এই সেই রিপোর্ট কার্ড। নিজস্ব চিত্র ।
গত লোকসভা নির্বাচনে শহর নবদ্বীপে ১২ হাজারের বেশি ভোট ‘লিড’ পেয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকার। অথচ পাঁচ বছরের মাথায় রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ নিজের কাজের যে খতিয়ান হিসেবে যে রিপোর্ট কার্ড সম্প্রতি প্রকাশ করেছেন, তাতে নবদ্বীপের উল্লেখ নেই। নির্বাচনের আগে সেই ‘রিপোর্ট কার্ড’কে হাতিয়ার করেছে তৃণমূল। তাদের অভিযোগ, বিজেপি সাংসদ কার্ড ছাপিয়ে স্বীকার করে নিচ্ছেন, নবদ্বীপের জন্য কোনও কাজই করেননি।
সম্প্রতি জগন্নাথ দ্বিতীয় বার প্রার্থী হওয়ার পর নিজের কাজের খতিয়ান হিসেবে রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করেছেন। কার্ডে গেদে, রানাঘাট, শান্তিপুর, কল্যাণী, হাঁসখালি, পায়রাডাঙা-সহ বিভিন্ন জায়গায় তিনি কোন কাজে কত টাকা উন্নয়নে খরচ করেছেন তা উল্লেখ করেছেন। বিরোধীদের দাবি, ওই রিপোর্ট কার্ডে নবদ্বীপের নাম নেই। অর্থাৎ নবদ্বীপের জন্য তিনি যে কিছুই করেননি তা প্রকারান্তরে স্বীকার করে নিচ্ছেন।
নবদ্বীপের পুরপ্রধান তৃণমূলের বিমানকৃষ্ণ সাহা বলেন, “এ কথা আমরা বলছি না। সাংসদ নিজেই রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করে স্বীকার করেছেন তিনি নবদ্বীপের জন্য কিছুই করেননি।’’ তাঁর অভিযোগ, “রাজ্যের প্রথম হেরিটেজ শহর নবদ্বীপ, চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মস্থান। সেই পুণ্যভূমির জন্য সাংসদ কিছুই করলেন না পাঁচ বছরে। এটা তিনি নিজেই বলেছেন। মানুষ সে কথা মনে রেখেই ভোট দিতে যাবেন এ বার।”
জগন্নাথ সরকার অবশ্য বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘নবদ্বীপে প্রতিটি গ্রামে আলোর ব্যবস্থা করেছি। একটি গ্রামীণ হাসপাতালে করোনা কালে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর দিয়েছি। কেন্দ্র সরকারকে বলে ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি ১০০ শয্যার হাসপাতালের ব্যবস্থা করেছি। অমৃত ভারত প্রকল্পে নবদ্বীপ স্টেশন সেজে উঠছে। গত পাঁচ বছরে যে পরিমাণ কাজ হয়েছে তাতে বিরোধীদের কিছু বলার নেই। তাই এ সব মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে।’’
নবদ্বীপ ব্লক তৃণমূল সভাপতি কল্লোল কর পাল্টা বলেন, “হাতে গোনা কয়েকটি বুথে বাল্ব লাগানো হয়েছে। আর অমৃত ভারত প্রকল্পের সঙ্গে সাংসদ কোটার কি সম্পর্ক? ভারতীয় রেলের কি এতই দুর্দশা যে সাংসদের টাকায় স্টেশন সাজাতে হচ্ছে? বিপাকে পড়ে ভুল বকছেন উনি।”
সিপিএমের স্বরূপগঞ্জের শাখা সম্পাদক সুদীপ দেবনাথ বলেন, “নবদ্বীপের গ্রামীণ মানুষ প্রতারিত হয়েছেন তাঁকে ভোট দিয়ে। রেল নিয়ে উনি অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সে সব মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। কিছুই করেননি।এ বার মানুষ তৈরি আছেন।” নবদ্বীপ শহর যুব তৃণমূল সভাপতি সুজিত সাহা বলেন, “উনি এত কিছু করলেন অথচ রিপোর্ট কার্ডে তা লিখলেন না কেন?’’