কংগ্রেসে যোগ দিলেন দানিশ আলি। ছবি সংগৃহীত।
তিনি কংগ্রেসে যোগ দিতে পারেন, সেই জল্পনা চলছিল অনেক দিন ধরেই। অবশেষে সেই জল্পনা সত্যি হল। বুধবার আনুষ্ঠানিক ভাবে কংগ্রেসে যোগ দিলেন সাসপেন্ড হওয়া বহুজন সমাজবাদী পার্টির (বিএসপি) সাংসদ দানিশ আলি। দিন কয়েক আগেই দিল্লিতে ১০ জনপথে সনিয়া গান্ধীর বাসভবনে কংগ্রেস নেত্রীর সঙ্গে দেখা করে এসেছিলেন উত্তরপ্রদেশের দাপুটে নেতা। তার পরই দানিশের কংগ্রেসে যোগ দেওয়া ছিল শুধু সময়ের অপেক্ষা।
জাতীয় রাজনীতিতে চর্চার নাম দানিশ। ২০১৯ সালে যখন দেশ জুড়ে মোদী ঝড় উঠেছিল, তখন উত্তরপ্রদেশের আমরোহা লোকসভা কেন্দ্র থেকে বিএসপির টিকিটে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন তিনি। তবে সেই দানিশকেই গত ডিসেম্বরে দল থেকে সাসপেন্ড করেন মায়াবতী। বিএসপির তরফে সাসপেন্ড সংক্রান্ত যে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছিল, তাতে বলা হয়েছিল, বহু বার দানিশকে সতর্ক করা হলেও তিনি ‘দলবিরোধী’ কার্যকলাপ চালিয়ে গিয়েছেন। তাই তাঁকে বহিষ্কার করতে ‘বাধ্য’ হচ্ছে দল।
সাসপেন্ড হওয়ার পর থেকেই কংগ্রেসের সঙ্গে দানিশের ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। এমনকি, উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’তে পা মেলাতে দেখা গিয়েছিল দানিশকে। পাশাপাশি মণিপুর থেকে এই ‘যাত্রা’ শুরু হওয়ার সময়ও রাহুলের সঙ্গে ছিলেন তিনি। এ ছাড়াও কংগ্রেসের হয়ে নানা সময়ে নানা কথাও বলেছেন দানিশ। জাতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেসের সঙ্গে দানিশের ‘হাত’ মেলানো নিয়ে জল্পনা চলছিল। লোকসভা নির্বাচনের আগেই দল বদল করলেন বিএসপি নেতা।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের টিকিটে লড়বেন দানিশ। আমরোহা লোকসভা কেন্দ্র থেকেই তাঁকে টিকিট দিতে পারে হাত শিবির। অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টির (এসপি) সঙ্গে আসনবণ্টন নিয়ে আলোচনায় আমরোহা লোকসভা কেন্দ্র নিয়ে দরাদরি করেছিল কংগ্রেস। শেষ পর্যন্ত অখিলেশ কংগ্রেসকে ওই আসন ছেড়ে দেয়।
তৃণমূলের মহুয়া মৈত্রকে সংসদ থেকে বহিষ্কারের দিনেও বিরোধী সাংসদদের সামনের সারিতে দেখা গিয়েছে দানিশকে। সংবাদমাধ্যমের সামনে বিজেপিকে তোপ দেগে বলেছিলেন, “সংসদের নিম্নকক্ষে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেই বিরোধীদের কণ্ঠস্বরকে রোধ করা যায় না।” আর একটি বিতর্কেও সম্প্রতি সংবাদ শিরোনামে আসেন দানিশ। লোকসভায় চন্দ্রযান-৩-এর সাফল্য নিয়ে আলোচনা চলার সময়ে তাঁর ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন বিজেপি সাংসদ রমেশ বিদুরি। বিদুরির মন্তব্যের প্রতিবাদে দানিশের পাশে দাঁড়ায় কংগ্রেস-সহ সব বিরোধী দল। মহুয়া সংক্রান্ত বিতর্কেও বহু বার নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে দানিশ অভিযোগের সুরে জানিয়েছিলেন যে, বিদুরির বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি এথিক্স কমিটি, অথচ মহুয়ার বেলায় তারাই ‘অতিসক্রিয়তা’ দেখাচ্ছে। সেই দানিশ এ বার কংগ্রেসে এলেন।