(বাঁ দিকে) রাহুল গান্ধী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও জোট নয়, পশ্চিমবঙ্গ, মেঘালয় এবং অসমে লোকসভা নির্বাচনে একা লড়বে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। তৃণমূলের শীর্ষ সূত্রে আজ এ কথা স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, দল নির্বাচনী লড়াইয়ের মেজাজে চলে গিয়েছে। যে দিন নির্বাচন কমিশন ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে, তার ১২ ঘণ্টার মধ্যে তৃণমূল সাধারণত নিজেদের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে থাকে। সম্ভবত এ বারও তার ব্যতিক্রম হবে না। একই সঙ্গে, জানিয়ে দেওয়া হয়েছে কোথাও কোনও আসন ছাড়া হবে না কংগ্রেসের জন্য।
কংগ্রেসের তরফে গত সপ্তাহ পর্যন্ত তৃণমূলের সঙ্গে আসন সমঝোতার আশা জিইয়ে রাখা হয়েছিল। বার বার বার্তা দেওয়া হচ্ছিল, কথা চলছে, জটের সমাধানসূত্র ঠিকই পাওয়া যাবে। সম্প্রতি কংগ্রেসও জানিয়ে দিয়েছে, তৃণমূলের সঙ্গে বাংলায় আসন রফা নিয়ে আর কোনও কথা হচ্ছে না। তবে এ বিষয়ে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ আজ বলেছেন, ‘‘আমরা এখনও আশাবাদী, মধ্যবর্তী কোনও রাস্তা বার হবে। আমাদের কথাবার্তা এখন স্থগিত রয়েছে। কখনও কথাবার্তা চলে, কখনও স্থগিত থাকে।’’
জয়রাম যা-ই বলুন, কংগ্রেস-তৃণমূল জোট নিয়ে আশার আলো দেখতে পাচ্ছে না রাজনৈতিক শিবির। তাদের বক্তব্য, বিজেপিকে রুখতে দিল্লিতে ‘হাত’ ধরে ফেলল আম আদমি পার্টি। উত্তরপ্রদেশে মমতার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব ১৭টি আসন ছাড়লেন কংগ্রেসকে। কিন্তু বাংলায় জোটের প্রয়াস কার্যত ‘ভেস্তে’ই গেল।
আসন সমঝোতা না হওয়ার জন্য তৃণমূল অবশ্য কাঠগড়ায় তুলছে এই শতাব্দী-প্রাচীন দলটিকেই। বাংলার শাসকদলের বক্তব্য, কংগ্রেসের জোট গড়ার মানসিকতাই ছিল না। তারা রাজ্যের পরিস্থিতিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চোখে না দেখে অধীর চৌধুরীর চোখে দেখেছে। তা ছাড়া তৃণমূলের দাবি, ভোট-ভিত্তি না থাকা সত্ত্বেও শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয়, মেঘালয়ের তুরা আসনটিও চেয়েছিল কংগ্রেস। এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘তুরায় আমাদের প্রাপ্ত ভোট ২৮ শতাংশ, আর কংগ্রেসের ৮ শতাংশ। কোন যুক্তিতে তারা ওই আসনটি দাবি করে! আমরা ওখানে একাই লড়ব, প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।’’
তৃণমূলের এক নেতা জানিয়েছেন, অসমের ২ থেকে ৫টি আসনে লড়াই করবেন তাঁরা। কংগ্রেসকে এ ব্যাপারে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগেই তৃণমূল নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেছিলেন, “কংগ্রেসকে পশ্চিমবঙ্গে দু’টির বেশি আসন দেওয়ার প্রশ্ন নেই। কারণ দূরবিন দিয়ে খুঁজলেও কংগ্রেস জিততে পারে, এমন তৃতীয় আসন মিলবে না।” কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য ছিল, দর কষাকষির সময়ে চাপ বাড়াতে এমন কথাবার্তা হয়েই থাকে। তৃণমূল সূত্রে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল, মুর্শিদাবাদ, মালদহের বাইরে কংগ্রেসের ভোটের হার সব জেলায় ৭ শতাংশের কম। এ নিয়ে জয়রামের বক্তব্য ছিল, কে কী বলছে, তা দেখার দরকার নেই। তৃণমূল নেত্রী বার বার বিজেপি-বিরোধী মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’য় থাকার কথাই বলছেন।