—প্রতীকী চিত্র।
দু’পক্ষই মেপে নিতে চাইছেন প্রতিদ্বন্দ্বীকে। তাই কংগ্রেস হোক বা বিজেপি, উভয় পক্ষই রায়বরেলী কেন্দ্রের প্রার্থীর নাম নিয়ে ধোঁয়াশা জিইয়ে রাখার পক্ষে। কংগ্রেসের নেতৃত্বের বড় অংশ চাইছেন, সনিয়া গান্ধী লোকসভা নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ায় কংগ্রেসের ওই চিরাচরিত আসনে নির্বাচনে লড়ুন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা। অন্য দিকে প্রিয়ঙ্কাকে রুখতে বিজেপির একটি বড় অংশ চাইছেন রায়বরেলীতে প্রার্থী করা হোক সমাজবাদী পার্টি (এসপি)-র নেতা মুলায়ম সিংহ যাদবের পুত্রবধূ অপর্ণা যাদবকে।
দু’বছর আগে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের আগেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন অপর্ণা। মুলায়মের পুত্রবধূ হলেও তিনি বিশ্বাস করেন গেরুয়া রাজনীতিতে। অমেঠীর পরে এ বার রায়বরেলী থেকে কংগ্রেসের অস্তিত্ব মুছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে বিজেপি। তাঁর ওই কেন্দ্র নিয়ে দাঁড়ানোর সম্ভাবনাকে উস্কে দিয়ে অপর্ণা বলেন, “দল যদি আমাকে রায়বরেলীর টিকিট দেয় তা হলে প্রিয়ঙ্কা গান্ধীকে হারাতে প্রস্তুত। এটুকু বলতে পারি, গোটা দেশেই কংগ্রেস বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে।” অপর্ণা নিজে ওই কেন্দ্রের জন্য তদ্বির করলেও, সূত্রের মতে অপর্ণাকে নিয়ে আপত্তি রয়েছে যোগী আদিত্যনাথের। সেই কারণে ওই কেন্দ্রে এখনও প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি বিজেপি।
দলীয় সূত্রের মতে, রায়বরেলী কেন্দ্রের লড়াই উভয় দলের কাছেই মর্যাদাপূর্ণ। বিজেপি নেতৃত্ব ভাল করেই জানেন, অমেঠীর পরে এ বার রায়বরেলী থেকে কংগ্রেসকে হারাতে পারলে কার্যত গোটা উত্তরপ্রদেশ থেকেই মুছে দেওয়া সম্ভব হবে। বিজেপির অভ্যন্তরীণ বিশ্লেষণ, রায়বরেলী ছাড়া উত্তরপ্রদেশে অন্য কোনও লোকসভা আসনে কংগ্রেসের জেতা বেশ কঠিন। তাই সনিয়ার অনুপস্থিতিতে রায়বরেলী দখলে তৎপর বিজেপি নেতৃত্বও। অন্য দিকে সনিয়া সরে দাঁড়ানোর আবেগকে কাজে লাগিয়ে মেয়ে প্রিয়ঙ্কাকে ওই কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করার পক্ষপাতী কংগ্রেস। দল মনে করে, প্রিয়ঙ্কা প্রার্থী হলে রায়বরেলী জয়ের পাশাপাশি আশপাশের দু’তিনটি কেন্দ্রে তাঁর উপস্থিতির ফলে ইতিবাচক ফায়দা পাবেন ইন্ডিয়া মঞ্চের প্রার্থীরা।
রায়বরেলী কেন্দ্রে গান্ধী পরিবারের সদস্যদের জয় তুলনামূলক ভাবে সহজ হওয়ায় দলের একাংশ ওই কেন্দ্র থেকে রাহুল গান্ধীকে দাঁড় করানোর পক্ষপাতী। গত বারের মতো এ বারও ওয়েনাড় থেকে লোকসভা নির্বাচনে লড়ছেন রাহুল। কিন্তু ওই কেন্দ্রে রাহুলকে কড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে ফেলে দিয়েছেন সিপিআই নেতা এ রাজার স্ত্রী অ্যানি রাজা। বিশেষ করে রাহুল যে বহিরাগত, সেই তত্ত্বে কংগ্রেস প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রচারে নেমেছেন তিনি। বলা হচ্ছে, হারের ভয়ে ওয়েনাড় ছাড়াও রায়বরেলী কিংবা অমেঠী থেকে লোকসভা নির্বাচনে লড়াইয়ের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন রাহুল। অ্যানি রাজার দাবি, রাহুল যদি দু’টি কেন্দ্র থেকেই জেতেন সে ক্ষেত্রে উত্তর ভারতকে প্রাধান্য দিয়ে ওয়েনাড় থেকে ইস্তফা দেবেন রাহুল। তাই স্থানীয় মানুষের দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে প্রার্থী বেছে নেওয়ার প্রশ্নে রাহুলের বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছেন বিরোধীরা। ওয়েনাড়ে ভোটগ্রহণ ২৬ এপ্রিল। অন্য দিকে রায়বরেলী ও অমেঠীর নির্বাচন ২০ মে। ওয়েনাড়ের ভোটগ্রহণ মিটে যাওয়ার পরেই রায়বরেলী-অমেঠীর মনোনয়ন শুরু হবে। তাই কংগ্রেসের একাংশের মতে ওয়েনাড়ে রাহুলের পক্ষে বা বিপক্ষে কী পরিমাণে ভোট পড়ে, তা বিশ্লেষণ করে তবেই রায়বরেলী-অমেঠীর প্রার্থী ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।