শ্যামনগরে খালি পড়ে তৃণমূলের চুনকাম করা দেওয়াল। —নিজস্ব চিত্র।
ভাঙড়ের জমি আন্দোলনের আঁতুরঘর পাওয়ার গ্রিড এলাকায় এখনও সে ভাবে দেওয়াল লেখা শুরু করতে পারেনি তৃণমূল। পোলেরহাট ২ পঞ্চায়েতের শ্যামনগর, নতুনহাট, খামারাইট, মাছিভাঙা, গাজিপুর, উড়িয়াপাড়া-সহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় শাসকদলের সাদা চুনকাম করা দেওয়াল খালি পড়ে রয়েছে। গত ২১ মার্চ চিনেপুকুরে এক কর্মী বৈঠকে ভাঙড়ের পর্যবেক্ষক সওকাত মোল্লা বলেছিলেন, আগামী দশ দিনের মধ্যে সমস্ত চুনকাম করা দেওয়ালে প্রার্থীর নাম লিখে ফেলতে হবে। সেই সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও অধিকাংশ দেওয়ালই লেখা হয়নি।
পোলেরহাট ২ পঞ্চায়েত জমি কমিটির দখলে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই পঞ্চায়েতের ২৪টি আসনের মধ্যে জমি কমিটি পায় ১৮টি আসন, আইএসএফ পায় ৫টি আসন, তৃণমূল পায় মাত্র একটি আসন। পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করে জমি কমিটি।
এক সময়ে ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের খাস তালুক হিসেবে পরিচিত ছিল এই পঞ্চায়েত। তবে এখন জমি কমিটির শক্ত ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে। তার উপরে আরাবুল এখন জেলে। শাসক দলের অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, ওই এলাকায় শাসক দলের হয়ে দেওয়াল লেখার মতো কর্মীই নেই! এমনিতেই এলাকায় অধিকাংশ দলীয় কার্যালয় বন্ধ। যদিও এর মধ্যে জমি কমিটির বেশ কিছু সদস্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছে। তারপরেও দেখা যাচ্ছে পঞ্চায়েত এলাকায় অধিকাংশ দেওয়াল লেখা বাকি। স্থানীয় এক তৃণমূল কর্মীর কথায়, “এলাকায় সাংগঠনিক ভাবে আমাদের দুর্বলতা রয়েছে। নানা সমস্যাও রয়েছে। কর্মীদের মনোবলের অভাব রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে আবার টাকার সমস্যা রয়েছে।” আরাবুলের ছেলে তথা জেলা পরিষদের সদস্য হাকিমুল ইসলাম বলেন, “ইতিমধ্যে আমরা বেশ কিছু দেওয়াল লেখার কাজ করেছি। আসলে রমজান মাস চলছে। সে কারণে কিছু সমস্যা হচ্ছে।”
এলাকায় বিরোধীদের দেওয়াল লেখাও অবশ্য সে ভাবে চোখে পড়েনি। গত লোকসভা নির্বাচনে জমি কমিটি বারাসাত কেন্দ্রে প্রার্থী দিয়েছিল। কিন্তু এ বার এখনও পর্যন্ত তারা কোনও প্রার্থী দেয়নি। জমি কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মির্জা হাসান জানান, যাদবপুর কেন্দ্রে তাঁরা এ বার প্রার্থী দেওয়ার কথা ভাবছেন। তবে বিষয়টি এখনও আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। তৃণমূলের দেওয়াল লিখতে না পারা প্রসঙ্গে মির্জার বক্তব্য, “এই এলাকায় ওদের কোনও সংগঠন নেই। মানুষ ওদের প্রতি বীতশ্রদ্ধ। সে কারণে দেওয়াল লেখার লোক নেই।”
তৃণমূল নেতা সওকাত মোল্লার অবশ্য দাবি, “ভাঙড়ের অধিকাংশ জায়গায় আমাদের দেওয়াল লেখার কাজ চলছে। রমজান মাস বলে শিল্পী পেতে সমস্যা হচ্ছে। আশা করছি, শীঘ্রই ওই এলাকায় আমাদের সমস্ত দেওয়াল লেখার কাজ শেষ হয়ে যাবে।”