রানাঘাট শহরে এসইউসি প্রার্থী পরেশ হালদারের প্রচার। ছবি: সুদেব দাস
গত ২০১৪ ও ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের সময় তিনি প্রার্থী হয়েছিলেন। এই বছরও রানাঘাট কেন্দ্রে এসইউসি-র প্রার্থী হয়েছেন পরেশ হালদার। অন্য রাজনৈতিক দলগুলি যখন ভোটপ্রচারে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করছে, তখন এই প্রার্থীর কাছে সেই অর্থে নেই কোনও অর্থ ও লোকবল, এমনটাই দাবি তাঁর। শেষ লোকসভা নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় হলফনামায় পরেশ উল্লেখ করেছেন, তাঁর কাছে ৭৫ হাজার টাকা রয়েছে। এ বছর সেই টাকার পরিমাণ আরও কমেছে বলে তিনি দাবি করেছেন।
জানা গিয়েছে, ষাটোর্ধ্ব পরেশ হালদার কৃষ্ণনগর শহরের বাসিন্দা। প্রায় ৩০ বছর ধরে তিনি এসইউসি দলে রয়েছেন। এ ছাড়া, সরাসরি যুক্ত রয়েছেন কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে। ২০১৪ ও ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে রানাঘাট কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন পরেশ হালদার। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ৭৯৫২ ও ২০১৯ সালের নির্বাচনে ৬৪৫৪ ভোট পেয়েছিলেন। এবারেরও তাঁকে রানাঘাট কেন্দ্রের প্রার্থী করেছে দল। এসইউসির দাবি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অস্বাভাবিক ভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি, বেসরকারিকরণ বন্ধ করা, বেকারত্ব দূরীকরণ, চাষিদের ফসলে ন্যায্য দাম দেওয়া ইত্যাদির দাবিতে গণ-আন্দোলন গড়ে তোলাটাই দলের মূল উদ্দেশ্য। সেই জন্যই সংসদীয় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করা।
ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশের অনেক আগে থেকেই প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে প্রচারে নেমেছে বিজেপি, তৃণমূল। কিছুটা পরে হলেও অন্য রাজনৈতিক দলগুলির মতোই রানাঘাট কেন্দ্রের এসইউসি প্রার্থীর নামে দেওয়াল লিখন ও প্রচার শুরু হয়। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রার্থীর হয়ে লোকসভার অধীনে থাকার সাতটি বিধানসভা এলাকায় সোমবার পর্যন্ত মোট ১২০টি দেওয়াল লিখন হয়েছে। তবে প্রচারে বা দেওয়াল লিখনের জন্য যাবতীয় খরচ বহন করছেন দলের অন্য কর্মীরাই।
লোকবল, অর্থবল না থাকা সত্ত্বেও কেন নির্বাচনে অংশ নেওয়া? এই প্রশ্নের উত্তরে পরেশ বলেন, "ভোটে জয়-পরাজয় মূল লক্ষ্য নয়। বিজেপি ধর্মের নামে রাজনীতি করছে। দেশকে বিক্রি করে দেওয়ার জন্য চক্রান্তও চালাচ্ছে। আবার, রাজ্য সরকার চাকরির মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে অসহায় বেকার যুবক-যুবতীদের। রাজ্যের মন্ত্রীরা একের পর এক জেলে গিয়েছেন। বড় অস্থির সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি আমরা। এই সবকিছু মিলিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছানো, আমাদের আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই লক্ষ্য। তাই দলীয় নির্দেশ মতো প্রার্থী হতে হয়েছে। সেই মতোই ভোটপ্রচার করছি।"
তাঁর কথায়, "স্ত্রী মারা গিয়েছেন। একার সংসার। মাত্র পৌনে দুই বিঘা জমি রয়েছে। তা-ও অন্যদের চাষ করতে দিয়েছি। সেখান থেকেই যেটুকু টাকা আসে, তাই দিয়ে চলছে। দলের কর্মী, আমার শুভানুধ্যায়ীরাই মূলত ভোটপ্রচারের যাবতীয় খরচ সামলাচ্ছেন।"