মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার করেছে। বেলায় বাইরে বেরোলে গরম হাওয়ার দাপটে হাত-মুখ যেন ঝলসে যাচ্ছে। তার মধ্যেই আগামিকাল, রবিবার পুরুলিয়ার লধুড়কায় ও সোমবার বাঁকুড়ার রাইপুরে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে জনসভা করতে আসছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই কর্মীদের কষ্ট লাঘব করতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জলের প্যাকেট রাখার পাশাপাশি শসা খাওয়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। নিরাপত্তায় থাকা পুলিশ কর্মীদের জন্যও নেওয়া হচ্ছে বেশ কিছু ব্যবস্থা।
পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া দুই জেলার তিনটি লোকসভা আসন বিজেপির দখলে। এ বার তাই ওই আসনগুলি দখলে নিয়ে আসা রাজ্যের শাসকদলের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। যদিও দুই জেলায় ভোট রয়েছে ২৫ মে, তা-ও প্রচারে খামতি রাখতে চাইছে না তৃণমূল। দলনেত্রীর সভায় দু’জেলা তৃণমূল নেতৃত্বই প্রচুর পরিমাণে কর্মী-সমর্থকদের জড়ো করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু তীব্র গরম মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, দলনেত্রীর সভা করার কথা ভরদুপুরে। তখন মাথার উপরে গনগনে সূর্য। এই রোদ গরমে নির্বিঘ্নে সভা করা এবং মাঠ ভরানো যেন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে শাসক দলের কাছে।
তবে আশা জাগিয়ে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, রবিবার থেকে ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু অনেকের মত, যা গরম পড়েছে, বৃষ্টি না নামা পর্যন্ত ভরসা করা যাচ্ছে না।
পুরুলিয়ার জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর এই সভায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হবে বলে আমরা আশা করছি। তীব্র গরমের জন্য সভায় আসা কর্মী-সমর্থকদের কিছুটা অসুবিধা হবে ঠিকই। তবে আমরা চেষ্টা করছি সভাস্থলের ছাউনি বড় করতে। তাতে সমস্ত মানুষই ছাউনির তলায় আসতে পারবেন। সেই সঙ্গে সভায় আসা সবাইকে টুপি দেওয়ার ভাবনা রয়েছে আমাদের।’’
সৌমেন জানান, সভায় আসা লোকজনের জন্য তাঁরা জলের ব্যবস্থা রাখছেন। ঠান্ডা ফল হিসেবে শসাও খাওয়ানো হবে। সে জন্য দু’পাশে দু’টি বড় স্টল থেকে শসা কেটে বিলি করা হবে।
বাঁকুড়ায় মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থলে যাওয়ার পথে কর্মীদের রোদ থেকে মাথা বাঁচাতে ছাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল। ইতিমধ্যেই কয়েকটি এলাকায় ছাতা বিলি শুরু হয়েছে। তৃণমূল সূত্রে দাবি, প্রায় পাঁচ হাজার ছাতা কর্মীদের মধ্যে বিলি করা হচ্ছে।
বাঁকুড়া কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রায় ৫০ হাজার মানুষের জমায়েতের পরিকল্পনা করা হয়েছে। সে জন্য সভাস্থলে মাথার উপর বড় ছাউনি থাকবে। তবে কর্মীরা অনেক দূর থেকে হেঁটে আসবেন। চড়া রোদে তাঁদের কষ্ট কমাতে ছাতা বিলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’
দল সূত্রের খবর, সভাস্থলের বিভিন্ন জায়গায় জলের গাড়ি রাখা হচ্ছে। এ ছাড়া ফুচকা-সহ নানা ফাস্টফুডের স্টল দেওয়ারও ভাবনা রয়েছে বলে জানান অরূপ।
সভাস্থল ও আশপাশে নিরপত্তায় থাকা পুলিশ কর্মীদেরও গরমে কাহিল অবস্থা হবে। তাঁদের জন্যও বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, পুরুলিয়ায় সভাস্থলে মোতায়েন থাকা পুলিশ কর্মীদের জন্য বেশ কয়েক হাজার জলের পাউচ, ‘ওআরএস’ এবং বেশ কয়েকটি বড় ছাতার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বাঁকুড়া জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘রাইপুরের সভায় পুলিশ কর্মীদের জন্য পর্যাপ্ত ‘ওআরএস’ ও জলের ব্যবস্থা করা হবে।’’
সভাস্থলে অ্যাম্বুল্যান্স ও মেডিক্যাল টিম থাকবে বলে জানিয়েছেন পুরুলিয়ার জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক অশোক বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘জেলাশাসকের কাছ থেকে যেমন নির্দেশ আসবে, প্রোটোকল মেনে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’