Pathasree Project

নিশ্চুপে পথশ্রী-৩ চালু করল সরকার

চলতি বছর লোকসভা ভোটের আগে শুরু হল পথশ্রী-৩। তাতে বরাদ্দের লক্ষ্য রাখা হচ্ছে ৪০০০ কোটি টাকা। নজরে থাকছে প্রায় ১২ হাজার কিলোমিটার রাস্তা।

Advertisement

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৬:৫৮
Share:

নবান্ন। —ফাইল চিত্র।

গত বারের থেকে এ বার বাড়ল বরাদ্দ। একই সঙ্গে তুলনায় বাড়ল প্রকল্পের পরিধিও। লোকসভা ভোটের আগে গ্রামীণ রাস্তা সংষ্কারে ফের একবার নতুন দফার পথশ্রী প্রকল্প (পথশ্রী-৩) চালু করল রাজ্য সরকার। তবে আগের মতো এ বার আর ঢাকঢোল পিটিয়ে নয়। বরং কিছুটা নিঃশব্দেই। তা নিয়ে জল্পনা অব্যাহত প্রশাসনের অন্দরে।

Advertisement

গ্রামীণ রাস্তা তৈরি এবং ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা সারাতে বেশ কয়েক বছর আগে পথশ্রী প্রকল্প চালু করেছিল রাজ্য সরকার। গত বছর পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই প্রকল্পটিকে (পথশ্রী-২) বড় ভাবে চালু করা হয়। তাতে বরাদ্দ হয়েছিল প্রায় ৩,৬০০ কোটি টাকা। লক্ষ্য ছিল প্রায় ১১ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা।

চলতি বছর লোকসভা ভোটের আগে শুরু হল পথশ্রী-৩। তাতে বরাদ্দের লক্ষ্য রাখা হচ্ছে ৪০০০ কোটি টাকা। নজরে থাকছে প্রায় ১২ হাজার কিলোমিটার রাস্তা। নতুন আর্থিক বছরে (২০২৪-২৫) তার প্রতিফলনও রাখা হয়েছে। যদিও তার আগেই সব জেলাকে ইতিমধ্যেই প্রকল্পের কাজ শুরু করে দিতে বলেছিল পঞ্চায়েত দফতর। লক্ষ্য বেঁধে দেওয়া হয়েছে, ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব কাজের বরাত দেওয়া শেষ করতে হবে। জোর রয়েছে, একশো দিনের কাজে জব কার্ড থাকা শ্রমিকদের কাজে লাগানোর উপরে।

Advertisement

প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের মতে, গ্রামের মানুষের মূল অভিযোগই রাস্তার দুরবস্থা নিয়ে। ফলে পঞ্চায়েত ভোটের আগে সেখানে বাড়তি গুরুত্ব পেয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরেই বন্ধ রয়েছে একশো দিনের কাজ, প্রধানমন্ত্রী আবাস বা সড়ক যোজনার মতো প্রকল্পের বরাদ্দ। ফলে লোকসভা ভোটের আগে ফের একবার গ্রামীণ পরিকাঠামোর উপর জোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সরকারি সূত্রের দাবি, প্রকল্পের ৪০০০ কোটি টাকার পুরোটাই ব্যয় হবে রাজ্যের কোষাগার থেকে। এক কর্তার কথায়, “খরচের তিনটি স্তর রয়েছে। প্রথমটি ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। পরের স্তরটি ১০ লক্ষ থেকে এক কোটি টাকা। শেষে এক কোটির বেশি।”

প্রশাসন জানাচ্ছে, গত পঞ্চায়েতে সিঙ্গুরের সভা থেকে পথশ্রী-২ প্রকল্পের সূচনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে। তা ছাড়া যে কোনও সরকারি প্রকল্পের (নতুন এবং পরিমার্জিত) উদ্বোধন সাধারণত হয়ে থাকে তাঁর হাত ধরেই। কিন্তু পথশ্রী-৩ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন এখনও কেন হল না, তা নিয়ে কিছুটা বিস্মিত আধিকারিকদের অনেকে। পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেছেন, “কাজের বরাত দেওয়া শেষ হয়ে গেলে প্রকল্প সবুজ সংকেত পাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে যায়। সেই কাজের পরেই উদ্বোধনের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর সময় চাওয়া হবে।”

প্রশ্ন উঠেছে, পথশ্রী-১ এবং ২-এর পরে ফের ১২ হাজার কিলোমিটারের লক্ষ্য বেঁধে পথশ্রী-৩ চালু করতে হল কেন? তবে কি গোটা রাজ্যেই রাস্তার পরিস্থিতি একেবারে বেহাল! পঞ্চায়েত দফতরের দাবি, অতীতে বিভিন্ন সমীক্ষায় যত রাস্তার অনুরোধ সরকার পেয়েছিল, তা পর্যায়ক্রমে যাচাই করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে প্রশাসনিক অনুমোদন দিয়েছে দফতর। সব জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে পঞ্চায়েত দফতর আলোচনাও সেরে ফেলেছে।

পঞ্চায়েত দফতরের দাবি, ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজের বরাত দেওয়ার পরেই বরাদ্দ ভাগ করে দেওয়া হবে। প্রথম পর্যায়ে প্রায় ৩৫০০ কোটি টাকা খরচ হতে পারে। তারপরেও কিছু বরাদ্দ হাতে থেকে যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement