সওকাত মোল্লা। — ফাইল চিত্র।
আইএসএফ-এর ‘ডেরা’ হিসেবে পরিচিত ভাঙড়ের উত্তর কাশীপুর থানার মাঝেরহাট গ্রামে জনসভা করল তৃণমূল। গত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে এই এলাকায় মিটিং-মিছিল করতে পারেনি শাসক দল। সোমবার সন্ধ্যায় সেখানেই সওকাত মোল্লার নেতৃত্বে সভা ও পরে মিছিল হয়। বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকীর দলীয় কার্যালয়ের পাশেই সভা করেন সওকাত। তৃণমূলের সভা উপলক্ষে পুলিশি নিরাপত্তায় ঘিরে ফেলা হয়েছিল গোটা এলাকা। সকাল থেকেই কলকাতা পুলিশের বিশেষ বাহিনী এলাকায় মোতায়েন ছিল।
সভায় আইএসএফকে আক্রমণ করে সওকাত বলেন, “লোকসভা নির্বাচনের পরে আইএসএফ যদি বাংলা থেকে উঠে না যায়, আমি আর রাজনীতির আঙিনায় পা রাখব না। সিপিএম, কংগ্রেস আর নিচ্ছে না। ওরা নেবে কী করে! একটা চার পয়সার খুদে বলে কি না ৪২টা আসনের মধ্যে ২২টা আসন চাই! ওদের ভাঙড় থেকে আমরা ৫০ হাজারের বেশি ভোটে হারাব। বুকের পাটা থাকলে এ বার একটা চকলেট ফাটিয়ে দেখাও।’’
সভা চলাকালীনই রাস্তার দু’পাশে জড়ো হয়ে থাকতে দেখা যায় আইএসএফের বহু লোকজনকে। সওকাতের বক্তব্যের পাল্টা চিৎকার করেন তাঁরা। অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ ছাড়া এলাকায় ঢোকার ক্ষমতা সওকাতের নেই। বাইরে থেকে লোক ভাড়া করে নিয়ে এসে সভা হচ্ছে বলেও অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, সভা শেষে বার হওয়ার সময়েও সওকাতকে উদ্দেশ করে কটূক্তি করতে শোনা যায় আইএসএফের লোকজনকে। সওকাত অবশ্য রাস্তার দু’দিকে আইএসএফের লোকজনের মাঝখান দিয়ে দলীয় কর্মীদের নিয়ে মিছিল করেন।
পরে নওসাদ বলেন, ‘‘বোমের রাজনীতি আইএসএফ করে না। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী সওকাতকে ‘বোমা বাঁধিস’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। ন্যাশনাল হিউম্যান রাইট কমিশন তাঁকে ‘নটোরিয়াস ক্রিমিনাল’ বলেছে। যদি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়, তা হলে গত বিধানসভা নির্বাচনের মতো এখানে তৃণমূল মুখ থুবড়ে পড়বে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমরা যদি শান্তিপূর্ণ রাজনীতি না করতাম, তা হলে ওরা মিটিং করতে পারত না।’’ ঘটনাচক্রে মঙ্গলবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট উল্লেখ করে জানান, সেখানে সওকাতের নাম আছে।
সওকাত পাল্টা বলেন, ‘‘আমরা নির্বাচন কমিশনের অনুমতি নিয়ে মিটিং করছি। কমিশন কত জন পুলিশ দেবে, সেটা তাদের ব্যাপার। আমরা কোনও পুলিশি নিরাপত্তা চাইনি। আগামী দিনেও আমরা মাঝেরহাট গ্রামে মিটিং-মিছিল করব।’’
সওকাতের জনসভার পরে মঙ্গলবার সকালে আইএসএফ ওই গ্রামে মিছিল করে। আগের দিনই জেল থেকে মুক্তি পেয়েছেন আইএসএফ নেতা আশরাফ মোল্লা। এ দিন তাঁর সমর্থনেই মিছিলের ডাক দেয় আইএসএফ। তবে অনুমতি না থাকায় মিছিল বন্ধ করে দেয় পুলিশ।