জয়রাম রমেশ। —ফাইল চিত্র।
ভোটগ্রহণের দিন নির্বাচন কমিশন এক রকম ভোটের হার বলছে। তিন-চার দিন পরে তার থেকে অনেকটা বাড়িয়ে ভোট পড়েছে বলে জানাচ্ছে। ভোটের হারে এই অসঙ্গতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে কংগ্রেস আজ বলল, লোকসভা ভোটের প্রথম চার দফায় ভোটগ্রহণের পরে নির্বাচন কমিশন প্রাথমিক ভাবে যে ভোট পড়েছিল বলে জানিয়েছিল, আর শেষে যা জানিয়েছে, তার মধ্যে ১ কোটি ৭ লক্ষ ভোটের ফারাক। কংগ্রেসের অভিযোগ, এর ফলে প্রতিটি লোকসভা কেন্দ্রে গড়ে প্রায় ২৮ হাজার ভোটের ফারাক হয়ে যাচ্ছে।
কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশের বক্তব্য, ‘‘এটা বিরাট অসঙ্গতি। যে সব রাজ্যে বিজেপির আসন হারানোর সম্ভাবনা বেশি, সেখানে প্রাথমিক ও চূড়ান্ত ভোটের হারের মধ্যে অসঙ্গতিও বেশি।হচ্ছেটা কী?”
সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রশ্ন তুলেছে, কেন কমিশন ভোটের হার জানাতে দেরি করছে? কেন নির্বাচন কমিশন কোন বুথে কত ভোট পড়েছে, সেই তথ্য বা ফর্ম নিজেদের ওয়েবসাইটে তুলে দিচ্ছে না? আগামী শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে এ নিয়ে শুনানি হওয়ার কথা। তার আগে আজ নির্বাচন কমিশন সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছে, ভোটগ্রহণের রেকর্ডবা ১৭সি ফর্ম কমিশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া হলে তা নিয়ে কারচুপিহতে পারে। সেই ফর্মের ছবি বিকৃত করে অবিশ্বাস তৈরির চেষ্টা হতে পারে। কমিশনের বক্তব্য, ওইফর্ম শুধুমাত্র পোলিং এজেন্টদের দেওয়া হয়। তা জনসমক্ষে আনার নিয়ম নেই।
চলতি লোকসভা নির্বাচনে প্রথম দফার ভোটের পর থেকেই নির্বাচন কমিশনের তথ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই কমিশন প্রাথমিক ভাবে যে ভোটের হার বলেছিল, তিন-চার দিন পরে তার থেকে ৫-৬ শতাংশ বেশি ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছিল। প্রথম দফার ভোটের ১১ দিন পরে কমিশন চূড়ান্ত ভোটের হার জানিয়েছিল। গত সোমবার পঞ্চম দফার ভোটগ্রহণের চূড়ান্ত হিসেব কমিশন এখনও দেয়নি। মোট কত ভোট পড়েছে, সেই সংখ্যাও কমিশন জানাচ্ছে না।
কংগ্রেসের জনসংযোগ বিভাগের প্রধান পবন খেরা আজ বলেন, ‘‘ভোটারেরা চিন্তিত। প্রথমে ১০-১১ দিন পরে কমিশন ভোটের চূড়ান্ত হার বলছে। তার পরে দেখা যাচ্ছে, চার দফায় ১ কোটি ৭ লক্ষ ভোটের ফারাক হয়ে গিয়েছে। হারিয়ে যাওয়া ইভিএম নিয়ে প্রশ্নের উত্তর মিলছে না।সেটাও চিন্তার।’’
কমিশন সূত্রের বক্তব্য, সব জায়গায় প্রাথমিক ও চূড়ান্ত হিসেবে ভোটের হারে ফারাক হচ্ছে না। মূলত প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ভোটের চূড়ান্ত হিসেব দেরিতে আসছে। তা ছাড়া গরমের জন্য অনেকে শেষ বেলায় এসে ভোটের লাইনে দাঁড়াচ্ছেন। নির্ধারিত সময়ের পরেও ভোটগ্রহণ চলছে।তবে সেই হিসাব কষতে ১০-১১ দিন কেন লেগে যাচ্ছে, তার উত্তর কমিশন দিতে পারেনি।