দিল্লির রামলীলা ময়দানে ‘ইন্ডিয়া’র শরিকদের সভা। ছবি: পিটিআই।
অরবিন্দ কেজরীওয়াল, মণীশ সিসৌদিয়ার অনুপস্থিতিতে সৌরভ ভরদ্বাজ, অতিশীরাই আম আদমি পার্টি (আপ)-র হয়ে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে সমন্বয়ের কাজ করেছেন। তাঁরাই আতিথেয়তা জানিয়েছেন সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা, মল্লিকার্জুন খড়্গেদের। রাহুল আবার সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজাকে সামনে পেয়ে তাঁর ‘রাগ ভাঙানো’-র চেষ্টা করেছেন।
দিল্লির রামলীলা ময়দান গত কাল এই রকম বিভিন্ন দৃশ্যের কোলাজ দেখে বিরোধী শিবির মনে করছে, দিল্লির ময়দানে নামার আগে দূরত্ব মুছেছে আপের সঙ্গে কংগ্রেসের। আসন সমঝোতা নিয়ে বামেদের অভিমান দূর করার চেষ্টা করেছেন কংগ্রেস শীর্ষনেতৃত্ব। সব মিলিয়ে নতুন করে বিরোধী মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’র শরিকেরা এককাট্টা হয়েছে। সেই ভিতের উপরে দাঁড়িয়ে বিজেপি বিরোধিতায় ফের নতুন কিছুর পরিকল্পনা করছে বিরোধী শিবির। লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ আগামী ১৯ এপ্রিল। সূত্রের খবর, তার আগেই ‘ইন্ডিয়া’র দলগুলি ফের এককাট্টা হয়ে কিছু বিজেপি বিরোধী কর্মসূচি নেওয়ার কথা ভাবছে।
রামলীলা ময়দানে জনসভার মঞ্চেই রাহুল হাসতে হাসতে সিপিআইয়ের ডি রাজাকে প্রশ্ন করেছেন, ‘আপনি কি আমার উপরে এখনও রাগ করে রয়েছেন?’ রাজার সহাস্য উত্তর, না, তাঁর রাগ নেই। কেরলের ওয়েনাড়ে এ বার রাহুলের বিরুদ্ধে সিপিআইয়ের প্রার্থী রাজার স্ত্রী অ্যানি রাজা। রাহুল ফের কেরলের ওয়েনাড়ে প্রার্থী হওয়ায় ডি রাজা বলেছিলেন, বামেদের বদলে তাঁর বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করা উচিত। রাহুল গত কাল রাজার সেই রাগ ভাঙানোরই চেষ্টা করেছেন।
এক সময়ে আপ-কংগ্রেস সম্পর্ক ছিল সাপে-নেউলে। এ বার দিল্লিতে সাতটি লোকসভা কেন্দ্রে দুই দল আসন সমঝোতা করেছে। দু’দলের শীর্ষ নেতৃত্বের মনে সংশয় ছিল, এক দলের কর্মী-সমর্থকরা অন্য দলকে ভোট দেবে তো! কেজরীওয়ালের গ্রেফতারিকে সামনে রেখে রামলীলার জনসভায় কংগ্রেস, আপ— দুই দলের কর্মীরাই একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জড়ো হয়েছেন। কেজরীওয়ালের গ্রেফতারির বিরুদ্ধে যে ভাবে দুই দলের নিচু তলায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, তা দেখে কংগ্রেস ও আপের নেতারা মনে করছেন, এক দলের ভোট অন্য দলের ঝুলিতে পাঠাতে সমস্যা হবে না। বিরোধী শিবিরের নেতারা বলছেন, কেজরীওয়াল, সিসৌদিয়া, সঞ্জয় সিংহ, সত্যেন্দ্র জৈন এখন জেলে। তা সত্ত্বেও সৌরভ ভরদ্বাজ, অতিশী, সন্দীপ পাঠকের মতো আপ-এর দ্বিতীয় সারির নেতানেত্রীরা কংগ্রেসের সঙ্গে সমন্বয়ে ফাঁক রাখতে দেননি। কংগ্রেসের গোটা শীর্ষনেতৃত্বও তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্য করেছে। এ বার দিল্লির সাতটি লোকসভা কেন্দ্রে তার ফসল তুলতে চাইছে ‘ইন্ডিয়া’।
দিল্লির সাতটি লোকসভা আসনই এখন বিজেপির দখলে। আপ এ বার চারটি লড়াই করেছে। চারটিতেই তারা প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, তাদের ভাগে থাকা চাঁদনি চক, উত্তর-পূর্ব দিল্লি ও উত্তর-পশ্চিম দিল্লিতে খুব শীঘ্রই জে পি আগরওয়াল, সন্দীপ দীক্ষিত ও উদিত রাজের নাম প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে দেওয়া হবে।