Lok Sabha Election 2024

এলাকা অজানা, সুরেন্দ্রের মন্তব্যে তোপ তৃণমূলের

সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সুরেন্দ্র দাবি করেন, ‘ভূমিপুত্র’ হিসেবে তিনি আসানসোল থেকে নির্বাচন লড়ছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল, রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:০৮
Share:

প্রচার শুরু করার আগে আসানসোলের বিজেপি প্রার্থী সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া ঘাঘরবুড়ি মন্দিরে পুজো দিলেন। ছবি: পাপন চৌধুরী।

বিজেপি আসানসোল কেন্দ্রে তাঁকে প্রার্থী করার পরে সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার প্রতিক্রিয়া ছিল, নিজের ‘জন্মভূমিতে’ এলে যাযাবরের যেমন অনুভূতি হয়, তাঁরও তেমনই হচ্ছে। শুক্রবার প্রচারের প্রথম দিন সেই সুরেন্দ্রই জানালেন, এলাকা সম্পর্কে তাঁর এখনও বিশেষ
জানা নেই।

Advertisement

দুপুরে আসানসোলের ঘাঘরবুড়ি মন্দিরে পুজো দিতে আসেন সুরেন্দ্র। কর্মীদের নির্দেশ দেন, রাজনৈতিক স্লোগান যেন না দেওয়া হয়। পুজো শেষে তাঁদের খিচুড়ি পরিবেশন করেন। নিজেও খিচুড়ি খান। পরে দলের জেলা কার্যালয়ে নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন সুরেন্দ্র।

সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সুরেন্দ্র দাবি করেন, ‘ভূমিপুত্র’ হিসেবে তিনি আসানসোল থেকে নির্বাচন লড়ছেন। বাম আমলে জে কে নগর অ্যালুমিনিয়াম কারখানা বন্ধ হওয়ার পরে তিনি সপরিবার বিহারে চলে গিয়েছিলেন। প্রচারে কোন বিষয়কে হাতিয়ার করতে চান? সুরেন্দ্র বলেন, “এলাকা সম্পর্কে এখনও বিশেষ
কিছু জানা নেই। আমাকে আরও ঘুরতে হবে। মানুষের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের অসুবিধা ও বঞ্চনার কথা শুনতে হবে। তার পরেই কিছু বলতে পারব।” তৃণমূল জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর কটাক্ষ, “উনি ভূমিপুত্র হয়েও আসানসোলের খবর রাখেননি। সাধারণ ভোটারেরা এর জবাব দেবেন।” তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসনের বক্তব্য, “যিনি এলাকায় বাস করেন, তিনিই ভূমিপুত্র হন। উনি এখানে বাস করেন না। তা ছাড়া, লড়াই কখনও ভূমিপুত্র পরিচয়ে হয় না। হয় নীতি-আদর্শের ভিত্তিতে।”

Advertisement

১৯৯৮-তে লোকসভা নির্বাচনে আসানসোল কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তৃতীয় হন সুরেন্দ্র। পরাজয়ের কারণ হিসেবে তাঁর দাবি, ‘বিভাজনের’ রাজনীতির কারণে তিনি হেরেছিলেন। তবে এ বার সে সম্ভাবনা নেই। এ দিন সকালে সুরেন্দ্রের প্রচার শুরু হয় অন্ডাল মোড় থেকে। পরে রানিগঞ্জের পঞ্জাবি মহল, জামুড়িয়ার চাঁদামোড়, আসানসোলের কালীপাহাড়ি হয়ে তিনি পৌঁছন ঘাঘরবুড়ি মন্দিরে।

আসানসোলে বার্ন স্ট্যান্ডার্ড, হিন্দুস্তান কেব্‌লস কারখানা বন্ধ হয়েছে। একাধিক কয়লা খনি বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই বিষয়গুলি তুলে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিরোধীরা। সুরেন্দ্রের বক্তব্য, “আমার কেন্দ্রে সাতটি বিধানসভা এলাকা আছে। প্রত্যেক এলাকায় গিয়ে বিস্তারিত জানতে হবে। তবেই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব।”

বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, এ বার এই কেন্দ্রে প্রার্থিপদের অন্যতম দাবিদার ছিলেন আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারিও। পরে তিনি ‘দৌড়’ থেকে ছিটকে
যান। তখন দলে ‘জিতেন্দ্র-বিরোধী’ বলে পরিচিত নেতা-কর্মীদের উচ্ছ্বাস করতে দেখা যায়। যদিও বুধবার সুরেন্দ্রের সমর্থনে জিতেন্দ্রকে দেওয়াল লিখতে দেখা গিয়েছিল। এ দিন
তাঁকে দলীয় প্রার্থীর সঙ্গে দেখা যায়নি। এটা কি ‘বিভাজনের ইঙ্গিত’। সুরেন্দ্রের দাবি, “জিতেন্দ্র আমার ছোট ভাইয়ের
মতো। আমাদের সম্পর্ক প্রায় ৫০ বছরের। ওর সঙ্গে কথা হয়েছে। ও প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করেছিল। এটা অপরাধ নয়।” জিতেন্দ্রের প্রতিক্রিয়া, “প্রার্থীর সমর্থনে অন্যত্র প্রচারে যাওয়ার বিষয়টি আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল। তা-ই এ দিন জেলা কার্যালয়ে প্রার্থীর সঙ্গে থাকতে পারিনি।”

এ দিকে, আসানসোলের রবীন্দ্রভাবনে তৃণমূলের হিন্দি প্রকোষ্ঠের কর্মী সম্মেলনে এ দিন যোগ দেন আসানসোলের তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিন্‌হা। লড়াই কতটা কঠিন? তৃণমূল প্রার্থীর উত্তর, “আমি পাঁচ বারের সাংসদ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও ছিলাম। প্রতিপক্ষ প্রার্থীকে নিয়ে মন্তব্য
করতে চাই না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement