Lok Sabha Election 2024

ঐতিহ্যের পোশাকে ভোট দিলেন তাশিগাংয়ের মানুষ

তুষারধবল হিমালয়ের ১৫ হাজার ২৫৬ ফুট উচ্চতায় ছোট্ট ছবির মতো গ্রাম তাশিগাং। হিমাচল প্রদেশের কিন্নর জেলার অন্তর্গত। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে এখানে ভোট পড়েছিল ১০০ শতাংশ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২৪ ০৮:১১
Share:

ভোট দেওয়ার অপেক্ষায়। শনিবার লাহুল-স্পিতির তাশিগাংয়ে। ছবি: পিটিআই।

সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেটের দফতরে এসে যখন গাড়ি থেকে নামলেন বুথ আধিকারিক প্রেম লাল, তখন কনকনে ঠান্ডা হাওয়ায় তাঁর হাত জমে গিয়েছে। বৃহস্পতিবারের সকালের ওই আবহাওয়াই তাঁকে ইঙ্গিত দিয়েছিল, আগামী কয়েক দিন খানিক অন্য রকম কাটতে চলেছে। এসডিএম-এর দফতর যে শহরে, তার নাম কাজ়া, জেলার নাম লাহুল-স্পিতি আর রাজ্যের নাম হিমাচল প্রদেশ। তবে লাল তখনও জানতেন না, তাঁর দায়িত্ব পড়বে আকাশে ছড়ানো মেঘের কাছাকাছি— বিশ্বের উচ্চতম নির্বাচনীকেন্দ্র তাশিগাংয়ে।

Advertisement

উচ্চতা নেহাত কম নয়। তুষারধবল হিমালয়ের ১৫ হাজার ২৫৬ ফুট উচ্চতায় ছোট্ট ছবির মতো গ্রাম তাশিগাং। হিমাচল প্রদেশের কিন্নর জেলার অন্তর্গত। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে এখানে ভোট পড়েছিল ১০০ শতাংশ। স্বীকৃতি মিলেছিল আদর্শ নির্বাচনী কেন্দ্রের। স্পিতি উপত্যকার উচ্চতম গ্রামের তকমাও জুটেছে তার। হিমাচলের ঐতিহ্যময় পোশাকে ভোট দিতে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ বারও তাই ঘটেছে। বিকেল তিনটে পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুসারে, ৭৯ শতাংশ পড়েছে এ বার।

ভারত-চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে অবস্থিত এই স্পিতি উপত্যকা মান্ডি লোকসভা আসনের অন্তর্গত। এই আসনে যুযুধান প্রার্থী বিজেপি প্রার্থী কঙ্গনা রানাউত ও কংগ্রেস প্রার্থী বিক্রমাদিত্য সিংহ। তাশিগাং ও তার পাশের গ্রাম গেটে মিলিয়ে মোট ৬২ জন ভোট দিতে আসেন। তাঁদের মধ্যে ২৫ জন মহিলা।

Advertisement

কাজ়া শহর থেকে আধ ঘণ্টায় পৌঁছনো যায় তাশিগাংয়ে, দূরত্ব প্রায় ৩০ কিলোমিটার। প্রতি মুহূর্তে বদলে যায় প্রকৃতির রূপ। রাস্তাও সঙ্কীর্ণ হতে থাকে। তবে, প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে এখানকার মানুষ বেঁচে রয়েছেন। গণতান্ত্রিক অধিকার যাতে তাঁরা পালন করতে পারেন, তা দেখার দায়িত্ব প্রেমের মতো মানুষদের। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে এ কথাই বলছিলেন তিনি। একটু থেমে এ-ও জানালেন, কঠিন পার্বত্য এলাকায় কনকনে ঠান্ডার মধ্যে মোবাইল-ইন্টারনেট ছাড়া এমনকি কোনও কোনও ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ ছাড়া অনেকেরই অসুবিধা হয়, এত উচ্চতায় শ্বাসের কষ্টও হয়...

১ জুন ভোট দিল তাশিগাং। অতিরিক্ত জেলা কমিশনার রাহুল জৈন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, স্যাটেলাইট ফোনের সাহায্যে যোগাযোগ স্থাপন করা হয়েছে তাশিগাংয়ের সঙ্গে। মোতায়েন করা হয়েছে ১৬৮ পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী। ৩০ মে ভোটকর্মী ও বুথ আধিকারিকেরা যখন তাশিগাংয়ে পৌঁছন তখন বরফ পড়েছে। রাতে তাপমাত্রা নেমে গিয়েছিল হিমাঙ্কের পাঁচ ডিগ্রি নীচে। প্রবেশপথে লেখা, বিশ্বের উচ্চতম নির্বাচনী কেন্দ্রে স্বাগত জানাই। গ্রামের এক প্রান্তে উজ্জল হলুদ রঙের নির্বাচনী কেন্দ্র। সামনে ভারতের পতাকার ছবি।

না আছে কোনও স্কুল, না আছে হাসপাতাল। সম্পূর্ণ ভাবে কাজ়ার উপর নির্ভরশীল তাশিগাং ও তার চার পাশের গ্রামগুলি শীতকালে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অন্য সময় গাড়ি না থাকলে ভরসা চমরি গাই। সে কথাই জানালেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের এ-ও দাবি, ভোট তাঁরা এই জন্যই দেন যাতে সরকারের কাছে তাঁদের এই অবস্থার কথা পৌঁছয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement