মহুয়া মৈত্র। —ফাইল চিত্র।
তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপ বিরোধী আইন (পিএমএলএ)-এর আওতাধীন মামলা যুক্ত করেছে ইডি। এই প্রেক্ষিতে সংসদে ‘টাকা নিয়ে প্রশ্ন’ কাণ্ডে তৃণমূলের বহিষ্কৃত সাংসদ তথা কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করলেন সমাজমাধ্যমে। একটি প্রতিবেদনের শিরোনাম তুলে ধরে মহুয়ার কটাক্ষ, ‘‘খুলে হ্যায় বিজেপি কে দ্বার/ আ যাও নহি তো অব কে বার— তিহাড় (বিজেপির দরজা খোলা আছে। চলে এস, নইলে এই বার ঠিকানা তিহাড়)।’’ এই মুহূর্তে আম আদমি পার্টির প্রধান তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল তিহাড় জেলে বন্দি। আবগারি মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় সংস্থা। কয়েক মাস ধরে মেয়ের সঙ্গে তিহাড় জেলে রয়েছেন তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলও। মহুয়ার অভিযোগ, এটা বিজেপির প্রতিহিংসামূলক রাজনীতি ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ, যে বিরোধী নেতার বিরুদ্ধে ‘দুর্নীতি’র অভিযোগে তদন্ত শুরু করে কেন্দ্রীয় সংস্থা, যেই তিনি বিজেপিতে যোগ দেন, সেই তদন্তের গতিপ্রক্রিয়া শ্লথ হয়ে যায়। মহুয়া যে প্রতিবেদনের শিরোনাম এক্স হ্যান্ডল (সাবেক টুইটার) থেকে শেয়ার করেছেন, তাতে বিভিন্ন দুর্নীতি মামলায় বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং তার পর তাঁদের দলবদলের বিষয়ে তথ্য দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে রয়েছে, মোদী সরকারের জমানায় গত ২০১৪ সাল থেকে মোট ২৫ জন এমন বিরোধী নেতা রয়েছেন, যাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর তাঁরা দলবদল করেছেন। সেই তালিকায় আছেন কংগ্রেসের ১০ নেতা, এনসিপি এবং শিবসেনার চার জন, টিডিপির ২ নেতা, সমাজবাদী পার্টি এবং ওয়াইএসআরসিপি-র এক জন করে নেতা। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর ২৩ জনই দুর্নীতি মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। এ নিয়েই কটাক্ষ করেছেন মহুয়া।
ss
রবিবার মহুয়ার সমর্থনে কৃষ্ণনগরে সভা করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মহুয়াকে পাশে নিয়ে তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে দিয়ে ভোটের আগে বিরোধীদের হয়রানি করা হচ্ছে। মমতা তাঁর দলের নেতাদের উদ্দেশে এ-ও জানান, ভোটের সময় কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থার তলব এলে সাড়া দেওয়ার প্রয়োজন নেই। যেন তাঁরা বলে দেন যে, ভোটের পর দেখা যাবে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং তাঁর বাসভবন এবং অফিসে কেন্দ্রীয় সংস্থার হানা নিয়ে মহুয়া নিজে বলেন, তাঁকে গ্রেফতার করা হলে সেটা হবে ‘ব্যাজ অফ অনার’। এই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার তৃণমূলের ওই প্রার্থীর বিরুদ্ধে অর্থ তছরুপ প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ)-এ মামলা দায়ের করেছে ইডি।
গত সপ্তাহে মহুয়াকে দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়েছিল ইডি। কিন্তু মহুয়া জানিয়েছিলেন, তিনি ভোটের আগে তাঁর কেন্দ্র কৃষ্ণনগরে থাকবেন। তিনি ভোটের প্রচারে ব্যস্ত। তার মধ্যে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা নতুন করে সমন জারি করেছে মহুয়া এবং তাঁর পরিচিত দুবাইয়ের ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানিকে। ইডি সূত্রে খবর, দু’জনকেই বিদেশি মুদ্রা বিনিময় (ফেমা) আইন লঙ্ঘনের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।