প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
‘শুক্রিয়া মোদী ভাইজান’-এর পরে এ বার ‘কওমি চৌপাল’।
লোকসভা নির্বাচনের আগে মুসলিম পুরুষদের মন জয়ে মাঠে নামছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদের সঙ্গে সংযোগ বাড়াতে, বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সাফল্যের কাহিনি পৌঁছে দিতে প্রাথমিক ভাবে উত্তরপ্রদেশে ‘কওমি চৌপাল’ নামে গ্রামে-গ্রামে আলোচনাচক্রের আয়োজন করতে চলেছে পদ্ম শিবির। লক্ষ্য, মুসলিম সমাজের মধ্যে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের দল সম্পর্কে যে বাঁধাধরা মনোভাব রয়েছে তা দূর করা।
মুসলিম মহিলাদের সমর্থন পাওয়ার লক্ষ্যে ‘সুক্রিয়া মোদী ভাইজান’ নামে বিজেপির একটি প্রচারাভিযান চালু রয়েছে। মূলত তিন তালাক রদ, বিনামূল্যে রেশন, আবাস যোজনা, উজ্জ্বলা প্রকল্প, পানীয় জল যোজনার মতো বিষয়গুলি তুলে ধরা হচ্ছে। মোদী সরকার মুসলিমদেরও জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে কতটা বদ্ধপরিকর, করা হচ্ছে সেই প্রচারও। এ বার মুসলিম যুবকদের কাছে পৌঁছতে ‘কওমি চৌপল’ কর্মসূচি।
সব ঠিক থাকলে, আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে উত্তরপ্রদেশের মুজফফ্রনগরের কাসেরবা গ্রাম থেকে ওই কর্মসূচি শুরু হবে। প্রায় ৪,১০০ গ্রামে এ ধরনের আলোচনা সভা হওয়ার কথা। বিজেপি সূত্রের মতে, যে গ্রামগুলি বেছে নেওয়া হয়েছে, সেখানকার কোনও প্রবীণ ব্যক্তির বাড়ির দাওয়ায় বৈঠক আয়োজন করা হবে। মূলত, মুসলিমদের মধ্যে যাঁরা অপেক্ষাকৃত নরমপন্থী, তাঁদের পাশে পেতে উদ্যোগী বিজেপি নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রের মতে, ওই সভাগুলিতে তুলে ধরা হবে মোদী সরকার কী ভাবে ধর্ম-জাতের উপরে ওঠে গরিব মানুষকে জনহিতকর প্রকল্পের সুফল দিতে কাজ করেছে। কী ভাবে মুসলিমরাও বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুফল পাচ্ছেন, তা-ও পরিসংখ্যান দিয়ে তুলে ধরা হবে। ওই এলাকার যে সব মুসলিম পরিবার কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুফল পেয়েছে তাঁদেরও প্রচারের কাজে ব্যবহারের কথা ভাবা হয়েছে। স্থানীয় মানুষের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা, বিশেষ করে যুব সমাজের আশা-আকাঙ্খা সমাধানে আন্তরিক পদক্ষেপ করা হবে।
পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বাগপত, বুলন্দশহর, বিজনৌর, আমরোহা, রামপুর, কৈরানা, মিরাট, আগরা, আলিগড়, মুজফফ্রনগরের মতো মুসলিম অধ্যুষিত ২৩টি লোকসভা কেন্দ্রের মুসলিম সমাজের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করবে বিজেপি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, উত্তরপ্রদেশের ওই অঞ্চলে ২৬টি লোকসভা কেন্দ্র রয়েছে। যার মধ্যে গত লোকসভায় ১৯টিতে জিতেছিল বিজেপি। বাকি সাতটিতে দখল করে এসপি-বিএসপি জোট।
উত্তরপ্রদেশে ২০২২ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আসনপ্রাপ্তি থেকেই স্পষ্ট ওই রাজ্যে বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন মুসলিমদের একাংশ। না হলে মুসলিম অধ্যুষিত আসনগুলিতে এত ভাল ফল করা সম্ভব ছিল না গৈরিক শিবিরের। এ যাত্রায় ওই প্রান্তের প্রত্যেকটি আসন জেতার লক্ষ্য নিয়ে নামতে চাইছে পদ্ম বাহিনী। তাই আরও বেশি করে মুসলিম সমাজের কাছে পৌঁছতে চাইছেন মোদী-শাহেরা।