(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বপন মজুমদার (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগে এ বার এক বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হতে চলেছে তৃণমূল। শনিবার অশোকনগরে এক প্রচার কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে বারাসাত লোকসভার বিজেপি প্রার্থী স্বপন মজুমদার আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রীকে। সন্দেশখালিতে মহিলাদের উপর নির্যাতন এবং নিয়োগ দুর্নীতির জন্য সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে দায়ী করেন তিনি। স্বপন বলেন, ‘‘সন্দেশখালিতে মহিলাদের উপর নির্যাতন এবং নিয়োগ দুর্নীতিতে যে সব স্কুলশিক্ষকের চাকরি গিয়েছে, তার জন্য দায়ী মুখ্যমন্ত্রী। তাই তাঁকে শাস্তি দিতে হবে।’’ তৃণমূলের অভিযোগ, এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী প্রসঙ্গে ছাপার অযোগ্য ভাষায় মন্তব্য করেন বিজেপি প্রার্থী। বিষয়টি জানার পরেই অশোকনগর বিধানসভা এলাকা তৃণমূলের পক্ষ থেকে জেলার নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। জানানো হয়, বিজেপি প্রার্থী মুখ্যমন্ত্রী প্রসঙ্গে অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হোক।
জেলা নেতৃত্ব মারফত খবর যায় তৃণমূল ভবনে। সেখানেই স্বপনের বক্তব্যের পর্যালোচনার পর নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানোর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। সম্ভবত রবিবার তৃণমূলের তরফে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হবে। তবে স্বপনের বিরুদ্ধে বেলাগাম মন্তব্যের অভিযোগ এই প্রথম নয়। এর আগেও একাধিক বার তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূল নেতৃত্বের প্রতি নানা রকম অবমাননাকর মন্তব্যের অভিযোগ উঠেছে। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন স্বপন। সেই থেকেই মতুয়া সম্প্রদায়ের এই বিধায়ক রাজ্য বিজেপির অন্যতম নেতা হিসেবে পরিচিত। কখনও তৃণমূল নেতাদের হাত-পা ভেঙে দেওয়ার নিদান দেওয়া থেকে শুরু করে, জুতোপেটা করার মতো মন্তব্য করে বার বার বিতর্ক বাড়িয়েছেন। বারাসাত লোকসভায় মতুয়া ভোটের কথা মাথায় রেখেই তাঁকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। আর সেই ভোটের প্রচারে নেমে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে বিতর্ক বাধিয়েছেন স্বপন।
তবে স্বপনের বিরুদ্ধে তৃণমূলের কমিশনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, তৃণমূল যে কোনও পদক্ষেপ করলে তার জবাব দেওয়ার ক্ষমতা রাখে বিজেপি। আগে বারাসাতে প্রার্থীর বিরুদ্ধে তৃণমূল পদক্ষেপ করুক, তার পরেই তাদের যোগ্য জবাব দেওয়া হবে। আপাতত স্বপনের বিরুদ্ধে তৃণমূলের অভিযোগের পর কমিশন কী সিদ্ধান্ত নেয়, সে দিকেই তাকিয়ে বিজেপি।