সি ভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন রাজভবনের এক অস্থায়ী মহিলা কর্মী। লোকসভা নির্বাচনের মুখে ভোটে ফায়দা তুলতেই এই ‘সাজানো অভিযোগ’ বলে আগেই দাবি করেছেন রাজ্যপাল। এ বার অভিযোগকারিণীর পরিবারের তৃণমূল-যোগ সামনে এনে সেই একই দাবিতে সরব হল বাম-বিজেপিও। যদিও একই সঙ্গে পাল্টা প্রশ্ন উঠেছে, হেনস্থা হওয়া মহিলার পরিবারের যদি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগ থাকে, তা হলে কি যৌন হেনস্থার অভিযোগ লঘু হয়ে যায়?
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী ওই মহিলা আদতে পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা। ২০১৯ সাল থেকে তিনি রাজভবনে চুক্তিভিত্তিক কর্মী হিসেবে কাজ করছেন। জানা গিয়েছে, ২০০২ সালে স্থানীয় একটি নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তাঁর মা। সিপিএম প্রার্থীর কাছে হেরে যান তিনি। তার পরে অবশ্য আর ওই পরিবারের কাউকে সক্রিয় রাজনীতিতে দেখা যায়নি। তবে বিরোধীরা সেই পুরনো তৃণমূল-যোগ টেনেই সরব হয়েছে।
এই অভিযোগকে ‘পরিকল্পিত রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’ হিসেবে দেখছে জেলা সিপিএম। দলের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, “নির্যাতিতার মা তৃণমূলের হয়ে এক সময় ভোটে লড়েছিলেন। তখনকার সব কথাই আমার মনে আছে। সন্দেশখালি কাণ্ড, নিয়োগ দুর্নীতি ইত্যাদি থেকে নজর ঘোরাতে তৃণমূল পরিকল্পিত ভাবে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। রাজ্যপালকে কলুষিত করতে এটা তৃণমূলের গভীর ষড়যন্ত্র।” একই সুরে বিজেপির জেলা নেতা দেবব্রত পট্টনায়েক বলছেন, “তৃণমূল যে ভাবে সাজানো ঘটনা দিয়ে রাজ্যপালের মতো ব্যক্তিত্বকে কলুষিত করতে চাইছে, সেখানে সাধারণ মানুষ তো অসহায়। তৃণমূলের কথায় যিনি এই মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন, তাঁর শুভবুদ্ধির উদয় হোক।”
জেলা তৃণমূলের নেতা অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “নির্যাতিতার পরিবার যদি তৃণমূল করে, তা হলে অসুবিধা কোথায়? আর তৃণমূল করে বলে কি তাঁর সঙ্গে যা খুশি আচরণ করা যেতে পারে? আমরা চাই তদন্ত হোক। তা হলেই সত্য বেরিয়ে আসবে।”
জেলায় অভিযোগকারিণীর বাড়ি শুক্রবার সারাদিন তালাবন্ধ ছিল। ফোনে চেষ্টা করেও ওই মহিলার বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। স্থানীয় সূত্রে খবর, মেয়ে অভিযোগ দায়ের করার পরেই তাঁরা কলকাতা রওনা হয়েছেন।