কোলাঘাটে শুভেন্দু অধিকারী ও অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
দলের প্রার্থীর নাম ঘোষণার আগেই হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়র ‘গাইড’ হয়ে এলাকায় ঘুরেছেন। এবার তমলুক কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অভিজিতের হয়ে ভোট প্রচারে নামলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর সেই প্রচারে তাঁকে বলতে শোনা গেল— ‘‘এটা শুধুমাত্র অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে জেতানোর ভোট নয়। শুভেন্দু অধিকারীকে সমর্থন করার ভোট নয়। এ ভোটটা দেশের ভোট।’’ স্থানীয় স্বার্থ ভুলে দেশের কথা ভেবে ভোট দেওয়ার আর্জি জানাতে সোমবার দেখা গিয়েছে শুভেন্দুকে।
কোলাঘাট ব্লক পাঁশকুড়া পূর্ব বিধানসভার অন্তর্গত। সেটি তমলুক লোকসভার অধীন। বৃন্দাবনচক পঞ্চায়েতের যদুপুর ফুটবল ময়দানে এ দিন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতিতে একটি কর্মিসভার আয়োজন করে বিজেপি। ভিড়ের চাপে সেটি কার্যত জনসভায় পরিণত হয়। সেখানে শুভেন্দু মনে করান, দেশে ৫৪৩টি আসনে বিজেপি-এনডিএ লড়ছে। আর তৃণমূল লড়ছে ৪৫টি আসনে। সিপিএম ২০ টি আসনে। এই দলগুলি দিল্লিতে গিয়ে কী করবে, সেই প্রশ্ন তোলেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘এটা প্রধানমন্ত্রী তৈরি করার ভোট। এবার ৪০০ পার করাতে হবে। বি আর অম্বেডকরের সংবিধান তৈরি করার কমিটিতে মেদিনীপুরে দুই সাংসদ বসন্ত দাস এবং সতীশচন্দ্র সামন্ত ছিলেন।’’
মঞ্চ থেকে শুভেন্দু কোলাঘাটের বাসিন্দা তথা মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরীর নাম না করে বলেন, ‘‘এখানে একটা হাফ মন্ত্রী রয়েছেন। উনি কিছু কাজ করেন না। কোলাঘাটে যত উন্নয়ন হয়েছে তৃণমূলে থাকাকালীন আমার নেতৃত্বে হয়েছে।’’ তমলুকের সিপিএম প্রার্থী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে শুভেন্দু দাবি করেন, অনেক বামপন্থীই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। আর তৃণমূলকে সুবিধা পাইয়ে দিতেই সিপিএম এবার তমলুক কেন্দ্রে মুসলিম নন, এমন প্রার্থী দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন শুভেন্দু।
বিকেলে শুভেন্দু আর অভিজিৎ যান ময়নার শালিকা ধনিচক গ্রামে। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে শুভেন্দু বলেন, ‘‘যে ভাষায় এনআইএ, ইডি, সেন্ট্রাল রিজার্ভ ফোর্স যেভাবে আক্রমণ করছেন, নির্বাচন কমিশনকে ধমকাচ্ছেন, তাতে ওঁকে সেন্সর করা উচিত। আর সভায় অভিজিৎ মমতার নাম না করেই তাঁকে ‘মিথ্যাবাদী জননেত্রী’ বলে মন্তব্য করেন। ময়না মৎস্য হাব প্রসঙ্গ টেনে অভিজিৎ বলেন, ‘‘উনি সম্ভবত মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন। কথা দিয়েছিলেন ময়না ব্লকে মৎস্য হাব হবে। কিন্তু প্রতিশ্রুতি রাখেননি।’’ এ দি শিক্ষা দুর্নীতি নিয়েও অভিজিৎ সরব হয়েছেন।
শুভেন্দুর এদিনের মন্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা (তমলুক) সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘উনি তো মেনে নিচ্ছেন কোলাঘাটে যা উন্নয়ন হয়েছে, ওঁর নেতৃত্বে হয়েছে। তার মানেই তো তৃণমূল সরকার কোলাঘাটে উন্নয়ন করেছে। আসলে উনি সব জায়গায় উন্নয়নে বাধা দিচ্ছেন।’’