প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে নবীন পট্টনায়েক। ছবি: পিটিআই।
ওড়িশায় বড় দল কে হবে, সেই শরিকি জটিলতায় থমকে রয়েছে বিজেডি-বিজেপি জোট।
বিহারে এ যাত্রায় নীতীশ কুমারের সঙ্গে আসনের দর কষাকষিতে বেশি আসন ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে বিজেপি। একই সমীকরণ মেনে ওড়িশায় বড় দাদার মর্যাদা চেয়েছিল বিজেপি। যা প্রত্যাখান করে দিয়েছে নবীন পট্টনায়েকের দল বিজেডি। দলের বক্তব্য, বিহারে নীতীশ কুমার সংখ্যার দিক থেকে দুর্বল। তাই তিনি মুখ্যমন্ত্রী হয়েও আসন ভাগাভাগির প্রশ্নে বিজেপির দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয়েছেন। তুলনায় নবীন পট্টনায়েক একার জোরে সরকার চালাচ্ছেন। তাই এই মুহূর্তে বিজেডির কোনও শরিকের প্রয়োজন নেই। শরিকের সঙ্গে হাত মেলালে নিজের শর্তে হাত মেলাবে বিজেডি। অন্য কারও শর্তে নয়।
ওড়িশার ২১টি লোকসভার মধ্যে ১৩-১৪টি আসন এবং একই সঙ্গে হওয়া ১৪৭ বিধানসভা নির্বাচনে অন্তত ৫৭টি আসনে লড়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছে বিজেপি। বর্তমানে ওই রাজ্যে বিজেপির আট সাংসদ ও ২৩ জন বিধায়ক রয়েছেন। সেখানে লোকসভায় বিজেডির আসন সংখ্যা ১২। বিধানসভায় তাদের আসন সংখ্যা ১১২। ফলে সংখ্যার দিক থেকে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে নবীন পট্টনায়েকের দল। বিজেডি নেতৃত্ব আসন সমঝোতা সংক্রান্ত আলোচনায় লোকসভায় বিজেপিকে আটটি ও বিধানসভায় ৩০টির বেশি আসন ছাড়তে রাজি নয়। যে সমীকরণ কোনও ভাবেই পছন্দ নয় বিজেপির।
তা ছাড়া রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব ওড়িশায় একা চলার পক্ষপাতী। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে, নরেন্দ্র মোদীর ভাবমূর্তি রাজ্যে দলকে শক্তিশালী করে তুলতে সাহায্য করেছে। ফলে ক্রমশ ভোট বেড়েছে দলের। বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব মনে করছেন, এ যাত্রায় দল একা লড়লে লোকসভায় ১০-১২টি ও বিধানসভায় ষাটের কাছাকাছি আসন পেয়ে যেতে পারে। তৃণমূল স্তরে এতে শক্তিশালী হবে দল। তুলনায় জোট করা হলে বিজেপি নেতা-কর্মীদের মনোবল ভেঙে পড়বে। প্রত্যাশিত ফল না-ও হতে পারে।
একই ভাবে বিজেপির প্রস্তাবে দলের রাজনৈতিক ভাবে বিশেষ কোনও লাভ দেখছেন না বিজেডি নেতৃত্ব। তাই জোটের আলোচনা শুরু করেও তা থমকে গিয়েছে। বিজেডি নেতা ভি কে পান্ডিয়ান বলেন, ‘‘ওড়িশায় সরকার গড়তে আমাদের যেমন বিজেপিকে দরকার নেই, তেমনই কেন্দ্রে সরকার গড়তে বিজেপিকে আমাদের মুখাপেক্ষী হতে হবে না। একমাত্র দু’দলের দুই রাষ্ট্রনায়ক রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে বন্ধুত্বকে মাথায় রেখে জোট করার প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।’’ অন্য দিকে কংগ্রেসের মতে, দু’দলের মধ্যে আসন সমঝোতা প্রায় পাকা। কিন্তু আসন সমঝোতা এখন প্রকাশ্যে এসে গেলে দু’দলের বিক্ষুব্ধ নেতারা জোট ছেড়ে কংগ্রেস ও অন্যান্য বিরোধী দলে যোগ দেবেন। কংগ্রেসের দাবি, তাই ভাঙন ঠেকাতেই দু’দল জোট নিয়ে এখনই কোনও ঘোষণা করতে চাইছে না। কংগ্রেসের আশঙ্কা, ওই রাজ্যে তাঁদের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরেই বাকি বিজেপি ও বিজেডি তাদের জোটের কথা ঘোষণা করবে।