তাপস রায়। —ফাইল চিত্র।
বৌবাজারে একই জায়গায় সভা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্রমণের জবাব দিলেন কলকাতা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়। নির্বাচনী সভা থেকে রবিবার মুখ্যমন্ত্রীকে ‘প্রতিষ্ঠিত অসত্যবাদী’ বলে আক্রমণ করলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী গত ২৩ মে একই জায়গায় তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে সভা করতে এসে তাপসের বিজেপি যোগদানের প্রসঙ্গ টেনে বলেছিলেন, পালালেন কেন? ইডি-র ভয়ে? তাপস পাল্টা এ দিন বলেন, ‘‘আমার বাড়িতে ইডি-র তল্লাশির পরে আমি বিজেপিতে যোগ দিইনি। আমি ৫২ দিন সময় নিয়েছিলাম। তার পরেও যখন দলের তরফে কোনও বিবৃতি পেলাম না অথচ বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী জলদস্যু শেখ শাহজাহানের পক্ষ নিলেন, সে দিন আমি ঠিক করলাম, আর এই দল করব না!’’
তৃণমূল কংগ্রেসের সভায় নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, এক বছর আগে থেকে তাপস বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছিলেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে তাপসের জবাব, ‘‘সবাইকে নিজের মতো ভাববেন না! আপনি কত বার ইউপিএ-তে থেকে এনডিএ-এর সঙ্গে আর এনডিএ-তে থেকে ইউপিএ-র সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছিলেন, সেটা সবাই জানে!’’ বিপক্ষ প্রার্থী সুদীপকে আক্রমণ করে তাঁর বক্তব্য, ‘‘উনি স্বাধীনতা সংগ্রাম করে জেলে যাননি! ওঁর দুর্নীতির ইতিহাস আছে। সেই ৫০ বছর আগে ভুষি কেলেঙ্কারি দিয়ে শুরু করেছিলেন, রোজভ্যালি দিয়ে শেষ করেছেন!’’ এর পরেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সুরে তাপসের মন্তব্য, ‘‘মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী আপনি প্রধানমন্ত্রীকে প্রাক্তন করতে চাইছেন। আপনি কবে প্রাক্তন হবেন, সেই দিন গুনুন!’’
তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ অবশ্য পাল্টা বলেছেন, ‘‘আমি এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করছি। উনি (তাপস) কোনও কারণে দল বদল করেছেন। কিন্তু তার জের ধরে এত দিন যে দল করলেন, সেই দলের নেত্রীর সম্পর্কে কু-কথা বলা অনৈতিক।’’
বৌবাজারের সভায় উপস্থিত ছিলেন অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য, অর্জুন সিংহ, বিজেপির উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষ, কলকাতা পুরসভার ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের পুর-প্রতিনিধি সজল ঘোষ প্রমুখ। সুকান্ত বলেন, ‘‘তাপস রায়কে ভোট দেওয়া মানে শুধু তাঁকে ভোট দেওয়া নয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আশীর্বাদ করা।’’ নাম না করে মমতা ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে তাঁর মন্তব্য, ‘‘পিসি যাবে তিহাড় জেলে, সঙ্গে যাবে কে? সঙ্গে যাবে হুলো ভাইপো, কোমর বেঁধেছে!’’ ঘূর্ণিঝড়ের ভ্রুকুটি সত্ত্বেও বৃষ্টি ভেজা রবি-সন্ধ্যায় সভায় ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।