মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
মহড়া প্রায় শেষ। এ বারে যুদ্ধে নামার পালা। তার আগে, শুক্রবার কোচবিহারের দিনহাটার সংহতি ময়দানে সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার চালসা থেকে বেরিয়ে কোচবিহারের দিনহাটা ও আলিপুরদুয়ারের নিমতির দু’টি জনসভায় যোগ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। শনিবার সেখান থেকেই চলে যাবেন ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির সমাবেশে। নববর্ষে কলকাতায় এক দিনের জন্য গিয়ে ফের ১৫ এপ্রিল থেকে চালসার ওই রিসর্টেই থাকার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। দিনহাটা মহকুমার দু’টি বিধানসভা দিনহাটা ও সিতাই। দু’টিই তৃণমূলের দখলে রয়েছে। সেখানে এসে কী বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী, সে দিকে তাকিয়ে রয়েছেন দলের কর্মী-সমর্থকরা। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী উদয়ন গুহ দিনহাটার বিধায়ক। তিনি বলেন, “আমরা মুখ্যমন্ত্রীর বার্তার অপেক্ষায় রয়েছি।” সিতাইয়ের বিধায়ক জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়াকে এ বারে লোকসভার প্রার্থী করেছে তৃণমূল। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রীর বার্তার পরে আমাদের সমর্থন আরও বাড়বে।”
মুখ্যমন্ত্রী দিনহাটার সভা থেকে কী বার্তা দিতে পারেন?
দলীয় সূত্রে খবর, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মহকুমা দিনহাটা। বিএসএফের গুলিতে সীমান্তে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে সেখানে। স্বাভাবিক ভাবেই মুখ্যমন্ত্রী সীমান্তের মানুষের কথা ভেবে বিএসএফকে নিয়ে কোনও বার্তা দিতে পারেন। এ ছাড়া দিনহাটায় উদ্বাস্তু মানুষের বসবাস রয়েছে। যাঁদের অনেকেই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে চিন্তিত। দিনহাটাতে তিনি ওই বিষয়ে বার্তা দেবেন বলেই মনে করা হচ্ছে। বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিকের বাড়িও দিনহাটার ভেটাগুড়িতে। নিশীথ এক সময় যুব তৃণমূল নেতা ছিলেন। সেই সূত্রে তৃণমূলের বেশ কিছু নেতা-কর্মী সরাসরি নিশীথের হাত ধরে বিজেপি শিবিরে চলে গিয়েছেন। আবার একটি অংশ আড়ালে নিশীথের সঙ্গে সম্পর্ক রাখছেন বলেও তৃণমূলের অন্দরে গুঞ্জন রয়েছে। দিন কয়েক আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কোচবিহারে এসে উদয়ন এবং দিনহাটার আরেক তৃণমূল নেতা মীর হুমায়ুন কবীরকে সতর্ক করে যান। স্বাভাবিক ভাবেই তিনি সেই বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা দিতে পারেন। আক্রমণ শানাতে পারেন নিশীথের বিরুদ্ধেও। বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ বলেন, “দুর্নীতি ও সন্দেশখালি নিয়ে তৃণমূল সরকারের উপরে মানুষ ক্ষুব্ধ। মুখ্যমন্ত্রী তাই সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করতে মিথ্যে কথা বলে যাচ্ছেন। সিএএ নিয়ে তিনি বিভ্রান্তিকর কথা বলছেন। আমাদের প্রার্থী যত দিন তৃণমূলে ছিলেন তত দিন ভাল ছিলেন, যেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন সঙ্গে সঙ্গে তিনি খারাপ হয়ে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে।” দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১৫ এপ্রিল কোচবিহার রাসমেলার মাঠেও একটি সভা করবেন।