের মহিলা পঞ্চায়েতকে বাড়ি ছাড়তে তিন জন গিয়েছিল। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে মান্না পাড়ায় ওদের রাস্তা আটকে বিজেপি হামলা চালায়। দু’জন পালিয়ে গেলেও মইবুলের মাথায় চপার নিয়ে কোপ বসিয়ে ফালা ফালা করে দিয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ওই এলাকায় আগে কোনও দিন এমন পরিবেশ ছিল না। এ বার বিজেপি ওই পঞ্চায়েত দখল করার পর প্রথম বার এমন নৃশংস হামলার ঘটনা ঘটেছে। আমরা আইনের উপর আস্থা রাখছি। শান্তিপূর্ণ ভোট শেষ করাই এখন আমাদের উদ্দেশ্য।’’

যদিও পদ্মশিবিরের দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই। তাদের মতে, এই মুহূর্তে এলাকায় তৃণমূলের একাধিক গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। নিজেদের মধ্যেই ক্ষমতার দখল নিয়ে ক্রমাগত লড়াই চলতে থাকে। সেই ঝামেলা থেকেই মইবুলকে খুন করা হয়েছে। স্থানীয় বিজেপি নেতা প্রদীপ বিজলি বলেন, ‘‘আমরা কেন এমন ঘটনা ঘটাব? তৃণমূল নিজেরাই নিজেদের মধ্যে মারামারি করেছে। সেখান থেকেই খুনের ঘটনা ঘটেছে।’’ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশবাহিনী। পুলিশ সূত্রে খবর, এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই সন্দেহজনক দু’জনকে আটক করা হয়েছে। এই মুহূর্তে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

তৃণমূল সূত্রে আরও খবর, শুক্রবার রাতে ময়নার ইজমালিচক এলাকায় এক তৃণমূল কর্মীর মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ মারা হয়েছে। দ্রুত তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই প্রাথমিক চিকিৎসার পর ওই ব্যক্তিকে তাম্রলিপ্ত জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। উল্লেখ্য, এই নিয়ে ষষ্ঠ দফা ভোটের আগে পূর্ব মেদিনীপুরে দু’জন খুন হলেন। গত বুধবার রাতে বিজেপির মহিলা কর্মী রথিবালা আড়িকে কুপিয়ে খুনের ঘটনা ঘটেছে। যা নিয়ে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement