কাকলি ঘোষদস্তিদার। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের হারের ব্যবধান কমল বিধাননগরে।
বারাসত লোকসভা কেন্দ্রের অধীন বিধাননগর বিধানসভায় জিততে না পারলেও প্রার্থী কাকলি ঘোষদস্তিদারের হারের ব্যবধান সাড়ে ১৮ হাজার থেকে নেমে এল প্রায় ১০ হাজারে। দলের তরফে জানানো হয়েছে, এ বার বিধাননগরে কাকলি হেরেছেন ১০ হাজার ১৮৫ ভোটে। অর্থাৎ, বিধাননগরে ভোট বাড়ল তৃণমূলের। এর পিছনে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের জাদুই কাজ করেছে বলে ব্যাখ্যা করেছেন বিধাননগর শহর তৃণমূলের সভাপতি তুলসী সিংহরায়। তিনি জানান, মূল সল্টলেকের চেয়েও ভোট উজাড় করে এসেছে সল্টলেকের সংযুক্ত এলাকাগুলি থেকে। পোস্টাল ও সার্ভিস ব্যালট ছাড়া ওই সংখ্যা বলে জানানো হয়েছে দলের তরফে।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে সাড়ে ১৮ হাজার ভোটে বিধাননগর থেকে হেরেছিলেন কাকলি। তার পরে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মন্ত্রী সুজিত বসু বিধাননগরে ৭৯৯৭ ভোটে জিতেছিলেন। শাসকদলের অন্দরের ব্যখ্যা, কাকলির হারের ব্যবধান পেরিয়ে সুজিত ৭৯৯৭টি ভোট তৃণমূলের দিকে এনেছিলেন। সেই ভোট ধরে রাখা গিয়েছে লোকসভা নির্বাচনেও। যদিও হারের ব্যবধান আরও কমবে, এমনটাই আশা করেছিলেন বিধাননগরের নেতৃত্ব। কিন্তু, শহর সল্টলেকের অনেক জায়গা থেকে আশানুরূপ ভোট এ বারেও আসেনি বলে খবর। এমনকি, বিধাননগর পুরসভার দুই পুরকর্তার ওয়ার্ডেও হার হয়েছে কাকলির। সেই হারের কারণ আগামী দিনে খতিয়ে দেখা হবে বলেই জানিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।
বরাবরই অবাঙালি ভোট শাসক পক্ষের বিরুদ্ধে যায় বিধাননগরে। সেই ভোট নিজেদের দিকে ঘোরাতে এ বার লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রার্থী কাকলি ঘোষদস্তিদারকে নিয়ে সল্টলেকে রোড-শো করেছিলেন খোদ দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ভোট কতটা শেষ পর্যন্ত ফিরেছে, তার হিসাবও করা হবে বলে জানান বিধাননগরের তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও এক নেতার কথায়, ‘‘এ বার শতাংশের হারের নিরিখে অবাঙালি ভোটার
বেশি ছিলেন। সেই ভোট কতটা আমাদের দিকে এসেছে, সেটা হিসেব করে দেখা হবে।’’ তবে অবাঙালি ভোটের আশায় না থেকে পরিপূরক হিসাবে বাঙালি ভোট এবং লক্ষ্মীর ভান্ডারকে সামনে রেখে নিম্নবিত্ত এলাকাগুলিতে প্রচার করেছিল বিধাননগর তৃণমূল।
নেতারা জানান, দত্তাবাদ, সুকান্তনগর, নাওভাঙা, কুলিপাড়ার মতো সল্টলেকের বিভিন্ন সংযুক্ত এলাকা থেকে ভাল পরিমাণে ভোট এসেছে। কারণ, ওই সব জায়গায় নিম্নবিত্ত মানুষের বসবাস বেশি। লক্ষ্মীর ভান্ডারের ম্যাজিক রাজ্যের অন্যান্য জায়গার মতো বিধাননগরেও কাজ করায় গত লোকসভা ভোটের তুলনায় হারের ব্যবধান কমানো গিয়েছে এ বার।
সূত্রের খবর, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে কাকলি দীর্ঘদিন সল্টলেকে পা রাখেননি। গত বছর থেকে অবশ্য তিনি বিভিন্ন ব্লকের সমস্যা নিয়ে সরাসরি সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলা শুরু করেন।
কাকলির কথায়, ‘‘বিধাননগরে সংযুক্ত এলাকার ভোট তো সব সময়েই তৃণমূলের দিকে আসে। আমি নিজে ৫৮টি ব্লকের লোকজনের সঙ্গে গত এক বছর ধরে যোগাযোগ রেখেছি, তাঁদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছি। বিধাননগরে জল প্রকল্প, সর্বত্র সিসি ক্যামেরার নজরদারি, রাস্তার কাজ হয়েছে। এ সবের ফলেই হারের ব্যবধান কমেছে।’’