(বাঁ দিকে) সুনীতা কেজরীওয়াল এবং হেমন্ত সোরেন। ছবি পিটিআই।
দিল্লির তাপমাত্রা ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। মাথার সূর্য ক্রমশ তেজ বাড়ছে। তবে সেই তেজকে আরও কয়েক গুণ বৃদ্ধি করে দিলেন সুনীতা কেজরীওয়াল এবং কল্পনা সোরেন। রামলীলা ময়দানে বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র ডাকা ‘মহা সমাবেশ’-এর অন্যতম আকর্ষণই ছিলেন এই দুই মহিলা। ‘লোকতন্ত্র বাঁচাও’ বলে যে সুর রামলীলা ময়দান থেকে বিরোধীরা বেঁধে দিতে উদ্যোগী হয়েছিলেন, সেই সুর সপ্তমে তুলে দিলেন সুনীতা এবং কল্পনা।
ঘটনাচক্রে, দু’জনের স্বামীই ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। এক জন অরবিন্দ কেজরীওয়াল এবং অপর জন হেমন্ত সোরেন। প্রথম জন ইডি হেফাজতে আর দ্বিতীয় জন জেলবন্দি। জমি দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়ার আগে অবশ্য হেমন্ত ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। কিন্তু কেজরীওয়াল এখনও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রয়েছেন। সেই দিল্লিতেই বিরোধীরা আবারও এক বার ‘ঐক্যবদ্ধ’ হলেন।
কেজরীওয়ালের গ্রেফতারি-সহ একাধিক ইস্যুকে সামনে রেখেই বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ রবিবারের সমাবেশের ডাক দিয়েছিল। সেই সভায় প্রথম বক্তৃতা করতে মঞ্চে ওঠেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী সুনীতা। বলতে গেলে এটাই তাঁর প্রথম কোনও রাজনৈতিক সভা। কেজরীওয়াল গ্রেফতার হওয়ার আগে পর্যন্ত তাঁকে তেমন ভাবে কোনও রাজনৈতিক মঞ্চ বা জমায়েতে দেখা যায়নি। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে তিনিই সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে রয়েছেন। ইডি হেফাজত থেকে স্বামীর বিভিন্ন বার্তা সকলের সামনে পাঠ করে শোনাচ্ছেন তিনি। রবিবারও তাঁর অন্যথা হল না।
লোকসভা ভোটে কেজরীওয়ালের ছয়টি প্রতিশ্রুতির কথা শোনালেন সুনীতা। সেই সঙ্গে তিনি উপস্থিত সকল জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আমার স্বামীকে জেলে বন্দি করে রেখেছেন। আপনারা বলুন তো এটা ঠিক? আপনারা বিশ্বাস করেন তো কেজরীওয়াল দেশপ্রেমিক এবং সৎ ব্যক্তি? এই বিজেপির লোকেরা বলছেন কেজরীওয়ালের পদত্যাগ করা উচিত, কিন্তু আপনারাই বলুন, তাঁর কী করা উচিত?” এর পরই সুনীতা গলা চড়িয়ে বলেন, ‘‘আপনাদের কেজরীওয়াল সিংহ। তাঁকে বেশি দিন জেলে বন্দি করে রাখা যাবে না।’’
সুনীতা যেখানে শেষ করেছেন, ঠিক সেখান থেকেই বক্তৃতা শুরু করেন কল্পনা। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের শক্তি দেশের ১৪০ কোটি মানুষের। এনডিএ সরকার বাবা অম্বেডকরের সংবিধান নষ্ট করে দিতে চাইছে। আমরা তা রুখবই। দেশের মানুষের থেকে বড় কোনও শক্তি হয় না। সেই শক্তি আমাদের সঙ্গে আছে। এই জনসমুদ্রই সেটা প্রমাণ করছে। ভারতের লোকতন্ত্র বাঁচাতেই হবে আমাদের।’’ ‘লোকতন্ত্র বাঁচাও’ সমাবেশে যোগ দিতে শনিবারই ঝাড়খণ্ড থেকে দিল্লি উড়ে এসেছিলেন কল্পনা। দিল্লি এসে সোজা চলে যান কেজরীওয়ালের বাসভবনে। সেখানে দেখা করেন সুনীতার সঙ্গে।