শীতলখুচিতে গুলিবিদ্ধ তৃণমূলের প্রধান অনিমেষ রায়। — নিজস্ব চিত্র।
কোচবিহারের শীতলখুচিতে আবার গুলি। রাতের অন্ধকারে গুলিবিদ্ধ তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান। কেউ বা কারা বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তাঁকে গুলি করে পালিয়ে যায়। তাঁর হাঁটুর উপরে গুলি লেগেছে। গুরুতর জখম অবস্থায় তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তৃণমূলের তরফে এই ঘটনায় বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলা হয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছে বিজেপি।
কোচবিহারের শীতলখুচি ব্লকের লালবাজারের পঞ্চায়েত প্রধান অনিমেষ রায়। বৃহস্পতিবার রাতে লালবাজার চৌপতিতে সাংগঠনিক মিটিং সেরে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। তখনই দুষ্কৃতীরা তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। প্রধানকে উদ্ধার করে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় শীতলখুচি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেখান থেকে কোচবিহারের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। আপাতত সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন।
কারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, তা এখনও চিহ্নিত করা যায়নি। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে শীতলখুচি থানার পুলিশ। শুক্রবার সকালে গুলিবিদ্ধ প্রধানকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন কোচবিহার জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি আব্দুল জলিল আহমেদ। তিনি হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে জানান, প্রধানের শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল। বিপদ কেটে গিয়েছে। তবে এই ঘটনার নেপথ্যে বিজেপির হাত থাকতে পারে বলে মনে করছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘উনি রাতে লালবাজার এলাকায় নিজের বাড়িতে ফিরছিলেন। রাতের অন্ধকারে বিজেপির মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরা ওঁকে গুলি করেছে। হাঁটুতে গুলি লেগেছে। এখন তিনি ভাল আছেন। যে বা যারা এই কাজ করেছে, সে বা তাদের খুঁজে বের করতে আমরা পুলিশের কাছে তদন্তের আবেদন জানাচ্ছি। আশা করছি, পুলিশ এটা দেখবে। আমরা এর একটা বিহিত চাই। ওই এলাকায় বিজেপির দুষ্কৃতী বেড়ে গিয়েছে। আমার মনে হয়, তারাই এই ঘটনায় জড়িত।’’
তৃণমূলের অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছে বিজেপি। দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বোস এ প্রসঙ্গে বলেন, “দলের জন্মলগ্ন থেকেই গোষ্ঠীকোন্দলে জর্জরিত তৃণমূল। এখানেও গোষ্ঠীকোন্দল। ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে মূলত এই ঝামেলাগুলি হয়। সেটা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ওরা বিজেপির উপর দোষ চাপাচ্ছে। কারণ, আমাদের সামনে তো ওরা বলছে না। পুলিশ তদন্ত করলেই আসল সত্যি বেরিয়ে আসবে। এখানে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। তার পর এই ধরনের ঘটনা কাম্য নয়। আমার মনে হচ্ছে, এমন আরও হবে। ওরা নিজেদের সামলাক। বিজেপির দিকে আঙুল না তোলাই ভাল।’’
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে শীতলখুচিতে গুলি চলেছিল। ভোটের দিন শীতলখুচির ১২৬ নম্বর বুথের বাইরে গুলিতে মৃত্যু হয় চার জন গ্রামবাসীর। বুথের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে তরজা চলে। সেই শীতলখুচিতেই আবার গুলি চলল। এ বার অবশ্য ভোট মিটে গিয়েছে সেখানে। কোচবিহার কেন্দ্রে ভোট ছিল গত ১৯ এপ্রিল, লোকসভার প্রথম দফাতেই।