তখন বন্ধ হয়ে গিয়েছে সিসি ক্যামেরার মনিটর। —নিজস্ব চিত্র।
মঙ্গলবার ভোর রাতে প্রায় পৌনে দু’ঘণ্টা বন্ধ থাকল ঝাড়গ্রাম লোকসভার স্ট্রং রুমের সিসি ক্যামেরা। জানা গিয়েছে, বিদ্যুৎ বিভ্রাটেই এই বিপত্তি। এই ঘটনায় স্ট্রং রুমের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল-বিজেপি দুই দলই।
ঝাড়গ্রাম লোকসভার সমস্ত ইভিএম ঝাড়গ্রামের রানি ইন্দিরা দেবী কলেজের স্ট্রং রুমে রয়েছে। সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর কড়া নিরাপত্তা রয়েছে। সেখানে ২৪ ঘণ্টা সিসি ক্যামেরার নজরদারি রয়েছে। কলেজের অন্য একটি ঘরে রয়েছে তার কন্ট্রোল রুম। সেখানে পালা করে নির্বাচন কমিশন ও প্রার্থীদের প্রতিনিধিরা থাকছেন। সিসিটিভি অপারেটরও রয়েছেন। তবে তারপরেও বিভ্রাট এড়ানো গেল না। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ভোর ৩টে ৩৫ মিনিট থেকে ৫টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত স্ট্রং রুমের সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ ছিল।
সিসি ক্যামেরার কন্ট্রোল রুমে তখন তৃণমূলের পক্ষে ছিলেন সুজিত দত্ত, সামজেদ আলি খান, রাজদীপ শীট, সৌমেন শীট। বিজেপির পক্ষে ছিলেন কার্তিক মাহাতো, প্রতাপ মাহাতো, রাজকুমার মাহাতো। ওই ঘটনার সময়ে বামেদের কেউ ছিলেন না। তৃণমূল-বিজেপির ওই প্রতিনিধিরা জানান, রাতে সব সিসিটিভি ক্যামেরাই চলছিল। কন্ট্রোল রুমের এলইডি পর্দায় সেই ছবি দেখাও যাচ্ছিল। ৩টে ৩৫ নাগাদ এলইডি পর্দা অন্ধকার হয়ে যায়। কিছু পরে ৪টে সিসিটিভি ক্যামেরা কয়েক মুহূর্তের জন্য দেখা গেলেও তারপর আবার সব বন্ধ হয়ে যায়।
সেই খবর পেয়ে তৃণমূল প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্ট অশোক মহাপাত্র ও বিজেপির নির্বাচনী এজেন্ট দেবাশিস কুন্ডু চলে আসেন। সিসিটিভি ক্যামেরার দায়িত্বে থাকা লোকজনও আসেন। দেখা যায়, এমসিভির সুইচ (যার মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ন্ত্রিত হয়) নেমে গিয়েছে। তাই ওই ঘটনা। ওই সুইচ ৫টা ১৫ মিনিট নাগাদ চালু করতে ফের সিসিটিভি ক্যামেরার ছবি ফুটে ওঠে। সাড়ে পাঁচটা নাগাদ ওই কলেজে আসেন ঝাড়গ্রাম লোকসভার নির্বাচনী আধিকারিক তথা জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু। তৃণমূল প্রার্থী কালীপদ সরেন ও বিজেপি প্রার্থী প্রণত টুডুও আসেন। এরপরে দুই দলের প্রার্থীরা স্ট্রং রুম পরিদর্শন করেন।
এই ঘটনার পরে তৃণমূল-বিজেপি দু’দলই স্ট্রং রুমের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। দলীয় ভাবে নজরদারি বাড়ানোর কথাও বলেছে। কালীপদ বলেন, ‘‘যেখান থেকে সিসিটিভির নজরদারি চলছিল সেখানে কিছু গোলমাল হয়েছিল। এরকম হওয়া ঠিক নয়। এটা তো নিরাপত্তার প্রশ্ন। তবে স্ট্রং রুমের তালা-সহ সব ঠিকঠাক রয়েছে।’’ প্রণতের কথায়, ‘‘সিসি ক্যামেরা বন্ধ হয়ে যাওয়া একটা সন্দেহের বিষয়। গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এভাবে সমস্যা হওয়া ঠিক নয়। যদিও স্ট্রং রুমে গিয়ে দেখেছি সব কিছুই ঠিক রয়েছে।’’
জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, ‘‘এমসিভি লাইন গোলমাল করেছিল। তবে ওই সময়ের সিসি ক্যামেরার ভিডিয়োর ব্যাক আপ রয়েছে। উপস্থিত দুই প্রার্থীকে সেটা দেখানোও হয়েছে। ওঁনারা স্ট্রং রুমের সিল দেখে রেজিস্ট্রারে লিখে দিয়েছেন সিল ও লক সব ঠিক আছে।’’